দশম শ্রেনীর প্রলয়োল্লাস কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় Praloyollas Descriptive Questions and Answers PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি দশম শ্রেনীর প্রলয়োল্লাস রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF. নিচে দশম শ্রেনীর প্রলয়োল্লাস কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। প্রলয়োল্লাস কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
প্রলয়োল্লাস - কাজী নজরুল ইসলাম
‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক কাজী নজরুল ইসলামের ‘অগ্নিবীণা’ কাব্য থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
প্রলয়োল্লাস কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Praloyollas Descriptive Questions and Answers
প্রশ্নঃ “ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর? প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন”- কোন ধ্বংসের কথা বলা হয়েছে? প্রলয়কে কেন ‘নূতন সৃজন-বেদন’ বলা হয়েছে?
উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় কবি পুরাতন, ক্ষয়িষ্ণু সমাজব্যবস্থা তথা পুরাতন মানসিকতার ধ্বংসের কথা বলেছেন।
আলোচ্য কবিতায় কবি এই সত্যকেই প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন যে, ধ্বংসের মধ্যেই লুকিয়ে থাকে সৃষ্টির বীজ। যেমন, ধ্বংসাত্মক কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক গাছপালা ভেঙে পড়ে, বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু ঝড়ের ফলে একদিকে যেমন গ্রীষ্মের দাবদাহ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, তেমনি বায়ুবাহিত বীজের মাধ্যমে অনেক নতুন চারাগাছের জন্ম হয়।
কবি পরাধীন ভারতবাসীকে ব্রিটিশদের অপশাসনের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য ধ্বংসের দেবতাকেই আহ্বান করেছেন। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, ধ্বংসের দেবতা হলেন রুদ্রদেব। তবে, বাস্তবে কবি দেশের তরুণ বিপ্লবীদের আহ্বান জানিয়েছেন। এই তরুণ বিপ্লবীরা দেশকে পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্ত করবে বলে কবি আশা পোষণ করেছেন। তবে, স্বাধীনতা লাভের পথ এতটা মসৃণ নয়। বিপ্লবের মন্ত্রে দীক্ষিত দেশের নবীন প্রজন্মকে প্রথমেই হীনবল ভারতবাসীর দীনহীন মানসিকতাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে হবে, তারপরেই তারা ব্রিটিশ রাজশক্তিকে ভারত থেকে উৎখাত করতে পারবে।
কবির মতে, তরুণ বিপ্লবীদের ভূমিকা আপাতদৃষ্টিতে ধ্বংসাত্মক মনে হতে পারে। তাদের কর্মকান্ডে সমাজের স্থিতাবস্থা সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হলেও সেটা নতুন সৃষ্টির প্রতিক্রিয়া ছাড়া আর কিছু নয়। সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় জননী যেমন প্রসব-বেদনা অনুভব করে, তেমনি বিল্পবীদের ক্রিয়াকলাপের মধ্যেও থাকবে নতুনের ‘সৃজন-বেদনা’।
প্রশ্নঃ ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় একদিকে ধ্বংসের চিত্র, আরেকদিকে নতুন আশার বাণী কীভাবে ফুটে উঠেছে, তা কবিতা অবলম্বনে লেখ। ৫
উত্তর– বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় একদিকে রয়েছে ধ্বংসের চিত্র, আরেকদিকে রয়েছে নতুন আশার বাণী। ধ্বংস সব অর্থেই নেতিবাচক, কিন্তু আলোচ্য কবিতায় কবি ধ্বংসের ভয়াবহতার মধ্যে আশার আলোর সন্ধান পেয়েছেন।
কবিতার শুরুতেই ধ্বংসাত্মক কালবৈশাখী ঝড়ের উল্লেখ রয়েছে। তবে, সেই কালবৈশাখী কবির কাছে শুধু ধ্বংসের প্রতীক নয়, ঝড়ের তান্ডবের মধ্যেই কবি নবযুগের কেতন উড়তে দেখেছেন।
ভারতকে পরাধীনতার বন্ধন থেকে মুক্ত করার জন্য কবি যাকে আহ্বান করেছেন, তিনিও ধ্বংসের প্রতীক। তার পরিচয় দিতে গিয়ে কবি বলেছেন, “প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল”। ‘সর্বনাশী জ্বালামূখী ধুমকেতু’ আজ্ঞাবাহী দাসের মতো তার সেবা করে। তার রক্তমাখা তরবারি এবং বজ্রশিখার মশাল দেখে সমস্ত চরাচর যেন স্তব্ধ। জগৎজুড়ে প্রলয় ঘনিয়ে আসছে দেখেও কবি আশা প্রকাশ করেছেন, “জরায়-মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ-লুকানো ওই বিনাশে!” ওই প্রলয়ের পরেই যেন দীর্ঘ অমাবস্যার সমাপ্তি ঘটবে এবং নতুন দিনের সূচনা হবে।
আবার, মহাকালের সারথি হিসেবে প্রলয়ঙ্করের আগমনের মধ্যেও ধ্বংসের ছায়া চোখে পড়ে। কিন্তু প্রলয়ঙ্করের আগমনের কারণটা ইতিবাচক। এতদিন ধরে যেসব দেবতাদের ‘অন্ধ কারার বন্ধ কূপে’ বন্দি করে রাখা হয়েছিল, তাদের উদ্ধার করার জন্যই মহাকালের সারথি প্রলয়ঙ্কর এগিয়ে আসছেন। অন্যভাবে বললে, কারারুদ্ধ স্বাধীনতাকামী তরুণ বিপ্লবীদের মুক্ত করার জন্যই ধ্বংসের দেবতা রুদ্রদেব আসছেন।
এভাবেই সমগ্র কবিতা জুড়ে কবি একদিকে ধ্বংসের চিত্র তুলে ধরেছেন, আরেকদিকে নতুন আশার বাণী শুনিয়েছেন।
প্রশ্নঃ “তোরা সব জয়ধ্বনি কর”- কাদের উদ্দেশ্য কবির এই আহ্বান? কবিতার ভাববস্তু বিশ্লেষণ করে এই জয়ধ্বনির যৌক্তিকতা বিচার কর।
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ‘প্রলয়োল্লাস’ কবিতায় পরাধীনতার শৃঙ্খলায় আবদ্ধ ভারতবাসীর উদ্দেশ্য এই আহ্বান করেছেন।
আলোচ্য কবিতায় কবি ব্রিটিশদের অত্যাচারে জর্জরিত ভারতবাসীর দুর্দশা মোচনের জন্য এমন একজনকে আহ্বান জানিয়েছেন, যিনি আগে কখনো আসেন নি। সেই ‘অনাগত’ হলেন ‘প্রলয়-নেশার নৃত্য পাগল’। প্রচণ্ড কালবৈশাখী ঝড়ের মত তিনিও তাণ্ডব করবেন। তার তাণ্ডবের মধ্যেই কবি নতুন যুগের নিশান দেখতে পেয়েছেন। কালবৈশাখী ঝড় যেমন ধ্বংসের মধ্য দিয়ে নতুন সৃষ্টির বীজ বপন করে, প্রলয়ঙ্কর তেমনি নতুন সমাজের ভিত্তি স্থাপন করবে। এইজন্য কবি সকলকে জয়ধ্বনি করতে করতে বলেছেন।
যিনি আসছেন তিনি ভয়ঙ্কর, তিনি প্রলয়ঙ্কর। জগৎ জুড়ে তিনি ধ্বংসলীলা চালাবেন। কিন্তু ওই ধ্বংসের মধ্যেই ‘জরায়-মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ’ লুকিয়ে আছে। পুরাতন সমাজব্যবস্থার ধ্বংস করে নতুন যুগের সূচনা করবেন বলেই কবি সকল দেশবাসীকে তার উদ্দেশ্যে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।
তিনি ভারতবাসীকে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করবেন এবং নতুন আলোর সন্ধান দেবেন। এইজন্য কবি সকলকে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।
ব্রিটিশ রাজশক্তি স্বাধীনতাকামী তরুণ বিপ্লবীদের অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করেছিল। কবি আক্ষেপ করে বলেছেন, “অন্ধ কারার বন্ধ কূপে/ দেবতা বাধা যজ্ঞ-যুপে”। এইসব দেবতা-সম বিপ্লবীদের উদ্ধার করবেন তিনি। এইজন্য কবি তাকে স্বাগত জানিয়ে সকল দেশবাসীকে তার উদ্দেশ্যে জয়ধ্বনি করতে বলেছেন।
প্রশ্নঃ ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতায় কবি প্রলয়ের মধ্যে দিয়ে যে উল্লাস অনুভব করেছেন তা উল্লেখ করো। অথবা , ‘ প্রলয়োল্লাস ’ কবিতায় প্রলয় ও আশাবাদের সুর কীভাবে ব্যক্ত হয়েছে। তা বুঝিয়ে লেখো। অথবা , ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতার মূলবক্তব্য সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘ অগ্নিবীণা ‘ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ প্রলয়োল্লাস ‘ কবিতাটি আসলে কবির জীবন উল্লাসের কবিতা। কবিতায় মোট উনিশ বার ‘ তোরা সব জয়ধ্বনি কর ’ এই আহ্বানসূচক পঙ্ক্তিটি উচ্চারিত হয়েছে , যা বুঝিয়ে দেয় এই পত্তিটিকেই কবি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন।
শোষণ – বঞ্চনা , পরাধীনতার নাগপাশ ছিন্ন করে জীবনের যে জাগরণ ঘটে , স্বাধীনতা ও সাম্যের দ্বারা যার প্রতিষ্ঠা হয় , তাকেই কবি স্বাগত জানিে ন। গ্রন্থাকারে যে বছর প্রলয়োল্লাস কবিতাটি প্রকাশ পায় ওই একই বছরে ‘ ধূমকেতু ‘ পত্রিকার একটি সংখ্যায় নজরুল লেখেন , “ পূর্ণ স্বাধীনতা পেতে হলে সকলের আগে আমাদের বিদ্রোহ করতে হবে। সকল কিছু নিয়ম – কানুন , বাঁধন – শৃঙ্খল ও মানা – নিষেধের বিরুদ্ধে। ” প্রলয়োল্লাস কবিতায় দেখা যায়
“ সিন্ধুপারের সিংহদ্বারে ধমক হেনে ভাঙল আগল। ” অর্থাৎ এই পঙ্ক্তিটি থেকে বোঝা যায় কবি স্পষ্টই বিদ্রোহের কথা বলেছেন। প্রবল তেজ , বিপর্যয় নিয়ে যে বিপ্লবী শক্তির আগমন ঘটে তা প্রাথমিকভাবে শঙ্কিত করতে পারে , কিন্তু বিশ্বমায়ের আসন সে – ই পাতে। কবি দেখেছেন—
“ অন্ধকারার বন্ধ কূপে
দেবতা বাধা যজ্ঞ – যূপে ”
এই দেবতা এখানে স্বাধীনতার প্রতীক। এখান থেকে মুক্ত হয়ে তার আগমনের সময় হয়ে গিয়েছে। তাই ‘ প্রলয়োল্লাস ’ কবিতায় কবি বলেছেন , ধ্বংস দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আসলে প্রাণহীন অসুন্দরকে বিনাশ করতেই এই ধ্বংস। এর পরেই চিরসুন্দরের প্রতিষ্ঠা ঘটবে। তাকেই স্বাগত জানানোর জন্য সকলকে আহ্বান করেছেন কবি।
প্রশ্নঃ “ কাল ভয়ংকরের বেশে এবার ওই আসে সুন্দর ” – কবি কাল ভয়ংকর কাকে বলেছেন ? উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত অংশটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘ অগ্নিবীণা ‘ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত প্রলয়োল্লাস শীর্ষক কবিতা থেকে গৃহীত হয়েছে।
কাল ভয়ংকর: কবিতায় ‘ কাল ভয়ংকর ‘ বলতে কবি রুদ্ররূপী মহাকাল দেবাদিদেব শিবকে বুঝিয়েছেন। কবির আরও ইঙ্গিত এখানে রয়েছে যাতে বোঝা যায় কবি এক্ষেত্রে জন্মভূমির মৃত্যুভয়হীন নির্ভীক ও মুক্তিকামী তরুণ বিপ্লবীদেরও বুঝিয়েছেন।
তাৎপর্য: সমাজ সচেতন কবি সদাজাগ্রত দৃষ্টিতে সমাজের দিকে তাকিয়ে দেখেছেন – বিদেশি শাসক ইংরেজদের হাতে দেশের মানুষ অত্যাচারিত , কত স্বদেশি প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠার জন্য অন্ধকূপ কারাগারে বন্দি। এসব দেখে কবির বিদ্রোহী মন প্রতিবাদী হয়ে দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করতে চেয়েছে। তাই কবি আহ্বান জানালেন প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল মহাকালকে। তার ভয়ংকর রূপে , মলিন কেশের দোলায় , রক্তমাখা কৃপাণের দোলে , অট্টরোলের হট্টগোলে যে মহাপ্রলয় ঘটবে তা মহাকালের জন্যই সংঘটিত হবে। তবে কবি এই প্রলয় আহ্বান করে বিস্মিত না হয়ে বলেছেন— A “ মাভৈঃ মাভৈঃ ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে জরায় মরা মুমুর্যুদের প্রাণ – লুকানো এই বিনাশে ! ” আর কবির বিশ্বাস ধ্বংসের পর আসে সৃষ্টির মহালগ্ন। তাই তো কবির কণ্ঠে শোনা যায়—
“ এবার মহানিশার শেষে
আসবে ঊষা অরুণ হেসে। ”
কবির বিশ্বাস , মানুষের আশা দীর্ঘ বৎসর পর পুরণ হবে। তাই ‘ কাল – ভয়ংকরকে ’ দেখে ভয় পেতে কবি নিষেধ করেছেন। কারণ তিনি জানেন ভয়ংকর ভয়ংকর নয় , বরং এক চিরসুন্দর নবরূপে দেখা দেবে। তাই আলোচ্য প্রলয়োল্লাস কবিতায় তারই জয়ধ্বনি করে কবি সবাইকে নব আনন্দে মেতে উঠতে বলেছেন।
প্রশ্নঃ “ তোরা সব জয়ধ্বনি কর ” –কাদের উদ্দেশে , কেন কবি জয়ধ্বনি করতে বলেছেন ? অথবা , প্রলয়োল্লাস কবিতায় একদিকে ধ্বংসের চিত্র আঁকা হয়েছে আবার অন্যদিকে নতুন আশার বাণী ধ্বনিত হয়েছে — কবিতা অবলম্বনে বিষয়টি আলোচনা করো।
উত্তরঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘ অগ্নিবীণা ‘ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘ প্রলয়োল্লাস ’ কবিতায় কবি পরাধীন ভারতবর্ষের শোষিত – বঞ্ছিত , অত্যাচারিত – উৎপীড়িত , অপমানিত , মুক্তিকামী মানুষদের উদ্দেশে এই আহ্বান জানিয়েছেন।
যৌবনের পূজারি কবি কাজী নজরুল ইসলাম পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ দেশমাতার শৃঙ্খল মোচনের আন্দোলনে শামিল করতে চেয়েছেন দেশবাসীকে। তিনি অনুভব করেছেন ঔপনিবেশিক শোষণ – বঞ্ছনা , অত্যাচার – উৎপীড়ন , অপমান – অবজ্ঞা , ধর্মান্ধতা , কুসংস্কার ভারতবাসীকে মেরুদণ্ডহীন করে তুলেছে।
প্রলয়োল্লাস কবিতায় মোট উনিশ বার “ তোরা সব জয়ধ্বনি কর ” এই আহ্বানসূচক পঙ্ক্তিটি উচ্চারিত হয়েছে , যা বুঝিয়ে দেয় এই পুক্তিটিকে কবি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। আসলে ‘ প্রলয়োল্লাস ’ হলো ধ্বংসের মধ্য দিয়ে সৃষ্টির বন্দনা। স্বাধীনতা প্রিয় যে তরুণের দল তাদের সুজয় সাহস আর অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে পরাধীনতা এবং সামাজিক বৈষম্যের অবসান ঘটাতে চায় , কবি তাদেরই জয়ধ্বনি করতে বলেছেন। এই যুবশক্তির মধ্যে রয়েছে আপাত ধ্বংসের উন্মাদনা।
কবির কথায় তারা হলো— “ অনাগত প্রলয় নেশার নৃত্য পাগল ” , শক্তির প্রচণ্ডতা আর অদম্য স্পৃহায় তারা সমাজের যাবতীয় অসুন্দরকে দূর করতে নিজেরা ভয়ংকরের বেশ ধরে। এর মধ্যে দিয়ে পৃথিবীতে নবপ্রাণের প্রতিষ্ঠা ঘটে , প্রাণহীনতার বিনাশ ঘটে—
‘ … জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে / জরায় মরা মুমুর্যুদের প্রাণ লুকানো ওই বিনাশ ! ” তাই সমাজকে সুন্দর করে তুলতে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানাতে হবে। কারণ তারাই হবে ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টির কারিগর। এই কারণেই কবি নজরুল ইসলাম “ তোরা সব জয়ধ্বনি কর ” পঙ্ক্তিটি বার বার ব্যবহার করেছেন।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box