বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ইতিহাস

বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF: প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF

বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ইতিহাস

নিচে বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।


বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ইতিহাস


আলোচ্য পোস্টে বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।


বাঙালির বিজ্ঞানচর্চা রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর - উচ্চমাধ্যমিক বাংলা শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ইতিহাস


প্রশ্ন: ভারতীয় রাশিবিজ্ঞানের জনক প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের অবদান আলোচনা কর।

Ans: আধুনিক ভারতীয় রাশিবিজ্ঞানের জনক হিসেবে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ (১৮৯৩- ১৯৭২) চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। 

তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই এস.সি পাস করেন এবং ১৯১২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স সহ বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি পদার্থবিদ্যা বিষয়ে উচ্চশিক্ষা লাভ করার জন্য ইংল্যান্ড যান এবং সেখানে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিংস কলেজ থেকে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে ট্রাইপস সম্পন্ন করেন এবং পদার্থবিজ্ঞানে প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন।

উল্লেখযোগ্য অবদান

১) ভারতে পরিসংখ্যানবিদ্যার চর্চা শুরু হয় তাঁর হাত ধরেই। ১৯৩১ সালে কলকাতার বরানগরে তিনি ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর উদ্যোগেই ১৯৪১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্র রাশিবিজ্ঞান বিভাগের সূচনা হয়েছিল। 

২) নৃবিজ্ঞানে রাশিবিজ্ঞানের প্রয়োগ করে তিনি ‘মহলানবিশ ডিসট্যান্স’ নামক এক তত্ত্ব উদ্ভাবন করেন। জনগণনার সময় এখনও পর্যন্ত তাঁর আবিষ্কৃত এই পদ্ধতিটিই ব্যবহার করা হয়। 

৩) ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিস (NSSO) এবং সেন্ট্রাল স্ট্যাটিস্টিক্যাল অর্গানাইজেশন (CSO) স্থাপনের মাধ্যমে তিনিই প্রথম ভারতে একটি সার্বিক পরিসংখ্যান ব্যবস্থা গড়ে তোলেন।

পরিসংখ্যান সংক্রান্ত তাঁর মৌলিক ভাবনার জন্য তিনি সারাজীবন ধরে বহু সম্মান লাভ করেছেন। ১৯৫৪ সালে তিনি লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটির সাম্মানিক সভ্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৭ সালে তিনি আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের অবৈতনিক প্রেসিডেন্টের পদ লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি আমেরিকান স্ট্যাটিসটিক্যাল এসোসিয়েশনের (ASA) একজন ফেলো নির্বাচিত হন।


প্রশ্ন: চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারীর অবদান আলোচনা কর। 

Ans: যে চিকিৎসাবিজ্ঞানী তাঁর আবিষ্কারের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন, তিনি হলেন স্যার উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী (১৮৭৩- ১৯৪৬)। তিনি কালাজ্বরের ওষুধ ইউরিয়া স্টিবামাইন আবিষ্কার করেন।

তাঁর বাবা নীলমণি ব্রহ্মচারী ছিলেন রেলের ডাক্তার। উপেন্দ্রনাথ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তিনি ১৮৯৩ সালে হুগলি মহসিন কলেজ থেকে গণিতে প্রথম শ্রেণির অনার্স-সহ বি এ পাস করেন। ১৮৯৪ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রসায়নে এম এ-তে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। আবার ১৮৯৮ সালে মেডিসিন ও সার্জারিতে প্রথম স্থান নিয়ে এমবি পাশ করেন এবং গুডিভ ও ম্যাকলাউড পদক পান। ১৯০২ সালে এম.ডি. এবং ১৯০৪ সালে শারীরতত্ত্বে পি.এইচ.ডি. উপাধি পান। পি.এইচ.ডিতে তার গবেষণার বিষয় ছিল রক্তের লোহিতকণিকার ভাঙ্গণ।

কর্মজীবনের শুরুতে তিনি প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল স্কুলে, পরে ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে (বর্তমানে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল) তিনি চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে তিনি দীর্ঘদিন অধ্যাপনাও করেছেন। এরপর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অতিরিক্ত চিকিৎসক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। 

উল্লেখযোগ্য অবদান

১) কালাজ্বরের ওষুধ ইউরিয়া স্টিবামাইন আবিষ্কার।

২) দেশীয় ওষুধ নিয়ে গবেষণার লক্ষ্যে স্বগৃহে ব্রহ্মচারী রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থাপন।

৩) ফাইলেরিয়া, ডায়াবেটিস, কুষ্ঠ, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি বিষয়ে মৌলিক গবেষণা।

৪) চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্বন্ধে রচনা ট্রিটিজ অন কালাজ্বর।

কালাজ্বরের ওষুধ আবিষ্কার করে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণ বাঁচিয়ে ও তিনি নোবেল পাননি, এটা সত্যি আশ্চর্যের।


প্রশ্ন: চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে বিধানচন্দ্র রায়ের অবদান আলোচনা করো।

Ans: পশ্চিমবঙ্গের রূপকার তথা পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ডঃ বিধানচন্দ্র রায় (১৮৮২- ১৯৬২) চিকিৎসক হিসেবে তাঁর জীবদ্দশাতেই একজন কিংবদন্তী হয়ে উঠেছিলেন। ১৯০৬ সালে তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এল. এম. এস ও এম. বি. পাশ করেন এবং ১৯০৮ সানি এমডি ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ১৯০৯ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য ইংল্যান্ড গিয়ে একইসঙ্গে এম. আর. সি. পি এবং এফ. আর. সি. এস পাশ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

দেশে ফিরে তিনি প্রথমে ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজের শিক্ষক (১৯১১) এবং পরে কারমাইকেল মেডিকেল কলেজে মেডিসিনের অধ্যাপকের পদ (১৯১৮) গ্রহণ করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি প্রাইভেট প্র্যাকটিসও শুরু করেন। চিকিৎসক হিসেবে তাঁর খ্যাতি কেবল কলকাতা বা বাংলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তাঁর সমকালে ডঃ রায় ভারতের চিকিৎসকদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন। ভারতের বাইরেও তাঁর চিকিৎসার কদর ছিল।

তাঁর রোগীদের তালিকায় ছিলেন তখনকার দিনের বিখ্যাত সব গুণীজন। যেমন- দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মোতিলাল নেহরু, মহাত্মা গান্ধী, বল্লভ ভাই প্যাটেল, মৌলানা আজাদ, জওহরলাল নেহরু, তাঁর কন্যা ইন্দিরা গান্ধী প্রমুখ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও ডঃ বিধানচন্দ্র রায়ের চিকিৎসা-পরামর্শ নিতেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট এটলি প্রমুখ রাষ্ট্রনেতা তাঁর গুণগ্রাহী ছিলেন। গান্ধীজি অনশন করলেই সব কাজ ছেড়ে বিধানচন্দ্র রায় ছুটে যেতেন তাঁর সেবা করার জন্য।

মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি নিজের বাড়িতে নিয়মিত বিনা পয়সায় রোগী দেখতেন। এই কাজে তিনি নিজ অর্থব্যয়ে আরো দু’জন চিকিৎসক নিযুক্ত করেছিলেন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এই অকৃতদার মানুষটি মানবসেবায় ব্রতী ছিলেন। ১৯৬১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ পান। ১৯৬২ সালে নিজের জন্মদিনেই অর্থাৎ ১লা জুলাই তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁর সম্মানে প্রতিবছর ওই দিনটি ‘চিকিৎসক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।


প্রশ্ন: বাংলা চিকিৎসাবিজ্ঞানে কাদম্বিনী (বসু) গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা করা৷

Ans: উনবিংশ শতকের প্রথমার্ধেই ভারতে স্ত্রী শিক্ষার প্রসার ঘটেছিল। কিন্তু তখনো পর্যন্ত মেয়েদের জন্য উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলে যায়নি। ১৮৭৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন কর্তৃপক্ষ (সিনেট) মেয়েদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি লাভের দাবি মেনে নেয়। এরপরেই ১৮৮২ সালে কাদম্বিনী বসু এবং চন্দ্রমুখী বসু প্রথম মহিলা স্নাতক হন। চন্দ্রমুখী স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং কাদম্বিনী বসু কলকাতা মেডিকেল কলেজের প্রথম মহিলা ছাত্রী হিসেবে ডাক্তারি পড়া শুরু করেন (১৮৮৪)।

ডিগ্রী লাভ করার পর কাদম্বিনী লেডি ডাফরিন হাসপাতালের চিকিৎসকরূপে নিযুক্ত হন। ১৯৯২ সালে স্বামী দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রেরণায় তিনি ডাক্তারি পড়ার জন্য বিলেত যাত্রা করেন। LRCP (এডিনবরা), LRCS (গ্লাসগো), এবং GFPS (ডাবলিন) ডিগ্রি নিয়ে তিনি দেশে ফেরেন এবং চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।

কৃতিত্ব

(১) কাদম্বিনী বসু (গঙ্গোপাধ্যায়) বাংলা তথা ভারতের প্রথম মহিলা ডাক্তার এবং একইসঙ্গে বিলেতি ডিগ্রিধারী প্রথম মহিলা চিকিৎসক। প্রায় সমসাময়িক আর একজন ভারতীয় নারী যিনি বিদেশ থেকে ডাক্তারী পাশ করে দেশে ফিরেছিলেন, যার নাম আনন্দী গোপাল জোশী, তিনি মাত্র ২২ বছর বয়সে মারা যান। অর্থাৎ, চিকিৎসক হিসেবে তিনি কর্মজীবন শুরু করতেই পারেননি। তাই কাদম্বিনী বসুই ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক।

(২) যে সময় বাড়ির মেয়েদের বাইরে পা রাখার আগে দশবার ভাবতে হতো, সেই সময় একজন মেয়ের পক্ষে ডাক্তারি পাশ করাটাই বোধহয় সবথেকে বড় কৃতিত্ব। তৎকালীন সমাজ কাদম্বিনীকে প্রতি পদে বাধা দিয়েছিল, এমনকি রুক্ষনশীল শিক্ষকসমাজ ডাক্তারি পাস করার পরেও তাঁকে ডাক্তারির ডিগ্রি না দিয়ে ‘গ্র্যাজুয়েট অফ দি মেডিকেল কলেজ অফ বেঙ্গল’ সার্টিফিকেট দিয়েছিল। এরপরেও তিনি ডাক্তার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন, এটাও কম কৃতিত্বের নয়।

(৩) তিনি সমকালে একজন সফল চিকিৎসক হিসেবে বহু জটিল রোগির চিকিৎসা করেছিলেন এবং বহু অস্ত্রোপচারও করেছিলেন।

(৪) তাঁর ডাক্তারি পড়ার সিদ্ধান্ত সমকালীন মেয়েদের প্রেরণা জুগিয়েছিল।

(৫) চিকিৎসা ছাড়াও তিনি অনেক সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

(৬) ১৮৯৫ সালে নেপালের রাজমাতার চিকিৎসার্থে তিনি নেপালে যান এবং সেখানে আধুনিক জনচিকিৎসার সূচনা করেন।


প্রশ্ন: চিকিৎসাবিজ্ঞানে বাঙালির অবদান আলোচনা করো।

Ans: কয়েকজন বাঙালি বিদ্যোৎসাহী এবং ইংরেজদের হাত ধরে উনিশ শতকে বাংলাদেশে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সূত্রপাত হয়েছিল। তবে অল্পকালের মধ্যেই বিজ্ঞানচর্চার বিভিন্ন শাখায় বাঙালিরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে শুরু করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানেও বাঙালির অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে যেসকল চিকিৎসক এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানীর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তারা হলেন-

নীলরতন সরকার: স্বনামধন্য চিকিৎসক নীলরতন সরকার বাংলাদেশে চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রসারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি ডাঃ সুরেশপ্রসাদ সর্বাধিকারির সঙ্গে যৌথভাবে ক্যালকাটা মেডিকেল স্কুল স্থাপন করেছিলেন। বেলগাছিয়া আলবার্ট ভিক্টর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ডাঃ বরাধাগোবিন্দ করকে তিনি বিশেষ সহায়তা করেছিলেন। এছাড়াও আজীবন তিনি বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সভাপতির আসন অলংকৃত করেছিলেন।

রাধাগোবিন্দ কর: মানবদরদী চিকিৎসক রাধাগোবিন্দ কর তার জীবদ্দশাতেই কিংবদন্তি হয়ে ছিলেন। দেশীয় ভাষায় চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন এবং অধ্যাপনার ব্যাপারে তিনি বিশেষ উদ্যোগী ছিলেন। তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব হল বেলগাছিয়া অ্যালবার্ট ভিক্টর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা- যার বর্তমান নাম আর জি কর মেডিকেল কলেজ।

কাদম্বিনী বসু: প্রথম বাঙালি মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী বসু। তিনিই আবার বিলিতি ডিগ্রিধারী প্রথম ভারতীয় মহিলা চিকিৎসক।

মহেন্দ্রলাল সরকার: বিশিষ্ট চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার প্রথমে অ্যালোপ্যাথি পদ্ধতিতে চিকিৎসা করলেও পরবর্তীকালে তিনি হোমিওপ্যাথি মতে চিকিৎসা শুরু করেন। তাঁর অন্যতম কৃতিত্ব হল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্যা কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স-এর প্রতিষ্ঠা।

লালমাধব মুখোপাধ্যায়: বিশিষ্ট শল্য চিকিৎসক ডাঃ লালমাধব মুখোপাধ্যায় ছিলেন ক্যাকলাটা মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বর্তমানে, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল এসোসিয়েশন বা IMA) প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি।

স্যার উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী: কালজ্বরের প্রতিষেধক ইউরিয়া স্টিবামাইন আবিষ্কারের জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

বিধানচন্দ্র রায়: মহান চিকিৎসক, শিক্ষক ও দেশসেবক ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় ভারতের সর্বকালের সেরা চিকিৎসকদের একজন ছিলেন। তাঁর জন্মদিনটি অর্থাৎ ১লা জুলাই ভারতে চিকিৎসক দিবস বা ডক্টরস ডে হিসেবে পালিত হয়।

উপরোক্ত নামগুলি ছাড়াও প্রথম বাঙালি মনোবিজ্ঞানী গিরীন্দ্রশেখর বসু, চিকিৎসক চুনীলাল বসু, বনবিহারী মুখোপাধ্যায়, সুরেশপ্রসাদ সর্বাধিকারী প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।


প্রশ্ন: বাঙালীর বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে ঠাকুরবাড়ির অবদান। 

Ans: উনিশ শতকের কলকাতায় শিল্প-সংস্কৃতি-শিক্ষার প্রসারে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অবদান সর্বজনবিদিত। বাঙালীর বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসেও এই পরিবার অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছিল। প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর(১৭৯৪-১৮৪৬) মূলত একজন সমাজসংস্কারক হলেও বিশেষভাবে বিজ্ঞানমনস্ক ছিলেন। ইংরেজি শিক্ষার প্রসার, সতীদাহ প্রথার বিলোপ এবং হিন্দু ধর্মের সংস্কারসাধনের মাধ্যমে তাঁর এই মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। তৎকালীন দলিলাদি থেকে জানা যায় যে তিনি চিকিৎসা শিক্ষালয় স্থাপনে এবং উন্নয়নে মুক্তহস্তে দান করেছিলেন। শব-ব্যবচ্ছেদ প্রবর্তনের ক্ষেত্রেও তাঁর ভুমিকা স্মরণযোগ্য। কলকাতায় নূতন চিকিৎসালয় স্থাপনেও তিনি প্রধান উৎসাহদাতা ছিলেন।

দ্বারকানাথের জ্যেষ্ঠপুত্র দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ে বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ সহ ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য ছেলেমেয়েরা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের কাছে জ্যোতির্বিদ্যার পাঠ নিতেন।

ঠাকুর পরিবারের অন্যান্য সন্তানদের মধ্যে দ্বিজেন্দ্রনাথ জ্যামিতিতে, স্বর্নকুমারী দেবী জ্যোতির্বিদ্যায়, হেমেন্দ্রনাথ চিকিৎসাবিদ্যায় এবং জ্যোতিরিন্দ্রনাথ শিরোমিতিবিদ্যায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন। 

ঠাকুরবাড়ির সবচেয়ে স্বনামধন্য সন্তান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিজ্ঞানের বিশেষ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। বিজ্ঞান বিষয়ক তাঁর গ্রন্থ ‘বিশ্বপরিচয়’ তাঁর বিজ্ঞানমানসিকতার পরিচয় বহন করে।


প্রশ্ন: আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের অবদান। 

Ans: যে কয়েকজন বাঙালী বিজ্ঞানী বিজ্ঞানকে জনকল্যাণের কাজে লাগিয়েছিলেন আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় (১৮৬১-১৯৪৪) তাদের মধ্যে অন্যতম। প্রেসিডেন্সি কলেজের এই কৃতী ছাত্র স্নাতক উত্তীর্ন হবার আগেই গিলক্রাইস্ট বৃত্তি নিয়ে বিলেতে যান। সেখানে বি এস সি এবং ডি এস সি (এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়) ডিগ্রি লাভ করেন। রসায়ন শাস্ত্রে বিশেষ কৃতিত্বের জন্য তাঁকে হোপ পুরস্কারও দেওয়া হয়। দেশে ফিরে ১৮৮৯ সালে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। সারাজীবন তিনি গবেষণা এবং অধ্যাপনার কাজেই নিজেকে নিযুক্ত রেখেছিলেন।

তাঁর প্রথম মৌলিক গবেষণার বিষয় ছিল খাবারে ভেজাল নির্নয়ের রাসায়নিক পদ্ধতির উদ্ভাবন। মারকিউরাস নাইট্রাইট তাঁর আরেকটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। এছাড়া তিনি পারদ-সঙ্ক্রান্ত ১১ টি মিশ্র ধাতু আবিষ্কার করেছিলেন। গবাদি পশুর হাড় পুড়িয়ে তাতে সালফিউরিক অ্যাসিড মিশিয়ে তিনি তৈরি করেন ফসফেট অফ লাইম।

শুধুমাত্র গবেষণা আর আবিষ্কারের মধ্যেই তিনি নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি। গবেষণার ফলকে কাজে লাগানোর জন্য তিনি সাধারণ মানুষকে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে উৎসাহ দিতেন।তাঁর তৈরি ‘বেঙ্গল ক্যামিকাল অ্যান্ড ফারমাসিউটিক্যাল’ তেমনি এক প্রতিষ্ঠান ছিল। তাঁরই অর্থসাহায্যে গড়ে উঠেছিল ‘ইন্ডিয়ান কেমিক্যাল সোসাইটি’। এছাড়া সমবায় আইন পাশ হবার পর তিনি সাধারণ মানুষকে নিয়ে ৪১ টি সমবায় সমিতি গড়ে তোলেন। 

এসবের পাশাপাশি বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চা প্রবর্তনের একজন প্রবক্তা হিসেবেও তিনি স্মরনীয় হয়ে থাকবেন। তিনি নিজে একজন সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তাঁর আত্মচরিত ‘লাইফ অ্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স অফ অ্যা বেঙ্গলি কেমিস্ট’ ছাড়াও তিনি রচনা করেছেন ‘বাঙালীর মস্তিষ্ক এবং তাহার অপব্যবহার’, ‘অন্নসমস্যায় বাঙালীর পরাজয় এবং তাহার প্রতিকার’ প্রভৃতি পুস্তক। চিরকুমার এই মানুষটি নিজে অনাড়ম্বর জীবন যাপন করে গেছেন আর মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন।


প্রশ্ন: জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান।

Ans: জগদীশচন্দ্র বসু(১৮৫৮-১৯৩৭) ভারতের সর্বকালের সেরা বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম একজন। পদার্থবিদ্যায় বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে তিনি বি।এ। পাশ করেন। পরে বিলেতে যান ডাক্তারি পড়ার জন্য। ১৮৮৪ সালে তিনি বি এস সি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক হিসেবে তিনি তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। আরেকদিকে সমান ধারায় চলতে থাকে গবেষণার কাজ।

তাঁর প্রথম গবেষণার বিষয় ছিল বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ। দিনের পর দিন অনলস পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি গবেষণায় সাফল্য পেলেন। এমন একটি যন্ত্র তিনি আবিষ্কার করলেন যার সাহায্যে তারের মাধ্যম ছাড়াই এক স্থান থেকে আর এক স্থানে সঙ্কেত পাঠানো সম্ভব।আর এভাবেই বেতারের জন্ম হল। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে এই গবেষণার জন্য ডি এসসি উপাধি প্রদান করে।

জগদীশচন্দ্র বসুর আরেকটি গবেষণার ক্ষেত্র ছিল উদ্ভিদবিদ্যা। তিনি উদ্ভিদের চেতনা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। গবেষণার সুবিধের জন্য বেশ কয়েকটি নতুন যন্ত্রও তিনি উদ্ভাবন করেন। শেষ পর্যন্ত তিনি প্রমান করে দেখান যে উদ্ভিদের চেতনা আছে, কষ্ট আছে। 

স্বাধীনভাবে বিজ্ঞানসাধনার জন্য তিনি ১৯১৭ সালে ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির’ প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও তাঁর গবেষণার বিষয়গুলি তিনি ইংরেজিতে পুস্তকাকারে প্রকাশ করেছিলেন তবু বাংলা সাহিত্যেও তাঁর বিশেষ অনুরাগ ছিল। তাঁর একমাত্র বাংলা প্রবন্ধগ্রন্থ ‘অব্যক্ত’ বাংলা সাহিত্যে এক অমুল্য সম্পদ। সারাজীবন তিনি অনেক পুরষ্কার আর সন্মান পেয়েছিলেন। জগদীশচন্দ্র বসু শুধুমাত্র বাংলা নয় সারা ভারতের গর্ব।


প্রশ্ন: বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান।

Ans: যে বাঙালি বিজ্ঞানীর গবেষণা এই একবিংশ শতকেও সমান প্রাসঙ্গিক তিনি হলেন সত্যেন্দ্রনাথ বসু। হিন্দু স্কুলের এই মেধাবী ছাত্রটি ১৯০৯ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান অধিকার করে ১৯১১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে আই এসসি, ১৯১৩ সালে বি এসসি এবং ১৯১৫ সালে মিশ্রগণিতে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করেন।

তরুণ অধ্যাপক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিয়ে তিনি শিক্ষকতার সঙ্গে গবেষণাকর্ম চালিয়ে যান। ইংল্যান্ডের বিজ্ঞান গবেষণা বিষয়ক পত্রিকা ‘ফিলোজফিক্যাল ম্যাগাজিন’-এ প্রকাশ্রের জন্য তিনি ‘প্লাঙ্ক সূত্র ও আলোকতত্বের কোয়ান্টাম প্রকল্প’ নামে একটি মৌলিক প্রবন্ধ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তাঁর প্রবন্ধটি প্রকাশের অযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় ফেরত আসে। এবার তিনি তাঁর লেখাটি আপেক্ষিক তত্বের জনক আলবার্ট আইনস্টাইনের কাছে পাঠিয়ে দেন। বিশ্ববরেণ্য এই বিজ্ঞানী প্রবন্ধটির গুরুত্ব বুঝতে পেরে সেটিকে প্রকাশের ব্যবস্থা করে দেন। এর পরই বিজ্ঞানী হিসেবে সত্যেন্দ্রনাথ বসু আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। কোয়ান্টাম সঙ্খ্যাতত্বের জনক হিসেবে তিনি স্মরণীয় থাকবেন। তাঁর পদবি বসু থেকেই ‘বোসন’ কণার নামকরণ হয়েছে।

বিজ্ঞানসাধনা ছাড়াও সাহিত্য অনুরাগী হিসেবেও তিনি বাঙালিদের কাছে বিশেষভাবে বরেণ্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর একমাত্র বিজ্ঞানবিষয়ক গ্রন্থ ‘বিশ্বপরিচয়’ উৎসর্গ করেছিলেন এই বাঙালি বিজ্ঞানীকে। বসু সম্পর্কে তাঁর মত- ‘a man of genius with a taste for literature and who is a scientist as well.’ সত্যেন্দ্রনাথ বসু মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার অন্যতম সমর্থক ছিলেন। ১৯৪৮ সালে তিনি বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাভাষায় বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার উদ্দেশ্যে তিনি ‘জ্ঞান ও বিজ্ঞান’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। এইভাবে সারাজীবন ধরে স্বদেশে এবং বিদেশে বিজ্ঞানসাধনার অজস্র কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।


প্রশ্ন: বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার অবদান।

Ans: বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মেঘনাদ সাহার (১৮৯৩-১৯৫৬) নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণযোগ্য। ১৯০৯ সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর ঢাকা কলেজ থেকে আই এস সি, ১৯১৩ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বি এস সি এবং ১৯১৫ সালে ফলিত গণিতে এম এস সি ডিগ্রি লাভ করেন। পরে গবেষণা করে ডি এসসি এবং পি আর এস ডিগ্রি লাভ করেন।তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল রিলেটিভিটি, প্রেশার অফ লাইট এবং আস্ট্রোফিজিক্স। তাঁর গবেষণাপত্র দুটি হল ‘অন ম্যাক্সওয়েল স্ট্রেসেস এবং’অন আয়নাইজেশন ইন দি সোলার ক্রোমোস্ফিয়ার’। তাঁর আবিষ্কার জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায় অনেক নূতন পথের সন্ধান দেয়।

১৯১৮ সালে বিজ্ঞান কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে তাঁর শিক্ষকতা জীবনের সূচনা হয়। তিনি ১৯২০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খয়রা অধ্যাপক’ হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯২৩ সালে এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৩৮ সালে কলকাতায় ফিরে গিয়ে বিজ্ঞান কলেজের পালিত অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এছাড়া বিজ্ঞানচর্চার জন্য গড়ে তুলেন Institute of Nuclear Physics(১৯৪৮) এবং National Institute of Science  প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান।

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি দামোদর উপত্যকা সংস্কার নিয়েও ভাবিত ছিলেন। ভারতীয় নদীগুলির বন্যাসমস্যার মোকাবিলার জন্যও তিনি গবেষণা করেছেন। ১৯৫২ সালে গঠিত জাতীয় বর্ষপঞ্জী সংস্কার কমিটির তিনি অন্যতম সদস্য ছিলেন। বিজ্ঞান বিষয়ক তাঁর পুস্তকগুলি হল Treatise on Heat, Treatise on Modern Physics, The Principle of Relativity প্রভৃতি।


Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News


ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Ads Area