বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ

বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF: প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF

বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ

নিচে বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।


বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ


আলোচ্য পোস্টে বাক্যতত্ত্বর গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।


বাক্যতত্ত্ব রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা ব্যাকরণ


প্রশ্ন: বাক্যের বিভিন্ন জোট সম্পর্কে আলোচনা কর।

Ans: অব্যবহিত উপাদান তত্ত্বের একটি গুরুত্বপুর্ণ বিষয় হল পদের জোট। বাক্যের কোনো পদ একা থাকতে পারেনা। পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পদ সবসময় জোট বাঁধার চেষ্টা করে। জোট বাঁধার পর একটি পদের প্রাধান্য বজায় থাকে। আধুনিক ভাষাতত্ত্বে অনেক রকম জোট সম্পর্কে আলোচনা করা হলেও প্রধান জোট চারটি-

১) বিশেষ্যজোট

২)অনুসর্গজোট

৩)ক্রিয়াজোট

৪) ক্রিয়া-বিশেষণজোট।

১) বিশেষ্যজোট: বিশেষ্য, সর্বনাম প্রভৃতি নামপদ মিলে বিশেষ্যজোট গঠন করে। বিশেষ্যজোটে একটি বিশেষ্যপদের প্রাধান্য থাকে বাকি পদগুলি বর্ধক হিসেবে কাজ করে। উপরের বাক্যে ‘সাদা দোতলা বাড়িটা’ জোটটি বিশেষ্যজোট আর প্রধান পদ হল ‘বাড়িটা’।    

২) অনুসর্গ জোট: এই জোটের শাসনকর্তা হল অনুসর্গ। যেমন- ‘সাদা দোতলা বাড়িটার সামনে’ জোটটিতে প্রধান হল ‘সামনে’ অনুসর্গটি।

৩) ক্রিয়া জোট: ক্রিয়াজোট গড়ে উঠে ক্রিয়াপদ সহ ক্রিয়াবাচক নানা উপাদান যেমন ক্রিয়াবিভক্তি, কাল, প্রকার প্রভৃতি দিয়ে। শাসনক্ষমতা থাকে একটি ক্রিয়াপদের উপর। উপরের বাক্যটিতে ক্রিয়াজোট হল ‘দাঁড়িয়ে রইলাম’।

৪) ক্রিয়া-বিশেষণ জোট: ক্রিয়াবিশেষণ জোটের পুরোটাই নিয়ন্ত্রণ করে ক্রিয়াবিশেষণ। যেমন- উপরের বাক্যটিতে ‘একদম চুপচাপ’ হল ক্রিয়াবিশেষণ জোট।


প্রশ্ন: অব্যবহিত উপাদান বিশ্লেষণের নীতিগুলি আলোচনা কর।

Ans: অব্যবহিত উপাদান বিশ্লেষণের তত্ত্বটির উদগাতা মার্কিন ভাষাতত্ত্ববিদ লেওনার্দ ব্লুমফিল্ড। বাক্যের অন্তর্গত পদগুলি কীভাবে জোট গঠন করে তার সন্ধান দেয় অব্যবহিত উপাদান তত্ত্ব। এর নীতিগুলি হল-

১) আভ্যন্তরীণ ঐক্য: বাক্যের অন্তর্গত যে পদগুলির মধ্যে ঐক্য বর্তমান সেই পদগুলি জোট গঠন করে। যেমন-

‘সহজ সরল মানুষেরা জীবনে শান্তি পায়’।

এই বাক্যে ‘সহজ সরল মানুষেরা’ পদদুটির মধ্যে ঐক্য সবথেকে বেশি সেইজন্য এরা জোট গঠন করেছে। যদি বলা হতো-‘সহজ সরল মানুষেরা জীবনে’ তাহলে এতটা ঐক্য থাকত না।


২) আভ্যন্তরীণ বৈচিত্র্য: এর অর্থ হল একটি জোট ভাষায় বার বার ফিরে আসে। যেমন-


‘সহজ সরল মানুষেরা বার বার ঠকে’ বা

‘সহজ সরল মানুষেরা রাগি হয় না’।


৩) স্বাধীনতা: স্বাধীনতা বলতে বোঝায় যে একটি পদজোটের কোনো একটি পদকে বাদ দিয়ে বা তার জায়গায় অন্য পদ বসিয়েও জোট ভাঙবে না। যেমন- ‘সহজ সরল মানুষেরা’ এই পদগুচ্ছের মধ্য থেকে ‘সহজ’ বা ‘সরল’ যেকোনো একটি   পদ বাদ দিলেও খুব একটা তারতম্য হবে না। আবার ‘সহজ-সরল’ পদদুটিকেই বাদ দিয়ে বলতে পারি ‘সত্যবাদী মানুষেরা’।


প্রশ্ন: অব্যবহিত উপাদান বলতে কী বোঝ?

Ans: বাক্যতত্বের আলোচনায় অব্যবহিত উপাদান বলতে বোঝায় ঠিক আগের বা পরের স্তরটিকে। আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীগণ ভাষার বৃহত্তম উপাদান অর্থাৎ বাক্যকে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর উপাদানে বিশ্লেষণ করে গেছেন। মার্কিন ভাষাতত্ত্ববিদ লেওনার্দ ব্লুমফিল্ড প্রথম অব্যবহিত উপাদান বিশ্লেষণের কথা বলেছিলেন। ব্লুমফিল্ডকে অনুসরণ করে একটি বাক্যের বিশ্লেষণ করা হল-


‘আমি রাজুর দাদাকে ডাকলাম কিন্তু সে শুনতে পেল না’।


উপবাক্যের স্তর: উপরোক্ত বাক্যটিকে দুটি উপবাক্যে বিভাজন করা হল- ‘আমি রাজুর দাদাকে ডাকলাম’ আর ‘কিন্তু সে শূনতে পেল না’। এই উপবাক্যদুটি বাক্যটির অব্যবহিত উপাদান।


পদের স্তর: উপবাক্যগুলি আবার কয়েকটি পদের সমষ্টি। যথা- ‘আমি-রাজুর-দাদাকে-ডাকলাম’ এবং ‘কিন্তু-সে-শুনতে-পেল-না’। পদগুলি উপবাক্যের অব্যবহিত উপাদান।


রূপের স্তর: প্রথম উপবাক্যে ‘আমি-রাজু-র-দাদা-কে-ডাক-লাম’ এবং দ্বিতীয় উপবাক্যে ‘কিন্তু-সে-শুন-তে-পেল-না’। এই রূুপগুলি পদের অব্যবহিত উপাদান।


ধ্বনির স্তর:  ‘আ-ম-ই-র-আ-জ-উ-র-দ-আ-দ-আ-ক-এ-ড-আ-ক-ল-আ-ম…… ’- এইভাবে রূপগুলিকে ধ্বনিতে বিভাজন করা হল। এই ধ্বনি হল ভাষার ক্ষুদ্রতম উপাদান এবং রূপের অব্যবহিত উপাদান।

তবে বাক্যতত্ত্বের আলোচনায় বাক্যের অব্যবহিত উপাদান বলতে বোঝায় পদ এবং পদের জোটকে।বাক্যে বিভিন্ন পদ কীভাবে জোট গঠন করে অব্যবহিত উপাদান তত্ত্ব তার হদিস দেয়।


প্রশ্ন: গঠন অনুসারে বাংলা বাক্য কয় প্রকার ও কী কী?উদাহরণ  সহ আলোচনা কর।

Ans: গঠন অনুসারে বাংলা বাক্য ৩ প্রকার। যথা-

১।সরল  বাক্য

২। জটিল বাক্য

৩। যৌগিক বাক্য


১) সরল বাক্য: যে বাক্যে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন- রাম বিদ্যালয়ে যায়। এই বাক্যটিতে সমাপিকা ক্রিয়াটি হল ‘যায়’।

২) জটিল বাক্য: যে বাক্যে একাধিক খণ্ডবাক্য একটির সঙ্গে আরেকটি সম্পর্কযুক্ত থাকে তাকে জটিল বাক্য বলে। খণ্ডবাক্যদুটির একটি প্রধান আর একটি অপ্রধান। প্রধান খণ্ডবাক্যের উপর অপ্রধান খণ্ডবাক্যটি নির্ভরশীল থাকে। যেমন- আমি যখন কলেজ যাই রাম তখন বিদ্যালয়ে যায়।  এই বাক্যের প্রথম অংশটি দ্বিতীয় অংশের উপর নির্ভরশীল।

৩) যৌগিক বাক্য: একাধিক সরল বাক্য যখন এবং, কিন্তু, অথবা প্রভৃতি অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয় তখন সেই বাক্যকে বলে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন- আমি কলেজ যাই এবং রাম বিদ্যালয় যায়। এই বাক্যে দুটি সরল বাক্য ‘এবং’ দ্বারা যুক্ত হয়েছে কিন্তু কেউ কারো উপর নির্ভরশীল নয়।


প্রশ্ন: “অব্যবহিত উপাদান তত্ত্ব” বলতে কী বোঝ? এই তত্ত্বের প্রধান সীমাবদ্ধতাগুলি উল্লেখ কর।

Ans: বাক্যতত্বের আলোচনায় “অব্যবহিত উপাদান” বলতে বোঝায় ঠিক আগের বা পরের স্তরটিকে। আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীগণ ভাষার বৃহত্তম উপাদান অর্থাৎ বাক্যকে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর উপাদানে বিশ্লেষণ করে গেছেন। মার্কিন ভাষাতত্ত্ববিদ লেওনার্দ ব্লুমফিল্ড প্রথম অব্যবহিত উপাদান বিশ্লেষণের কথা বলেছিলেন।

একসময় প্রচলিত ব্যাকণ দিয়ে বাক্য বিশ্লেষণ করা হত। বর্তমানে প্রচলিত ব্যাকরনের জায়গা নিয়েছে বাক্যতত্ত্ব। একটি বাক্যকে বিশ্লেষণ করার জন্য ভাষাবিজ্ঞানীরা অব্যবহিত উপাদান বিশ্লেষণ তত্ত্বের সাহায্য নিয়ে থাকেন। কিন্তু এই পদ্ধতিরও বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন-

১) দ্ব্যর্থবোধক বাক্য অর্থাৎ যে বাক্যের দুটি অর্থ বর্তমান, সেইসকল বাক্যকে বিশ্লেষণ করতে অব্যবহিত উপাদান তত্ত্ব কোনো কাজে লাগে না। যেমন- ‘মাছটা কই’- এই বাক্যের দুটি অর্থ। একটা অর্থ- মাছটা কোথায়(কই)? আরেকটা অর্থ- এটা কই মাছ।

২) কোনো বাক্যে একটি শব্দ যখন প্রচলিত অর্থ বাদে অন্য কোনো অর্থ ইঙ্গিত করে তার বিশ্লেষণ করতে অক্ষম অব্যবহিত উপাদান তত্ত্ব। যেমন- ‘শুনেছি ওর অনেক হাত আছে’।

৩) কোনো বাক্যে বহু কর্ম থাকলেও এই তত্ত্ব মুখ থুবড়ে পড়ে। যেমন- ‘সে ঘর, বাড়ি, টাকা, পয়সা, গয়না-গাটি, আসবাবপত্র কিচ্ছু চায় না’।

৪) আমাদের মৌখিক কথাবার্তায় অনেক ফাঁকি রয়ে যায়। যেমন- ‘আজ ইস্কুল না মামাবাড়ি যাব’। আসল কথাটা হল- ‘আজ আমি ইস্কুল যাব না, আজ আমি মামাবাড়ি যাব’। বাক্যের এই যে ফাঁকি সেটা অব্যবহিত উপাদান তত্ত্বে ধরা পড়ে না।

পরিশেষে বলা যায়, বাংলা বাক্য বিশ্লেষণ করতে অব্যবহিত উপাদান তত্ত্বের চেয়ে প্রচলিত ব্যাকরণ বেশি কার্যকর।


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Ads Area