জীবনানন্দ দাশের শিকার প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা

জীবনানন্দ দাশের শিকার প্রশ্ন ও উত্তর: প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন (HS Bengali Suggestion) থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সিলেবাসের জীবনানন্দ দাশের "শিকার" কবিতার সমস্ত প্রশ্নোত্তর। 

জীবনানন্দ দাশের শিকার প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা

এখানে উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ‘শিকার’ কবিতার প্রশ্ন উত্তর যেমন বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল। যে গুলি পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। নিচে ‘শিকার’ কবিতার MCQ, SAQ প্রশ্ন উত্তর গুলি যত্ন সহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।


শিকার - জীবনানন্দ দাশ


‘শিকার’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ এবং ‘মহাপৃথিবী’ উভয় কাব্যগ্রন্থেই রয়েছে। আলোচ্য পোস্টে জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


জীবনানন্দ দাশের শিকার প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা


শিকার কবিতার কবি পরিচিতি

বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কালের কবিদের মধ্যে অগ্রগণ্য জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪)। গ্রামবাংলার নিসর্গ প্রকৃতির প্রতি কবির ভালোবাসা আমাদের মোহিত করে। জীবনানন্দ দাশ এমন একজন কবি যিনি তাঁর জীবদ্দশায় যতখানি জনপ্রিয় ছিলেন, মৃত্যুর পর তার থেকে বহুগুণ বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। কবির বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মাঝে রয়েছে রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা কালবেলা ইত্যাদি।


শিকার কবিতার উৎস

‘শিকার’ কবিতাটি জীবনানন্দ দাশ এর ‘বনলতা সেন’ এবং ‘মহাপৃথিবী’ উভয় কাব্যগ্রন্থেই রয়েছে।


শিকার কবিতার সারসংক্ষেপ

চিত্ররুপময় কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা শিকার শুরু হয়েছে ভোরের প্রকৃতির বর্ণনা দিয়ে। ঘাসফড়িঙের দেহের মতো কোমল নীল আকাশ আর টিয়াপাখির পালকের মতো রঙের সবুজ পেয়ারা, নোনা গাছ এই ভোরের স্বরূপ রূপে প্রকাশিত হয়েছে। প্রকৃতির এই অমলিন আত্মপ্রকাশের সময়ে আকাশে জ্বলছে একটি তারা। সেই তারা যেন অনেকটা কোন এক গাঁয়ের বাসর ঘরের নববধূর লজ্জাশীল উপস্থিতির মত মায়াবী অথবা কোন এক মিশরীয় মানবী যেন তার বুকের থেকে মুক্তা খুলে নিয়ে রেখেছে কবির নীল মদের গ্লাসে। প্রান্তিক কিংবা গ্রামীণ মানুষরা ঘর গরম রাখতে অনেক সময় ঘরের এক কোণে আগুন জ্বালিয়ে রাখে। অনেক সময় সেই আগুন ভোর পর্যন্ত জ্বলতে থাকে। কিন্তু রাতের সেই মায়াময় শিখা দিনের আলোতে তার ঔজ্জ্বল্য হারায়, হয়ে যায় বিবর্ণ। বরং শিশির ভেজা ঘাসের উপর সকালের সূর্যালোক যেন ঝিলমিল করে ওঠে। প্রকৃতির এই সুন্দর পটভূমিতেই দেখা যায় একটি সুন্দর বাদামি হরিণকে। অনিশ্চয়তায় ভরা রাতের অন্ধকার সে অতিবাহিত করেছে চিতা বাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার দৌড়ে। তাই ভোরের আলোয় নিজেকে সে বিপদমুক্ত মনে করে। জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার সেই নিশ্চয়তা পেয়ে সে কচি বাতাবি লেবুর মত সুগন্ধী সবুজ ঘাস ছিঁড়ে খেতে শুরু করে। সমগ্র রাতের ক্লান্তি আর অবসন্নতা ঘোচাতে সে গা ভাষায় নদীর শীতল জলে। তার মনে ছিল অদম্য স্বপ্ন, শরীরে আবেগের ঢেউ তুলে সে মোহিত করবে অন্যান্য হরিণীদেরকে তার প্রতি। এই পর্যন্ত কবিতাটি যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অসীম আধার কিন্তু এরপরই শিকারীর বন্দুক থেকে ছুটে আসে গুলি। হরিণটির সমস্ত সাধ আহ্লাদ এর অবসান ঘটে। নদীর জল লাল হতে থাকে। তারপর দেখা যায় সিগারেটের ধোঁয়া আর টেরিকাটা চুল নিয়ে এগিয়ে আসছে কিছু বিকৃত মস্তিষ্কের হৃদয়হীন মানুষ। হরিণটি তখন শান্তির ঘুমে আচ্ছন্ন, তারপর শুরু হয় আগুন জালানো, আর মাংস সেদ্ধ করার আয়োজন। সুস্বাদু মাংস পরিবেশনের পর সভ্য মানুষের বিকৃত ক্ষুধার নিবৃত্তি হয়।


শিকার কবিতার নামকরণ

কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় আমরা বরাবরই প্রাকৃতিক শোভার অপরূপ চিত্রকল্প খুঁজে পাই এবং শিকার কবিতাটির ক্ষেত্রেও কিন্তু তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, কবিতাটির প্রারম্ভেই আমরা ভোরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ চারুকলা দেখতে পাই। কবি তার কোমল তুলির টানে সেই ভোরের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন, ঘাসফড়িং এর দেহের কোমল নীল রঙের মতই শোভাবর্ধনকারী আকাশ,টিয়া পাখির পালকের মতো সবুজ পেয়ারা ইত্যাদি উপমা ব্যবহার করে কবি মনি মুক্তার মত অলংকার দিয়েছেন সেই সৌন্দর্যের গায়ে। ভোরের ম্লান  তারাটিকে দেখতে লাগছে যেন কোন এক মিশরীয় নারী কবির নীল মদের গেলাসে ডুবিয়ে রেখেছেন তার মনি মুক্তা। শিশির ভেজা ঘাসের উপর ঝিকিমিকি খেলছে সকালের সোনা রোদ। এই সুন্দর প্রাকৃতিক শোভার মধ্যেই দেখা যায় একটি বাদামী রঙের পুরুষ হরিণ কে।  সমগ্র রাতটা যার কেটেছে চিতা বাঘের হাত থেকে বাঁচতে, দৌড়াদৌড়ি করতে। সে এখন বড়ই ক্ষুধার্ত, তাই খিদে মেটাতে তাকে ছিঁড়ে খেতে দেখা যায় বাতাবি লেবুর মতো সবুজ সুগন্ধী ঘাস। সমগ্র রাতের পরিশ্রান্তি আর অবসন্নতা ঘোচাতে সে গা ভাষায় নদীর শীতল জলে। কিন্তু একটা অদ্ভুত শব্দ করে শিকারীর বন্দুক থেকে ছুটে আসা গুলি বেঁধে তার বুকে এবং হরিণটা চিরতরে ঘুমিয়ে পড়ে।  এভাবে হঠাৎ করেই কবিতাটা নাটকীয় ভাবে পট পরিবর্তন করে। কবি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন মানব সভ্যতার নিষ্ঠুর লাগামহীন দিকটি। শিকার শব্দটির মধ্যে একটা নির্মমতা আছে এবং সেই নির্মমতা কবি চিত্রায়িত করেছেন তার লেখনীতে। তাই বলা যায় শিকার নামকরণটি যথার্থ এবং সার্থক।


শিকার MCQ প্রশ্ন ও উত্তর (বহু বিকল্প ভিত্তিক)


1. “ ঘুমহীন ক্লান্ত বিহুল শরীরটাকে স্রোতের মতাে / একটা আবেশ দেওয়ার জন্য ” হরিণটি কী করল ? ” 

(ক) নরম ঘাসের উপর শুয়ে পড়ল 

(খ) নদীর তীক্ষ্ণ শীতল জলে নামল। 

(গ) অর্জুন বনের ছায়ায় বসে রইল। 

(ঘ) দেশােয়ালিদের জ্বালানাে আগুনের উত্তাপ নিল। 

Ans. (খ) নদীর তীক্ষ্ণ শীতল জলে নামল।


2. “ নদীর জল …… পাপড়ির মতাে লাল। ” 

(ক) মচকা ফুলের 

(খ) গােলাপ ফুলের 

(গ) জবা ফুলের 

(ঘ) মােরগ ফুলের। 

Ans. (ক) মচকা ফুলের


3. “ নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল ” — এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? 

(ক) চিতাবাঘিনীর কথা 

(খ) সুন্দরী বাদামি হরিণীর কথা 

(গ) রােগা শালিকের কথা 

(ঘ) দেশােয়ালিদের কথা।

Ans. (খ) সুন্দরী বাদামি হরিণীর কথা


4. “ সুন্দরী বাদামী হরিণ ” – কার হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়েছে ? 

(ক) চিতাবাঘিনীর হাত থেকে 

(খ) মিশরের মানুষীর হাত থেকে 

(গ) দেশােয়ালিদের হাত থেকে 

(ঘ) মানুষের হাত থেকে। 

Ans. (ক) চিতাবাঘিনীর হাত থেকে


5. “ সূর্যের আলােয় তার রং কুকুমের মতাে নেই আর ” — তার রং কীসের মতাে হয়ে গেছে ? 

(ক) শুকনাে পাতার ধূসর ইচ্ছার মতাে 

(খ) কচি বাতাবি লেবুর মতাে সবুজ 

(গ) রােগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতাে 

(ঘ) নীল আকাশের মরা চাদের আলাের মতাে।

Ans. (গ) রােগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতাে


6. ‘ একটা অদ্ভুত শব্দটি ‘ কীসের ? 

(ক) গাড়ির হর্নের শব্দ 

(খ) মানুষের কান্নার শব্দ 

(গ) পাতার মর্মর শব্দ 

(ঘ) বন্দুক থেকে গুলি ছােড়ার শব্দ। 

Ans. (ঘ) বন্দুক থেকে গুলি ছােড়ার শব্দ।


7. জরায়ুর যে বিশেষণ কবিতায় আছে

(ক) হিমকুঞ্চিত 

(খ) অন্ধকার 

(গ) সুস্পষ্ট ও স্ফীত 

(ঘ) সবুজাভ

Ans. (ক) হিমকুঞ্চিত


8. “একটা অদ্ভুত শব্দ”- ‘অদ্ভুত’ শব্দটি কীসের?

(ক) গাড়ির হর্নের শব্দ 

(খ) মানুষের কান্নার শব্দ 

(গ) পাতার মর্মর শব্দ 

(ঘ) বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার শব্দ

Ans. (ঘ) বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার শব্দ


9. “একটি তারা এখন আকাশে রয়েছে” – একটি তারা’-র সঙ্গে কবি তুলনা করেছেন।

(ক) একটি ফুলের 

(খ) একটি মেয়ের 

(গ) একটি নদীর 

(ঘ) একটি গানের

Ans. (খ) একটি মেয়ের


10. “সুন্দরী বাদামী হরিণ”– কার হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়েছে?

(ক) চিতাবাঘিনীর হাত থেকে 

(খ) মিশরের মানুষীর হাত থেকে 

(গ) দেশোয়ালিদের হাত থেকে 

(ঘ) মানুষের হাত থেকে

Ans. (ক) চিতাবাঘিনীর হাত থেকে


11. “নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল”– এখানে কার কথা বলা হয়েছে?

(ক) চিতাবাঘিনীর কথা 

(খ) সুন্দরী বাদামি হরিণের কথা

(গ) রোগা শালিকের কথা 

(ঘ) দেশোয়ালিদের কথা

Ans. (খ) সুন্দরী বাদামি হরিণের কথা


12. “সূর্যের আলোয় তার রং কুকুমের মতো নেই আর” – তার রং কীসের মতো হয়ে গেছে?

(ক) শুকনো পাতার ধূসর ইচ্ছার মতো 

(খ) কচি বাতাবি লেবুর মতো সবুজ 

(গ) রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো 

(ঘ) নীল আকাশের মরা চাদের আলোর মতো

Ans. (গ) রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো


13. নদীর ঢেউয়ের বিশেষণ

(ক) তীক্ষ্ণ শীতল 

(খ) তরঙ্গায়িত 

(গ) হিমশীতল 

(ঘ) এলোমেলো

Ans. (ক) তীক্ষ্ণ শীতল


14. সবুজ সুগন্ধি ঘাসকে তুলনা করা হয়েছে—

(ক) পাকা বাতাবি লেবুর সঙ্গে 

(খ) কচি বাতাবি লেবুর সঙ্গে 

(গ) দারুচিনির পাতার সঙ্গে 

(ঘ) কমলালেবুর সঙ্গে

Ans. (খ) কচি বাতাবি লেবুর সঙ্গে


15. ত্রাসমুক্ত হরিণের শরীর-এর বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে-

(ক) নিদ্রা নিপুণ 

(খ) সতেজ সবুজ 

(গ) ঘুমহীন ক্লান্ত বিল 

(ঘ) বিনিদ্র শান্ত

Ans. (গ) ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল


16. নীল মদের গেলাসে কী রাখা হয়েছিল?

(ক) রুপো 

(খ) সোনা 

(গ) প্রবাল 

(ঘ) মুক্তা

Ans. (ঘ) মুক্তা


17. “সারারাত মাঠে আগুন জ্বেলেছে”—কারা আগুন জ্বেলেছে ?

(ক) প্রবাসীরা 

(খ) অতিথিবৃন্দ 

(গ) দেশোয়ালিরা 

(ঘ) বনবাসীরা

Ans. (গ) দেশোয়ালিরা


18. “হিমের রাতে শরীর উম্ রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারারাত মাঠে”—

(ক) গান করেছে 

(খ) নাচ করেছে 

(গ) খেলায় মেতেছে 

(ঘ) আগুন জ্বেলেছে

Ans. (ঘ) আগুন জ্বেলেছে


19. দেশোয়ালিদের আগুনকে কে নিষ্প্রভ করেছে?

(ক) সিগারেটের ধোঁয়া 

(খ) সূর্যের আলো 

(গ) টর্চের আলো

 (ঘ) হরিণের মৃত্যু

Ans. (খ) সূর্যের আলো


20. আকাশের রং ঘাসফরিঙের দেহের মতাে— 

(ক) কোমল সবুজ 

(খ) কোমল নীলাভ 

(গ) নীল সবুজ 

(ঘ) কোমল নীল। 

Ans. (ঘ) কোমল নীল।


21. “ চারিদিকে পেয়ারা ও নােনার গাছ ” — 

(ক) গােধূলিমদির মেয়েটির মতাে 

(খ) মচকা ফুলের পাপড়ির মতাে 

(গ) ভােরের রােদ্রের মতাে 

(ঘ) টিয়ার পালকের মতাে 

Ans. (ঘ) টিয়ার পালকের মতাে


22. “ দুমড়ে এখনও আগুন জ্বলছে তাদের ” – যার -

(ক) শুকনাে ঘাসে 

(খ) শুকনাে অশ্বত্থ পাতায় 

(গ) শুকনাে সুন্দরী গাছে 

(ঘ) শুকননা অর্জুনের গাছে। 

Ans. (খ) শুকনাে অশ্বত্থ পাতায়


23. “ ভােরের জন্য অপেক্ষা করছিল। ” 

(ক) শিকারিরা 

(খ) দেশওয়ালিরা। 

(গ) গােধূলিমদির মেয়েটি 

(ঘ) বাদামি হরিণ। 

Ans. (ঘ) বাদামি হরিণ।


24. “ নদীর জল …… পাপড়ির মতাে লাল। ” 

(ক) মচকা ফুলের 

(খ) গােলাপ ফুলের 

(গ) জবা ফুলের 

(ঘ) মােরগ ফুলের।

Ans. (ক) মচকা ফুলের


শিকার SAQ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর


1. “এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে।”—তার আগে সে কোন্ পরিবেশে ছিল?

Ans: ভোরের আলোয় আসার আগে হরিণটি চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে নক্ষত্রহীন রাতে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে বনে ঘুরে বেড়িয়েছিল |


2. “একটা অদ্ভুত শব্দ’– শব্দকে ‘অদ্ভুত’ বলার কারণ কী ?

Ans: প্রাকৃতিক অরণ্য পরিবেশে বিসদৃশ বেমানান বন্দুকের গুলির শব্দকে এখানে ‘অদ্ভুত’ বলা হয়েছে। বনের মধ্যে বন্যেরাই যেখানে সুন্দর সেখানে বন্দুকের গুলির শব্দ নৃশংসতার পরিচয়বাহী বলেই তা অদ্ভুত।


3. “আগুন জ্বলল আবার”– কেমন আগুন, কখন জ্বলেছিল ?

Ans: হিমের রাতে শরীর ‘উম’ রাখবার জন্য দেশোয়ালিরা সারা রাত আগুন জ্বালিয়েছিল। সে আগুন ছিল মোরগফুলের মতো লাল।


4. “রোগা শালিকের হদয়ের বিবর্ণ” ইচ্ছা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

Ans: দেশোয়ালিদের প্রজ্বলিত আগুন ভোরের আলোয় ক্রমশ বিবর্ণ হয়ে আসছে। মুমূর্ষ ও অসুস্থ শালিক পাখির শীর্ণকায় চেহারা এবং তার নৈরাশ্যের মতোই বিবর্ণ।


5. “নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল”– সে কেন নেমেছিল ?

Ans: সুন্দর বাদামি হরিণ ঘুমহীন ক্লান্ত শরীরকে আবেশ দেওয়ার জন্য নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে নেমেছিল।


6. “এখনও আগুন জ্বলছে তাদের ;” কারা, কেন আগুন জ্বালিয়েছে?

Ans: দেশোয়ালিরা শীতের রাতে শরীর উয় রাখার জন্য সারারাত মাঠে আগুন জ্বালিয়েছে।


7. নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল কেন?

Ans: হরিণটি নদীর শীতল জলে শরীরটাকে আবেশ দিয়ে অবগাহন করেছিল। সেই সময় তাকে গুলি করে মেরেছিল কিছু লোভী আগ্রাসী মানুষ। এর ফলে নদীর জল লাল হয়েছিল।


8. এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল!” কে, কেন ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল?

Ans: সুন্দর বাদামি হরিণ অরণ্য প্রকৃতিতে চিতাবাঘিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ভোরের অপেক্ষায় ছিল।


9. “সূর্যের আলোয় তার রং কুকুমের মতো নেই আর।”—কার রঙের কথা বলা হয়েছে?

Ans: দেশোয়ালিরা হিমের রাতে শরীর গরম রাখার জন্য আগুন জ্বেলেছিল| সূর্য উঠলে সেই আগুনের রং কুমকুমের মতো লাল ছিল না।


10. “তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও।” একটি তারা আকাশে কীসের মতো জ্বলছে?

Ans: হাজার হাজার বছর আগে এক রাতে মিশরের মানুষী তার বুকের থেকে যে মুক্তা কবির নীল মদের গ্লাসে রেখেছিল, ঠিক সেভাবে একটি তারা এখনো আকাশে জ্বলছে।


11. “সোনার বর্ষার মতো জেগে ওঠে”– জেগে উঠে কে, কী করতে চেয়েছিল?

Ans: ভোরের নতুন সূর্যের আলোয় হরিণটা সোনার বর্ষার মতো জেগে ওঠে ‘সাহসে সাধে সৌন্দর্যে একের পর এক হরিণীকে চমক লাগিয়ে দিতে চেয়েছিল।


12. “মোরগফুলের মত লাল আগুন”—কখন, কেন এই আগুন দেশোয়ালিরা জ্বালিয়েছিল?

Ans: হিমের রাতে শরীর ‘উম্’ রাখার জন্য দেশোয়ালিরা আগুন জ্বেলেছে |


13. ভোরের আকাশের তারার জন্য কবি কোন কোন উপমা ব্যবহার করেছেন?

Ans: পল্লিগ্রামের লজ্জাশীলা বাসরঘরের ‘গোধূলি-মদির’ মেয়েটির কুণ্ঠার সঙ্গে নীল মদের গ্লাসে রাখা হাজার হাজার বছর আগে মিশর-মানুষীর বুকের মুক্তার দ্যতিহীনতার তুলনা করা হয়েছে।


14. হরিণের শরীরটা ঘুমহীন ক্লান্ত বিহুল ছিল কেন?

Ans: সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে হরিণটা বন থেকে বনান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছে। সারারাত পরিশ্রমের কারণে হরিণের শরীরটা ‘ঘুমহীন ক্লান্ত বিহুল’।


15. “নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম” বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

Ans: হরিণটা বন্দুকের গুলিতে প্রাণ হারানোর পর তার নিথর দেহটাকে বোঝানোর জন্য ‘নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম’ উপমা ব্যবহৃত হয়েছে।


16. ‘সুন্দর বাদামী হরিণ’ চিতাবাঘিনীর হাত থেকে বাঁচতে কোন কোন বনে ঘুরেছিল?

Ans: সারারাত চিতাবাঘিনীর হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে নক্ষত্রহীন মেহগনির বনের মতো অন্ধকারে সুন্দরীর বন থেকে অর্জুনের বনে ঘুরে বেড়িয়েছিল হরিণটা।


17. “সিগারেটের ধোঁয়া”—কোথায় কেন “সিগারেটের ধোঁয়া দেখা গিয়েছিল?

Ans: কিছু আগ্রাসী মানুষ হরিণ মেরে তার মাংসভোজে মত্ত হয়ে উঠেছিল। জঙ্গলে তারাই আনন্দ উপভোগের সময় সিগারেট ধরিয়েছিল |


18. সকালের আলোয় বন ও আকাশের দৃশ্য কেমন ছিল?

Ans: সকালের আলোয় টলমলে শিশিরে চারদিকের বন ও আকাশ ময়ূরের সবুজ নীল ডানার মতো ঝিলমিল করছিল |


19. “টেরিকাটা কয়েকটি মানুষের মাথা।”—কোথায় এই মানুষগুলোর মাথা দেখা গিয়েছিল?

Ans: হরিণটিকে হত্যা করার পর তার মাংস তৈরি হলে আগ্রাসী মানুষেরা তাকে ঘিরে উল্লাসে মেতে উঠেছিল। এখানেই টেরিকাটা এই মানুষগুলোর মাথা দেখা গিয়েছিল।


20. দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুন সূর্যের আলোয় কেমন বর্ণ ধারণ করেছিল?

Ans: সূর্যের আলোয় দেশোয়ালিদের জ্বালানো আগুন রোগা শালিকের হৃদয়ের ইচ্ছার মতো বিবর্ণরূপ ধারণ করেছিল।


21. কবির গেলাসে কে মুক্তা রেখেছিল?

Ans: কবির গেলাসে মুক্তা রেখেছিল ‘মিশরের মানুষী’।


22. “এসেছে সে ভোরের আলোয় নেমে।”—কে, কী কারণে ভোরের আলোয় নেমে এসেছিল?

Ans: ‘শিকার’ কবিতায় বর্ণিত চিতাবাঘিনীর তাড়া খাওয়া হরিণটি জীবনকে ভালোবেসে মুক্তির উল্লাসে ভোরের আলোয় নেমে এসেছিল।


23. পেয়ারা ও নোনার গাছের রং কী ছিল?

Ans: পেয়ারা ও নোনার গাছের রং ছিল টিয়ার পালকের মতো সবুজ।


24. “টেরিকাটা কয়েকটা মানুষের মাথা।”— মানুষগুলির পরিচয় দাও।

Ans: এই মানুষগুলি প্রকৃতির সন্তান হরিণটিকে গুলি করে হত্যা করে তার মাংসভক্ষণে প্রবৃত্ত হয়েছিল। এরা প্রকৃতি ধ্বংসকারী আগ্রাসী মানুষ।


25. আলোচ্য কবিতার ভোরবেলাকার দৃশ্যরূপটি কীরকম?

Ans: ভোরবেলা রাত্রি ও দিনের সন্ধিক্ষণ, কবির দৃষ্টিতে যেন আকাশের কোমল নীল ও বনের সবুজ অংশে প্রভাতের সূর্যের আলো শিশিরভেজা স্নিগ্ধতায় চতুর্দিক ভরিয়ে তুলেছে।


26. “একটি তারা এখন আকাশে রয়েছে”—কখন একমাত্র তারাটি আকাশে দেদীপ্যমান?

Ans: ভোরের কুয়াশাভরা শীতের আকাশে একটি ধ্রুবতারা পূর্বদিগন্তে সূর্যকে আবাহন করতেই যেন উজ্জ্বলভাবে দেদীপ্যমান।


27. ‘শিকার’ কবিতাটিতে ‘গোধূলিমদির’ শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

Ans: সূর্যাস্তের সময়কে ‘গোধুলি’ বলা হয়। যখন সূর্য ডুবে রাত্রির অন্ধকার ধীরে ধীরে পৃথিবীর বুকে নেমে আসে তখনকার মাদকতাময় রূপলাবণ্য বোঝাতে ‘গোধূলিমদির’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।


28. “একটি তারা এখন আকাশে রয়েছে”–তারাটিকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?

Ans: ভোরবেলাকার ওই তারাটিকে কবি পাড়াগ্রামের বাসরঘরে জাগা কনের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যার বুকে শুধুই ভালোবাসার অনুরাগের পাপড়ি সাজানো। আবার, উক্ত তারাটি যেন মিশরের কোনো এক মানুষী, তার আলো যেন আকাশের নীল আর উষার লাল রং মিশে নীল মদের গেলাসে মুক্তা হয়ে ঝরে পড়ছে।


29. ‘উম্’ কথাটির অর্থ কী?

Ans: ‘উম্’ কথাটির অর্থ উন্নতা বা গরম। ‘শিকার’ কবিতার শিকারি দেশোয়ালিরা শীতের রাতে প্রচণ্ড ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য শরীরকে ‘উম্’ করে রাখতে চায়।


30. হিমের রাতে শরীর ‘উম্’ করে রাখার জন্য দেশোয়ালিরা কী করে?

Ans: বনভূমিতে হিম বা শীতের কাতরতা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দেশোয়ালিরা সারারাত মাঠে আগুন জ্বালায়। শুকনো অশ্বত্থপাতাকে দুমড়ে মুচড়ে প্রকৃতির স্বাভাবিকতাকে নষ্ট করে আগুন জ্বালে, যে আগুন মোরগফুলের মতো টকটকে লাল।


31. চিতাবাঘিনির আক্রমণ থেকে কে কীভাবে নিজেকে বাঁচায় ?

Ans: একটি বাদামি রঙের হরিণ সারারাত নক্ষত্রহীন আকাশের নীচে অন্ধকারে এ গাছ থেকে ও গাছের আড়ালে লুকিয়ে চিতাবাঘিনির আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচায়। যৌবনাবেগে তরতাজা হরিণটি জানে দিনের আলোয় সে স্বচ্ছন্দে বনভূমিতে পদচারণা করতে পারবে।


32. সুন্দর বাদামি হরিণটি কোন্ সময়ের জন্য অপেক্ষা করছিল?

Ans: সুন্দর বাদামি হরিণটি ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল।


33. কবির মতে হরিণটির কাছে অন্ধকারের রূপটি কেমন ছিল?

Ans: কবির মতে হরিণটির কাছে অন্ধকারের রূপটি ছিল হিম কুতি জরায়ুর মতো।


34. “শরীরটাকে স্রোতের মতো একটা আবেগ দেওয়ার জন্য”—হরিণটির শরীরটা তখন কেমন ছিল?

Ans: হরিণটির শরীরটা তখন ছিল ঘুমহীন ক্লান্ত বিহ্বল।


35. সুন্দর বাদামি হরিণটি দিনের আলোয় কীভাবে নিজেকে মেলে ধরে?

Ans: ‘শিকার’ কবিতার সুন্দর বাদামি হরিণটি চিতাবাঘিনির আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করে ভোরের আলোয় হাজির হয়। নতুন করে বেঁচে থাকার স্পৃহায় কচি বাতাবিলেবুর সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়। এর মধ্যে তার প্রাণের আরাম মনের উল্লাস যেন প্রতিভাত হয়ে ওঠে।


36. হরিণের নবজন্ম কখন ঘটল বলে কবি মনে করেছেন?

Ans: সারারাত চিতাবাঘিনির আক্রমণ থেকে বাঁচার প্রচেষ্টায় বনের চারদিকে লুকিয়ে থেকে ভোরের আলোয় সুগন্ধি কচিঘাস খেতে খেতে হরিণটি প্রকাশ্যে আসে। নতুন জীবনের আনন্দে তার নদীর সুশীতল জলে স্নান করার উল্লাসটিই যেন নবজন্মরূপে ধরা দিয়েছে।


37. হরিণীর পর হরিণীদের কীভাবে হরিণটি চমকে দেবে?

Ans: ভোরের আলোয় অর্থাৎ সূর্য কিরণে স্নাত হয়ে নদীর জলে ধৌত করে মুক্তির আনন্দে হরিণটির দেহবল্পরি প্রভাতের আলোয় সোনার বর্শার ফলকের মতো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে—যা দেখে বনভূমির হরিণীরা চমকে উল্লসিত হয়ে উঠবে। সাহসে, সাধে আর সৌন্দর্যে হরিণটি হরিণীদেরকে তার প্রতি আকৃষ্ট করে তুলবে।


শিকার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর


প্রশ্নঃ ‘শিকার’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?

উত্তরঃ ‘শিকার’ কবিতাটি বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। 


প্রশ্নঃ ‘একটি তারা এখন ঘাসে রয়েছে’ – তারাটিকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?

উত্তরঃ তারাটিকে কবি পাড়াগাঁর বাসরঘরে সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির সঙ্গে তুলনা করেছেন। 


প্রশ্নঃ ‘তেমনি একটি তারা আকাশে জ্বলছে এখনও’ – তারাটিকে দেখে কবির কী কী মনে হয়েছে?

উত্তরঃ তারাটিকে দেখে কবির মনে হয়েছে পাড়াগাঁর বাসরঘরে সবচেয়ে গোধূলিমদির মেয়েটির মতো কিংবা হাজার হাজার বছর আগের মিশরীয় মানুষী যে তার বুকের থেকে কবির নীল মদের গ্লাসে মুক্ত রেখেছিল তার মতো। 


প্রশ্নঃ “মোরগফুলের মতো লাল আগুন” – এখানে কোন আগুনের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ প্রশ্নে প্রদত্ত অংশে “মোরগফুলের মতো লাল আগুন” বলে দেশোয়ালিরা হিমের রাতে মাঠে যে আগুন জ্বলেছিল, তার কথা বলা হয়েছে। 


প্রশ্নঃ ‘সবুজ সুগন্ধি ঘাস ছিড়ে ছিড়ে খাচ্ছে’ – খাওয়ার কারণ কী বলে মনে হয়?

উত্তরঃ ‘শিকার’ কবিতায় বর্ণিত হরিণটি সারারাত চিতাবাঘিনির হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য ছুটে বেরিয়ে ভীষণ ক্লান্ত এবং ক্ষুদার্থ হয়ে পড়েছিল। সেই ক্লান্তি ও ক্ষুদা মেটানোর জন্য হরিণটি সবুজ ঘাস খাচ্ছিল। 


প্রশ্নঃ ‘সোনার বর্ষার মতো জেগে উঠে’ হরিণটি কী করতে চেয়েছিল?

উত্তরঃ সারারাত চিতাবাঘটির হাত থেকে আত্মরক্ষা করার চেষ্টায় সফল হয়ে হরিণটি বিজয়ীর উল্লাসে সোনার বর্ষার মতো জেগে উঠে সাহসে সাধে সৌন্দর্যে একের পর এক হরিণীকে চমক লাগিয়ে দিতে চেয়েছিল। 


প্রশ্নঃ ‘শিকার’ কবিতায় কোন দুটি ফুলের উল্লেখ আমরা পাই?

উত্তরঃ ‘শিকার’ কবিতায় আমার যে দুটি ফুলের উল্লেখ পাই সেগুলি হল – ‘মোরগফুল’ ও ‘মচকাফুল’।


প্রশ্নঃ ‘টেরিকাটা কয়েকটা মানুষের মাথা’ -এই মানুষ কারা?

উত্তরঃ ‘টেরিকাটা’ মানুষগুলো নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত ভোগী মানুষদের প্রতীক। তারা নির্বিচারে সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে হত্যাকাণ্ডে মেতে উঠে। 


প্রশ্নঃ ‘নদীর তীক্ষ্ণ শীতল ঢেউয়ে সে নামল’ -সে নদীতে কেন নামল?

উত্তরঃ চিতাবাঘিনির অতর্কিত আক্রমন থেকে বাঁচার জন্য ক্রমাগত ছুটে বেড়ানোর হরিণটি তার ক্লান্ত বিহ্বল শরীরটাকে প্রাণবন্ত আবেশ দেওয়ার জন্য নদীতে নামল। 


প্রশ্নঃ ‘এখনও আগুন জ্বলছে তাদের’ -কাদের আগুন কেন জ্বলছে?

উত্তরঃ হিমের রাতে শরীর ‘উম’ রাখার জন্য দেশোয়ালিরা যে আগুন জ্বেলেছিল, তা এখনও জ্বলছে। শুকনো অশ্বথপাতাগুলি এখনও পুড়ে ছাই হয়নি তাই আগুন ”এখনও” জ্বলছে। 


শিকার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর


1. “আগুন জ্বলল আবার” —প্রথমবার আগুন জ্বলার সঙ্গে দ্বিতীয়বার আগুন জ্বলার বৈপরীত্যটি তুলে ধরো।

Ans: জীবনানন্দ দাশের ‘শিকার’ কবিতায় প্রথমবার আগুন জ্বালানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয় শীতের কাতরতায় উষ্মতা পাওয়ার জন্য। এখানে বনের শুকনো পাতা জ্বালিয়ে দেশোয়ালিদের শরীর উত্তপ্ত করার উদ্দেশ্যটিই লক্ষিত হয়। তাই তারা —


“আগুন জ্বেলেছে-

মোরগফুলের মতো লাল আগুন;


শুকনো অশ্বত্থপাতা দুমড়ে এখনও আগুন জ্বলছে তাদের;” দেশোয়ালিদের দ্বারা প্রজ্বলিত আগুনে প্রাণ বাঁচানোর প্রচেষ্টাই প্রধান, সে আগুন ধবংসের বীভৎসতাকে নির্দেশ করে না। বনভূমির স্বাভাবিক সৌন্দর্য অক্ষুণ্ণ রেখে সে আগুন জীবন বাঁচানোর উয় অনুভব দানে সক্ষম। তবে আগুনের ভয়ংকর রূপটির আভাসও কবিতার অন্তিম পর্বে দ্বিতীয়বার আগুন জ্বালানোর দৃশ্যটির মধ্য দিয়ে প্রকটিত হয়ে পড়েছে। যেখানে কিছু শিকারি প্রবৃত্তির মানুষের নৃশংসতা চরিতার্থ করতে আগুনের ভূমিকা অন্যতম। এই আগুনের লেলিহান শিখায় দগ্ধ হয় একটি নিরীহ হরিণের নিথর দেহ, সে পরিণত হয় উয় লাল মাংসে।

“আগুন জ্বলল আবার উয় লাল হরিণের মাংস তৈরি হয়ে এল।” আর সেই সুস্বাদু মাংসের স্বাদ গ্রহণে টেরিকাটা কয়েকটি শিকারি মানুষের রসনার তৃপ্তি ঘটল। তাই বলা যায়, প্রথমবার যে আগুন প্রজ্বলিত হয় তা শীতের হাত থেকে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে কিন্তু দ্বিতীয়বার প্রজ্বলিত সেই আগুন মানুষের সীমাহীন লোভের বাস্তব প্রতিমূর্তি।


2. “একটা অদ্ভুত শব্দ। / নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল।” – শব্দটা কীসের এবং কেন তার জন্য নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল হয়ে ওঠে?

Ans: সারারাত ধরে চিতাবাঘিনির আক্রমণ থেকে নিজেকে শত চেষ্টায় রক্ষা করে সুন্দর বাদামি হরিণটি প্রভাতের আলোয় নিশ্চিন্তে, নিরুপদ্রবে প্রাণের স্ফূর্তিতে নদীর জলে স্নান করতে নামে। তখনই ভয়ংকর প্রাণঘাতী একটা অদ্ভুত শব্দে বনপথের নিস্তব্ধতা ভেঙে ফেলে হরিণের জীবন কেড়ে নেয় শিকারির দল। হরিণ বুঝতেই পারেনি যে বনের জতুজানোয়ার অপেক্ষা মানুষের হিংস্রতা কম নয়। অদ্ভুত শব্দটি তাদের বন্দুকের গুলির শব্দ।

আর সেই গুলির আঘাতে সুন্দর বাদামি হরিণটির জীবনে নেমে আসে চরমতম বিপর্যয়। প্রভাতের আলো তাকে নিশ্চিন্ত জীবনে ফেরাতে পারে না, বরং সেই আলোই তাকে বধ্যভূমির দিকে ঠেলে দেয়। চিতাবাঘিনির জান্তবতাকে অতিক্রম করতে পারলেও, অরণ্যের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেলেও, জনারণ্যে তার জীবনসংশয় হয়। মানুষ জন্তু না হলেও প্রাণঘাতী শিকারি। হরিণের রক্তে নদীর জল মচকাফুলের পাপড়ির মতো রক্তিম হয়ে ওঠে। হরিণকে গুলিবিদ্ধ করে তার মাংস রান্নার জন্য আবারও আগুন জ্বলে বনের বুকে। লাল আগুন আর উয় লাল হরিণের মাংস মিলেমিশে একাকার। নীল আকাশের নীচে সকালের রোদ পড়া বিমর্ষ ঘাসের উপর শুয়ে সময় কাটানোর গল্পের আমেজ ভেঙে একদল শিকারি প্রবৃত্তির মানুষ উৎসবে মত্ত হয়ে ওঠে। সুন্দর প্রকৃতির সুন্দর জীবের অপমৃত্যু ঘটে, মাংসাশী মানুষের নাগরিক জীবনের ক্লেদ-গ্লানিতে অরণ্য থমকে দাঁড়ায়। সারা বনপথে চূড়ান্ত অবক্ষয়ের পরিণাম ঘনিয়ে আসে

 

“সিগারেটের ধোঁয়া;

টেরিকাটা কয়েকটা মানুষের মাথা;

এলোমেলো কয়েকটা বন্দুক-হিম-নিস্পন্দ নিরপরাধ ঘুম।”


সভ্যতা ধ্বংসকারী একদল শিকারির জান্তব উল্লাস ও অপরিণামদর্শিতায় প্রকৃতির বুকে নামে এক ভোরের অপমৃত্যু ও এক হরিণের সকরুণ বিধিলিপি। যা কেবল নদীর জলরাশিকেই রক্তাক্ত করে না, তা সৌন্দর্য, মানবিকতা সবকিছুকে ক্ষতবিক্ষত করে দগ্ধ করে তোলে।


3. ‘শিকার’ কবিতা আসলে কবির মনোজগতের প্রতিফলন–কবিতাটি বিশ্লেষণ করে বুঝিয়ে দাও।

Ans: ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থের ‘শিকার’ কবিতায় স্থান এবং কাল-নির্দিষ্ট অবস্থানে কবি নিজের উপস্থিতিকে জাগ্রত করেছেন। হিংসা, বীভৎসতা নগরজীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে, তাই বনভূমির উদাত্ত প্রান্তরে ভোরের সোনালি মুহূর্তে হরিণের আনন্দ-উল্লাসের সঙ্গে কবির আনন্দ-উল্লাস মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। আকাশের প্রজ্বলিত তারার মতো কবিমনও আনন্দে উদ্‌বেল। জীবনের তিমির বিনাশ করে ভোরের আলোয় নিজেকে পরখ করে নিতে প্রস্তুত। ‘শিকার’ কবিতায় হরিণের মৃত্যু হল প্রেমের, আর তার সঙ্গে আস্থা-বিশ্বাসেরও অপমৃত্যু। হরিণের প্রতীকী মৃত্যু কবির সমগ্র সাকে আন্দোলিত করে। কবি ‘ক্যাম্পে’ কবিতায় বলেছেন— “বসন্তের জ্যোৎস্নায় ওই মৃত মৃগদের মতো আমরা সবাই। ” মৃগদের বুকের আতঙ্ক আমাদের সকলের। ভোরের নির্মল আকাশের তলে সবুজ বনরাজির বুকে ঘটে চলেছে অকস্মাৎ মৃত্যুর উৎসব। এসব দেখে কবিমন আতঙ্কিত। জীবনানন্দের কাব্য সমালোচক তরুণ মুখোপাধ্যায় যথার্থই বলেছেন— “প্রকৃতি জুড়ে যখন বর্ণরাগ, হরিণের রূপের ভাষায় যখন বনভূমি ঝলমল করে ওঠে, তখনই নেপথ্যচারী শিকারির গুলির আঘাত কি নিষ্ঠুর কৌতুক? মৃত্যুর উৎসব?” কবি জীবনানন্দ দাশের চেতনার অলিন্দে এই মৃত্যু উত্তীর্ণ জীবনবোধ, দ্বন্দ্ব ও বাস্তবতা নির্ণীত অভিমুখটি ‘শিকার’ কবিতার ছত্রে ছত্রে ব্যঞ্জিত হয়ে উঠেছে। হরিণের দূরস্ত জীবনসংগ্রাম, জলে অবগাহন তার বিস্তীর্ণ উল্লাসের মধ্যে প্রস্ফুটিত হয়েছে। যদিও কবিতার পরিণতি সমাজব্যবস্থার অবক্ষয়কেই প্রত্যয়িত করে। প্রখ্যাত সমালোচক অনুরাধা ঘোষের মতে, “মৃত্যুকে পরাভূত করে জীবনের জয়, এ কথা তো জীবনানন্দও বলেছেন। কিন্তু সে কোন্ জীবন? ‘জীবনের পারে থেকে যে দেখেছে মৃত্যুর ওপার তার অন্তর্জীবন তো দীপ্ত হয়ে থাকে অনন্তের বোধে, যতই সেখানে সঞ্ছিত হয়ে থাক দীর্ঘ যাত্রার ক্লিষ্টতা ও ক্লান্তি।”–এ কথা তো জীবনানন্দ দাশ সম্পর্কেই একমাত্র প্রযোজ্য।


4. নাগরিক লালসায় নীল অমলিন প্রকৃতির মাঝে পবিত্র জীবন হারিয়ে যায় হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে— ‘শিকার’ কবিতাসূত্রে উদ্ধৃত অংশটির নিহিতার্থ লেখো।

Ans: নগরকেন্দ্রিক জীবনচিত্র প্রকৃতির শোভা থেকে বিচ্যুত। তাই নাগরিক জীবনে প্রকৃতির লাবণ্য বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। ভোরের আকাশের নীলাভ রঙে যখন সমস্ত বনভূমি সেজে ওঠে তখন সেই নীলাভ আভার সবুজ বনে নাগরিক লালসা রক্তের দাগ লাগায়। তাই কবি বলেছেন—

“সৃষ্টির বুকের পরে ব্যথা লেগে রবে

শয়তানের সুন্দর কপালে


পাপের ছাপের মত সেই দিনও।” ‘শিকার’ কবিতাটিতেও সেই নাগরিক লালসার নৃশংসতায় প্রকৃতির মাঝে জীবনের অস্তিত্ব ম্রিয়মান হয়ে যাওয়ার রূপটি প্রকাশিত হয়েছে। লোভ-লালসা-ক্ষুধা-রিরংসা নিবৃত্তির নেশায় উন্মত্ত নাগরিক সভ্যতার তথাকথিত সভ্য মানুষগুলির শিকারি প্রবৃত্তির শিকার হয় বন্য প্রাণের প্রতীক হরিণ। কবিতায় সেই হরিণটির হিমশীতল মৃত্যুর আঁধারে নিমজ্জিত হওয়ার মধ্য দিয়ে নাগরিক লালসার ক্রূর রূপটি প্রকটিত হয়ে পড়ে। নতুন জীবনের খোঁজে নদীর তীক্ষ্ণ শীতল স্রোতে অবগাহন করে প্রাণের স্ফূর্তিতে মেতে ওঠা হরিণটির প্রাণ তার অজান্তেই কেড়ে নেয় নাগরিক সভ্যতার ধ্বজাধারী কিছু টেরিকাটা মানুষ। তাদের এলোমেলো বন্দুকের গুলির আঘাতে হরিণটির প্রাণস্পন্দন স্তব্ধ হয়ে যায়, সে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। যে নদীতে নেমে হরিণটি তার শরীরকে একটা আবেশ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল সেই নদীর জল তার রক্তেই ‘মচকাফুলের পাপড়ির মতো লাল’ হয়ে যায়। কিন্তু টেরিকাটা মানুষগুলির আশ তখনও মেটে না, তবে হরিণটি যখন ক্ষুধা নিবৃত্তির সামগ্রী রূপে উন্ন লাল মাংসে পরিণত হয় তখন তাদের সকল আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তি ঘটে।


5. “সুন্দর বাদামি হরিণ এই ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল।”—হরিণটি কী কারণে ভোরের জন্য অপেক্ষা করছিল? কবিতার অস্তিমে তার যে পরিণতির চিত্রটি ফুটে উঠেছে তা উল্লেখ করো। 

Ans: ‘শিকার’ কবিতার সুন্দর বাদামি রঙের হরিণটি রাতের অন্ধকারে হিংস্র চিতাবাঘিনির হাত থেকে প্রাণরক্ষার তাগিদে কখনও সুন্দরী গাছের বনে আবার কখনও অর্জুন গাছের বনের আড়ালে লুকিয়ে বেড়িয়েছে। আর তাই ভোরের আলোর আগমনে সে নবজীবন লাভ করে। মূলত, এই কারণেই সে ভোরের জন্য অপেক্ষারত ছিল।

‘শিকার’ কবিতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটি হরিণ ও তার নৃশংস মৃত্যু। যে হরিণটি বন্য প্রকৃতিতে প্রাণের উল্লাসে মেতে উঠেছিল, কবিতার অস্তিমে সেই হরিণটিরই পরিণতি নির্মম মৃত্যু। চর্যাপদের ‘আপনা মাংসে হরিণা বৈরী’–এই কথাটির সার্থক দৃষ্টান্ত হল ‘শিকার’ কবিতার হরিণটির পরিণতি দৃশ্য। রাতের অন্ধকারে হিংস্র চিতাবাঘিনির থাবার গ্রাস থেকে সে রেহাই পেলেও ভোরের প্রকৃতির শোভা তার ট্র্যাজিক পরিণতিকে সূচিত করে। প্রকৃতির অপরিসীম লাবণ্যমাখা পরিবেশে একদল মানুষের জান্তব উল্লাসের শিকার হয় হরিণটি। আসলে শিকারি প্রবৃত্তির মানুষগুলির কাছে হরিণটি ছিল শুধু রসনা তৃপ্তির সামগ্রী মাত্র। এই শিকারি মানুষগুলির লোভ = রিরংসা ও লালসা জান্তব হিংস্রতার থেকেও হিংস্র। তাদের মারণাস্ত্র অর্থাৎ বন্দুকের গুলির আঘাতে হরিণটি তার নিজের অজান্তেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। তার শরীর নদীর স্রোতের তীক্ষ্ণ শীতলতাকে আর অনুভব করতে পারেনি। তবে নদীর জল তার শরীরের রক্তিম স্পর্শকে অনুভব করতে সক্ষম হয়েছিল। বস্তুত, জীবন্ত হরিণটি বন্য প্রকৃতির শোভা বর্ধন করলেও সে শিকারি মানুষগুলির আকাঙ্ক্ষাকে পূর্ণ করতে পারেনি। তাই মৃত হরিণটির নিথর দেহটি যখন উয় লাল মাংসে পরিণত হয় তখন শিকারি মানুষগুলির আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয় অর্থাৎ তাদের রসনার তৃপ্তি ঘটে।


6. “মোরগফুলের মতো লাল আগুন”–কোথাকার কোন্ আগুনের কথা এখানে বলা হয়েছে? উদ্ধৃতিটির মর্মার্থ বিশ্লেষণ করো।

Ans: ‘শিকার’ কবিতাটি জীবনানন্দের আপন মনের মাধুরী মেশানো জীবন্ত এক দলিল। কোনো এক শীতের রাতে বনের মধ্যে যাদের তিনি ‘দেশোয়ালি’ বলে উল্লেখ করেছেন তারা শীতের প্রকোপ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য আগুনের তাপ নিচ্ছেন। শরীর ‘উম’ করার জন্য সেই তাপের কথাই এখানে উল্লেখ করা হয়েছে, যে আগুন মোরগফুলের মতো লাল টকটকে।

বনের দেশোয়ালিরা শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বনের শুকনো অশ্বত্থপাতা কুড়িয়ে আগুন জ্বালায়। ‘হিমের রাতে শরীর উম্’ রাখতে জ্বলে ওঠে আগুন। সারারাত সেই আগুনের লেলিহান শিখার সঙ্গে মোরগফুলের রঙের সাযুজ্য খুঁজে পাওয়া যায়। শুকনো পাতা দুমড়ে মুচড়ে যে আগুন জ্বলে তা কামনার আগুনের প্রতিরূপ, লালসার উত্তাপের আঁচ বা দহন বলেই মনে হয়। দেশোয়ালিদের সারারাতের জ্বালা আগুনের মধ্যে কবি তাই ধ্বংসকে প্রত্যক্ষ করেছেন। কারণ, লাল আগুন বিশেষত প্রলয়ের, বিনষ্টির দ্যোতনা বহন করে নিয়ে আসে। বনভূমির নিস্তব্ধতা ভেঙে হিমের রাতে শরীর ‘উম্’ অর্থাৎ গরম করার আমেজের মধ্যেই হরিণ শিকারের প্রসঙ্গটি রয়েছে। তা ছাড়া ভোরবেলার শিশিরভেজা ঘাসের উপর সূর্যের আভার বদলে আগুন জ্বালানোর মধ্যে একটা অস্বাভাবিকতার জন্ম হয়। কবিতার তৃতীয় স্তবকে দেশোয়ালিদের শুকনো পাতায় জ্বালা আগুনের তেজ এবং উত্তাপ প্রভাতের আলোয় ম্লান হতে থাকে। যে আগুন শরীর মনের উত্তাপ বাড়ায়, কাম-ক্রোধ-লোভ -লালসার জন্ম দেয়, সেই আগুন প্রকৃতির স্বাভাবিক সৌন্দর্যময়তাকেও বিবর্ণ করে তোলে—


 “সূর্যের আলোয় তার রং কুঙ্কুমের মতো নেই আর;

 হ’য়ে গেছে রোগা শালিকের হৃদয়ের বিবর্ণ ইচ্ছার মতো।”


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Ads Area