পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Porte Jane Emn Ek Mojurer Proshno Descriptive Question Answer

পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় Porte Jane Emn Ek Mojurer Proshno Descriptive Question Answer PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF

পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Porte Jane Emn Ek Mojurer Proshno Descriptive Question Answer

নিচে পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। Porte Jane Emn Ek Mojurer Proshno Descriptive Question Answer PDF পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।



পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন - বের্টোল্ট ব্রেখট


‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ মূল কবিতাটি জার্মান ভাষায় লিখিত। জার্মান ভাষায় কবিতাটির নাম ছিল “Fragen eines lesenden Arbeiters”। কবিতাটির ইংরেজি অনুবাদ ‘Questions From A Worker Who Reads’ আন্তর্জাতিক মহলে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। এই কবিতাটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন স্বনামধন্য বাংলা সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষ। আলোচ্য পোস্টে বের্টোল্ট ব্রেখট এর ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।


পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Porte Jane Emn Ek Mojurer Proshno Descriptive Question Answer


1. ব্যাবিলনের ধ্বংস হওয়া ও নতুন করে গড়ে তোলার বিষয়ে কারা মুখ্য ভূমিকা পালন করে?

অথবা,

“কে আবার গড়ে তুলল এতবার?”—এখানে কী গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে? কবি এই ধরনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন কেন? 

Ans: জার্মান কবি বের্টোল্ট ব্রেখ্ট তাঁর ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় স্থাপত্য-ভাস্কর্যে পূর্ণ ব্যাবিলনের ধ্বংস হওয়া এবং বারেবারে তার পুনর্নির্মাণ প্রসঙ্গে আলোকপাত করেছেন। ব্যাবিলন বারেবারে আক্রান্ত হয়েছে, ধ্বংস হয়েছে আবার গড়ে উঠেছে। পার্সিয়ার রাজা সাইরাস, ম্যাসিডনের রাজা আলেকজান্ডার, রাজা তৃতীয় দারিয়ুসের বারংবার আক্রমণের মধ্য দিয়ে গিয়ে সপ্তম শতকে মেসোপটেমিয়া সভ্যতা রূপে ব্যাবিলনের উত্থান ঘটেছে বলে ইতিহাসে কথিত আছে। ২৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ নাগাদ ব্যাবিলন একটি মনোরম ও পবিত্র শহর রূপে গড়ে উঠেছিল। সেই উন্নতির নেপথ্যে যারা ছিল তারা সকলেই শ্রমজীবী মানুষ, অথচ যে-কোনো সভ্যতা গড়ার যারা কারিগর তারা থাকেন প্রচারের আলোকবৃত্তের বাইরে। কোনো সৃষ্টিই যোগ্য স্রষ্টা ছাড়া সম্ভব হয় না। আর পৃথিবীর বৃহৎ ও মহৎ সমস্ত সৃষ্টির পিছনেই আছে অগণিত মানুষের সুকঠোর অধ্যবসায়, শ্রমলব্ধ ত্যাগ ও শিল্পের প্রতি অনুরাগ। কিন্তু সৃষ্টির পর সমস্ত কৃতিত্বের ভাগীদার হয়ে থাকেন উচ্চ বলয়ের মানুষজন। তিনি হতে পারেন রাজা, নবাব, সম্রাট বা অন্যকিছু। কবি বের্টোল্ট ব্রেখট তথাকথিত ধারণা ও ভাবনার বিপরীতে লুক্কায়িত একান্ত অনুভুতিটিকে জনসমক্ষে তুলে ধরেছেন ‘পড়তে জানে এক এমন মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায়। কবি সকলকে এই সত্যই জানাতে চেয়েছেন যে, ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যানসহ তার যা-কিছু স্থাপত্য সুষমা তা তার নেপথ্যচারী অক্লান্ত কর্মী বাহিনীর জীবনপণ করা সংগ্রামের ভিতর দিয়েই প্রতিভাত হয়েছে।


2. “ভারত জয় করেছিল তরুণ আলেকজান্ডার। | একলাই নাকি?” –আলেকজান্ডারের পরিচয় দাও। এই প্রশ্নের মাধ্যমে বক্তা কী বলতে চেয়েছেন?

Ans: আলেকজান্ডার (৩৫৬-৩২৩ অব্দ) প্রাচীন গ্রিসের ম্যাসিডনের শাসনকর্তা দ্বিতীয় ফিলিপের পুত্র। পিতার মৃত্যুর পর তিনি গ্রিসের সমস্ত নগররাষ্ট্রগুলিকে একই শাসনের অধীনে নিয়ে আসেন এবং ধীরে ধীরে পারস্য, সিরিয়া, গাজা, মিশর, ফোনিসিয়া, জুড়িয়া এবং মেসোপটেমিয়া জয় করেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি ম্যাসিডোনিয়ার ক্ষমতা করায়ত্ত করেন এবং সারাবিশ্ব জয় করার অঙ্গীকার করে প্রায় ১২ বছরে তিনি তাঁর মনস্কামনা পূর্ণ করেন।

জার্মান কবি বের্টোল্ট ব্রেখট শ্রমজীবী সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে প্রশ্নোত্থাপন করেছেন। এই প্রশ্ন তাদের অধিকারের প্রশ্ন, মর্যাদা-অমর্যাদার প্রশ্ন। তরুণ আলেকজান্ডারের প্রসঙ্গও কবির মূল বক্তব্যেরই দ্যোতক। যৌবনোদ্যত আলেকজান্ডার বিশ্বজয়ের স্বপ্নের মৌতাতে বিভোর হয়ে একযোগে মাত্র বারোবছর সময়কালের মধ্যে বিশ্বের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হন। তবে এই বিজয় বিষাণ আলেকজান্ডারের একক প্রয়াসে ধ্বনিত হয়নি। তাঁর অনুগামীর দলের নিরবচ্ছিন্ন সহযোগিতা তার এই কঠিন-কঠোর কণ্টকাস্তীর্ণ পথচলাকে করে তুলেছিল পরমাস্বাদ্য। আসলে আবহমান কাল ধরে সমাজের মেহনতি সম্প্রদায়ের কায়িক শক্তিই সভ্যতার চক্রকে সচল রাখে। তারাই সভ্যতার অপরাজেয় বিজয়রথের বাহন। অথচ সভ্যতার ইতিহাসে তাদের উল্লেখমাত্র থাকে না, তাদের অবদান স্বীকৃতির সুখস্পর্শ লাভে সমর্থ হয় না। আলেকজান্ডারের বিজয়পথের দৈর্ঘ্য হ্রাসকারীদেরও কোনো উল্লেখ ইতিহাসে নেই। রাজার মস্তিষ্ক প্রসূতচিন্তা-চেতনা লোকবলকে আশ্রয় করেই রাজ্যকে সাম্রাজ্যে পরিণত করতে সমর্থ হয়। অর্থাৎ, রাজার আসল শক্তি আপামর জনসাধারণ। কবি আলোচ্য পক্তি দ্বয়ের অবতারণা ঘটিয়েছেন এই সত্যটিকেই প্রকাশ করতে যে, পৃথিবীর অপরাপর সকল শাসকের মতোই আলেকজান্ডারও লোকবলেই সমৃদ্ধ। জনবল বিনা রাজা সাধারণেরই পদবাচ্য হয়ে ওঠেন।


3. “গলদের নিপাত করেছিল সিজার। নিদেন একটা রাঁধুনি তো ছিল?”—সিজার কে? “নিদেন একটা রাঁধুনি তো ছিল’ বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?

Ans: প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের একজন সেনাপতি ও নায়ক ছিলেন জুলিয়াস সিজার। তাঁর সম্পূর্ণ নাম গাউস জুলিয়াস সিজার। ঐতিহাসিকদের মতানুযায়ী রোমের প্রথম ও প্রধান সম্রাট এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী একনায়ক ছিলেন তিনি। ১০২-১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তিনি জন্মগ্রহণ করেন ও ৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত বর্তমান ছিলেন। তিনি প্রায় দশ বছর পর্যন্ত সম্রাটের আসনে সমাসীন ছিলেন। তিনি নিজস্ব একটি নৌবাহিনী তৈরি করে এজিয়ন সাগরের বেশ কিছু জলদস্যু নিধন করেন। তিনি কনসুল পদে নির্বাচিত হয়ে গল্ প্রদেশের শাসনকর্তা নিযুক্ত হন এবং গল্দের অন্তর্দ্বন্দ্বের সুযোগে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের শেষে তিনি তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হন।

রাজত্ব করা কোনো সাধারণ বিষয় নয়, আবার যুদ্ধজয়ও সাধারণের কর্ম নয়। রাজার কূটনৈতিক চিন্তা-চেতনার রূপায়ণ তাঁর বলিষ্ঠ যোগ্য সেনাবাহিনীর সহায়তাতেই তা সম্ভব হয়। জনগণ তথা সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনেই রাজা সফলকাম হন। সেদিক দিয়ে বিচার করলে এটি স্পষ্ট যে, জুলিয়াস সিজারও গলদের মতো এক দুর্ধর্ষ জাতিকে নিপাত করার কাজটি একক প্রয়াসে সম্পন্ন করতে পারেননি। জনগণের সমর্থন ও নৌবাহিনীর একনিষ্ট আত্মবলিদানে তিনি গল্দের ওপর জয়লাভে সমর্থ হন। এই প্রসঙ্গেই কবি ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে বলেছেন, অন্ততপক্ষে একজন রাঁধুনিও ছিল তাঁর সঙ্গে যে সময়ে সময়ে তাঁর ক্ষুধানিবারণ করে তাঁকে যুদ্ধ করার মতো শারীরিক সামর্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। অর্থাৎ এই কৃতিত্ব তাঁরএকার কখনোই নয়। সহকর্মীদের, সহযোদ্ধাদের সাহায্যেই তাঁর এই জয়লাভ সম্ভব হয় বলে কবি আলোচ্য কথাটি বলেন ও রাঁধুনির প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন।


4. ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় কবির সমাজ চেতনার কী পরিচয় পাও?

Ans: কবি বের্টোল্ট ব্রেখটের লেখা ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতাটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ই হল সমাজবীক্ষার প্রকৃত সত্যটি উদ্ঘাটন করা। কবি সমাজের বাহ্যিক রূপের আচ্ছাদনে ঢাকা পড়ে যাওয়া সত্যকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরে পাঠক সমাজকে প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছেন। যুগ যুগ ধরে সমাজের বুকে চলে আসা অন্যায়ের প্রতিকার করতে কবি বলেছেন যে, পৃথিবীর সমাজ-সভ্যতার ইতিহাসের মূল ভিত্তিভূমিটি যাদের শক্তির বিনিময়ে, শ্রমলব্ধ অধ্যবসায়ে গড়ে উঠেছিল তারাই থেকে গেছে সভ্যতার উজ্জ্বলতার বিপরীতে আর সমাজের উজ্জ্বল পাদপ্রদীপের শিখায় আলোকিত হয়েছেন শক্তিধর রাজরাজড়ারা। গ্রিক-রোমান বা প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সমস্ত সভ্যতারই কারিগর এই শ্রমজীবী শ্রেণি। অথচ, সুপ্রাচীন কালের গ্রিক সভ্যতার সাত দরজাওয়ালা থিস্ নগরের পত্তন থেকে শুরু করে সাত বছরের যুদ্ধে দ্বিতীয় ফ্রেডারিকের জয় পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রেই সেইসব অক্লান্ত কর্মবীরদের গুণকীর্তন করা হয়নি কোথাও। তাই যারা ক্ষমতাসীন তারাই সৌভাগ্যের শীর্ষ শিখরে আরোহণ করেন। আর সভ্যতার চিরকালীন বেদনার করুণ রাগিণীতে বেদনার্ত এবং শ্রমনিষিক্ত মানুষেরা অসহায় ও বঞ্চিতের দলে পরিণত হয়। কবির দৃঢ় বিশ্বাস তারাই একদিন সমাজের কাছে প্রশ্ন করে নিজেদের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা প্রত্যয়িত করে তুলবে।


5. ”…সেই সন্ধ্যায় কোথায় গেল রাজমিস্ত্রিরা?” রাজমিস্ত্রিরা কী নির্মাণ করেছিল? এই প্রশ্নের মাধ্যমে বক্তা কী বলতে চেয়েছেন?

Ans: বের্টোল্ট ব্রেখট রচিত ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ নামক কবিতার বর্ণনা অনুযায়ী রাজমিস্ত্রিরা চিনের প্রাচীর তৈরি করেছিল।

এই কবিতায় ব্রেখট প্রথাগত ইতিহাসের আড়ালে অবহেলিত থাকে যে প্রকৃত ইতিহাস, তার কথা তুলে ধরেছেন। পৃথিবীর কোনো সভ্যতাই কোনো ব্যক্তির একক কৃতিত্বে রচিত নয়। অসংখ্য শ্রমিকের নিরলস শ্রমদানেই এগিয়ে চলে সভ্যতার চাকা। কিন্তু গতানুগতিক ইতিহাস স্মরণ করে সেই রাজাকে যার রাজত্বে সভ্যতার কোনো বিশেষ সৃষ্টি নির্মিত হয়েছিল। সাত দরজাওয়ালা থিসের জন্য কৃতিত্বের তিলক পরেছেন নির্মাতা রাজা, কিন্তু বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে থিসের নির্মাণকারী শ্রমিকরা। ঠিক একইভাবে বিদেশি শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য চিনের দীর্ঘ প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়ে মৃত্যুকেও মেনে নিয়েছিল যে রাজমিস্ত্রিরা, প্রাচীর শেষ হওয়ার পর তাদের খবর কেউ রাখেনি। বরং কিং রাজাদের সাম্রাজ্যকালে যে প্রাচীর নির্মাণ শুরু হয় এবং হান, সুই কিংবা মিং সাম্রাজ্যকালে তার যে বিস্তৃতি লাভ ঘটে তাই ইতিহাসে লিখিত রয়েছে। অথচ এই শ্রমজীবী মানুষরাই সভ্যতার মূল চালিকাশক্তি। রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিতে—

“শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্নশেষ ‘পরে

ওরা কাজ করে।”


ইতিহাস তাদের সম্বন্ধে নীরব থাকে। পুঁজিপতি শ্রেণির ইতিহাস শ্রমিকদের সেই কৃতিত্ব স্বীকার করে না। কিন্তু সমাজসচেতন কবি ব্রেখট এই চরম অন্যায়কে এক মজুরের প্রশ্নের আকারে তুলে ধরেছেন সভ্য মানুষের বিবেককে নাড়া দিতে।


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Ads Area