দশম শ্রেনীর জ্ঞানচক্ষু গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় Gyanchokkhu Short Type Question and Answer PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি জ্ঞানচক্ষু গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF. নিচে দশম শ্রেনীর জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। জ্ঞানচক্ষু গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
জ্ঞানচক্ষু - আশাপূর্ণা দেবী
‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর ‘কুমকুম’ গল্প সংকলন থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
জ্ঞানচক্ষু গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Gyanchokkhu Short Type Question and Answer
১) “যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।”- ‘আহ্লাদ’ হবার কথা ছিল কেন? ‘আহ্লাদ খুঁজে না পাওয়ার’ কারণ কী? ১+২ [মাধ্যমিক ২০১৯]
উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে নিজের লেখা গল্প ছাপা হলে তপনের আহ্লাদ হবার কথা ছিল।
তপনের লেখা গল্প ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপানো হলে একসংখ্যা পত্রিকা সঙ্গে নিয়ে নতুন মেসো তপনদের বাড়িতে আসেন। কিন্তু বাড়ির সকলে তপনের প্রশংসা না করে তার নতুন মেসোর প্রশংসা করেছিল। কারণ, তিনি নাকি গল্পটা অল্পবিস্তর ‘কারেকশন’ করেছিলেন এবং তার পরিচিতির জন্যই গল্পটা ছাপা হয়েছিল। এইসব কথার জন্য তপন কোনো আহ্লাদ খুঁজে পায়নি।
২) “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই।” – এমন উক্তির কারণ কী?
উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপনের মনে হয়েছিল “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই”।
তপন একজন প্রতিভাবান কিশোর লেখক। সে তার লেখক মেসোকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে একটি গল্প লিখেছিল। নিজের লেখা গল্প পড়ে তপন নিজেই আশ্চর্যচকিত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার গল্পের মূল্য অন্য কেউ বুঝবে কি না এবিষয়ে তার সন্দেহ ছিল। তবে, নতুন মেসো যেহেতু একজন লেখক তাই তিনি তপনের গল্পের মূল্য বুঝবেন। এইজন্য একথা বলা হয়েছে।
৩) “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?” – কোন্ ঘটনাকে অলৌকিক বলা হয়েছে? কেন বলা হয়েছে? ১+২
উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে যখন তপনের নতুন মেসো একসংখ্যা ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে এসেছিল, তখন তপনের এরকম মনে হয়েছিল।
তপন একজন প্রতিভাবান কিশোর লেখক। তপনের স্বপ্ন ছিল যে তার লেখা গল্প একদিন ছাপানো হবে। তবে, সেই স্বপ্ন যে এত সহজে পূরণ হওয়ার নয়, এটাও সে জানত। তার লেখা গল্প ছাপার অক্ষরে হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে, এটাই তপনের কাছে অলৌকিক ঘটনা বলে মনে হয়েছিল।
৪) “এর মধ্যে তপন কোথা?” – কীসের মধ্যে তপন ছিল না? এরকম মন্তব্যের কারণ কী? ১+২
উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে দেখা যায় যে তপনের নিজের লেখা গল্পে সে নিজেই ছিল না। অর্থাৎ, সেই গল্পে কোথাও তপনের নিজের হাতের ছোঁয়া ছিল না।
তপনের লেখা প্রথম গল্পটি তার নতুন মেসো ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু গল্পটি তিনি এমনভাবে কারেকশন করেছিলেন যে সেই গল্পের প্রতিটি লাইন তপনের কাছে আনকোরা মনে হয়েছিল। এইজন্য বলা হয়েছে যে সেই গল্পের মধ্যে কোথাও তপন ছিল না।
৫) “তপনের মাথায় ঢােকে না- সে কী পড়ছে।” – তপন কী পড়ছিল? তা পড়ার সময় কেন তার মাথায় ঢোকেনি? ১+২
উত্তরঃ আশাপূর্ণা দেবীর লেখা ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত তার নিজের লেখা গল্প পড়ছিল।
তপনের নতুন মেসো যেহেতু একজন লেখক তাই অনেক পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে তার পরিচিতি ছিল। তিনি ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সম্পাদককে বলে তপনের গল্পটা ছাপিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ছাপার অক্ষরে নিজের গল্প পড়তে গিয়ে তপন বুঝতে পারে যে তার লেখক মেসো কারেকশনের নাম করে তার গল্পটা আগাগোড়া পাল্টে ফেলেছিলেন। এইজন্য তপনের মাথায় ঢােকে না সে কী পড়ছে।
৬) ‘সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়’—সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ কী?
উত্তরঃ শোরগোল পড়ে যাওয়ার কারণ : প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তপনের লেখা গল্প। ছেপে বেরোলে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। জ্ঞানচক্ষু গল্পে দেখা যায়—তপনের কাচা হাতের গল্পটিকে মেসো সংশোধন করে নিজের প্রভাব খাটিয়ে সন্ধ্যাতারা সম্পাদককে দিয়ে প্রকাশ করিয়েছেন। জীবনের প্রথম গল্প ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হলে অনাবিল উত্তেজনায় তপন আনন্দে মাতোয়ারা হয়। আর সেই খবরে সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়।
৭) “ক্রমশ ও কথাটা ছড়িয়ে পড়ে।”—কোন কথা, ওই কথা ছড়িয়ে পড়ায় কী ঘটেছিল?
উত্তরঃ কারেকশানের কথা : তপনের প্রকাশিত গল্পটি আসলে ছোটো মেসোমশাই কিছুটা কারেকশান করে দিয়েছেন—এই কথাটা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ে বাড়িতে।
মেসোর মহত্তের কথা : ছোটো মেসোমশাই-এর কারেকশানের কথা বাড়ির সবাই জেনে গেলে তপনের গল্প লেখার কৃতিত্ব খানিকটা কমে যায়। তপনের বাবা, কাকা, ছোটো মেসোমশাই-এর হাতের ছোঁয়াকে বেশি গুরুত্ব দিতে চান। সেদিন পারিবারিক আলোচনায় তপনের গল্পের কথা উঠলেও নতুন মেসোর মহত্ত্বের কথা ঘুরে ফিরে আসে।
৮) “এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের।”—কোন বিষয়ে কেন তপনের সন্দেহ ছিল ?
উত্তরঃ তপনের সন্দেহ নিরশন : আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামক গল্প থেকে অংশটি গৃহীত হয়েছে। তপন জানত না যে, লেখকরা তার বাবা, কাকা কিংবা মামার মতো একজন সাধারণ মানুষ। তার সন্দেহ দূর হয় ছোটো মেসোমশাইকে দেখে। তিনি একজন লেখক। কিন্তু অন্য সাধারণ মানুষের মতো দাড়ি কামান। সিগারেট খান, খাবার অতিরিক্ত হলে ফিরিয়ে দেন, স্নান করেন, ঘুমোন। এমনকি আর সকলের মতো খবরের কাগজের খবর নিয়ে গল্প কিংবা তর্ক করেন। অবসর সময়ে সিনেমা দেখেন কিংবা বেড়াতেও বের হন। এসব দেখে তপনের সন্দেহ দূর হয় ও সে বিশ্বাস করে লেখকরাও সাধারণ মানুষ।
৯) তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনে সবচেয়ে দুঃখের দিন। কী কারণে তপনের এরূপ মনে হয়েছিল ?
উত্তরঃ তপনের মনে হওয়ার কারণ : তপনের প্রথম লেখা গল্পটি নতুন মেসোমশাই-এর সুপারিশে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ছাপা গল্পটি পাঠ করে তপন। অবাক হয়ে যায়। কারণ তার নতুন মেসোমশাই গল্পটিকে ঠিকঠাক করতে গিয়ে সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছেন। ছাপানো গল্পের মধ্যে তপন নিজেকে খুঁজে পায় না। তার মনে হয় অন্য কারোর লেখা ছাপা হয়েছে। শ্রী তপন কুমার রায় নাম দিয়ে। নিজের সৃষ্টিকে পরিবর্তিত হতে দেখে তপনের মন বেদনায় ভরে ওঠে।
১০) ‘যেন নেশায় পেয়েছে’-কীসের নেশা, কীভাবে তাকে নেশায় পেয়েছে?
উত্তরঃ লেখার নেশা : আশাপূর্ণা দেবীর জ্ঞানচক্ষু গল্পে তপনের গল্প লেখার নেশার কথা বলা হয়েছে।
লেখার প্রতি আসক্তি : তপন একজন সাহিত্য প্রেমী বালক। গল্প লেখা ও সেগুলি ছাপা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে তার প্রচণ্ড কৌতূহল ছিল। মাসির বিয়ের পর লেখক মেসোমশাইকে খুব কাছ থেকে দেখতে পায় এবং গল্প লেখার রহস্যও তার কাছে পরিষ্কার হয়ে যায়। তপন একটি গল্প লিখে ছোটোমাসিকে দেখালে মাসি সেটা মেসোমশাইকে দেখায়। তখন তিন সেটা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এতে আরও উৎসাহিত হয়ে তপন একের পর এক গল্প লেখার নেশায় মগ্নহয়ে ওঠে।
১১) “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের”—কখন এবং কেন তপনের এরকম অনুভূত হয়েছিল?
উত্তরঃ তপনের অনুভূতি : পুজোর ছুটির অনেকদিন পর ছোটোমাসি আর মেসোমশাই হাতে একখানা সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তপনদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সেই দিন তপনের এইরকম অনুভূতি হয়েছিল। সাহিত্য রচনা এবং প্রকাশ সম্পর্কে তপনের দারুণ কৌতুহল ছিল তাই ছােটো মেসোমশাই তার লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপানোর জন্য যখন নিয়ে গিয়েছিলেন তখন তপন উৎসাহিত হয়। তবে অপেক্ষা করতে করতে তপন গল্প। প্রকাশের আশা ছেড়ে দিয়েছিল। ঠিক এই সময় ছোটো মাসি আর মেসোমশাই সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসায় তার গল্প প্রকাশের আবেগ উৎকণ্ঠায় তপনের এরকম অনুভূতি হয়েছিল।
১২) রত্নের মূল্য জহুরির কাছে। রত্ন এবং জহুরি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ রত্ন ও জহুরি: আশাপূর্ণা দেবী রচিত জ্ঞানচক্ষু নামাঙ্কিত গল্পে রত্ন বলতে তপনের লেখা গল্পটিকে এবং জহুরি বলতে তপনের ছোটো মেসোকে বোঝানো হয়েছে।
তপন যে গল্পটি লিখেছিল তা দেখে তার ছোটো মাসি যথেষ্ট ভালো বললেও প্রকৃত বিচারকের রায় দরকার ছিল তপনের। আর এই বিষয়ে লেখক হিসাবে পরিচিত তার ছোটোমেসো যে যোগ্য ব্যক্তি তাতে কারো সন্দেহ থাকতে পারে না। তাই রত্নের মূল্য ও গুরুত্ব যেমন একজন জহুরি সবথেকে ভালো বোঝেন। তেমনই তপনের গল্পের কদরও ছোটোমেসোই বুঝতে পারবে।
১৩) ‘শুধু এ দুঃখের মুহর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন।” কোন দুঃখের মুহুর্তের কথা বলা হয়েছে। তপন কী সংকল্প নিয়েছিল ?
উত্তরঃ দুঃখের মুহূর্ত: সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় নিজের ছাপা গল্প পড়তে গিয়ে যখন তপন বুঝল গল্পটি ছোটো মেসোমশাই আগাগোড়া কারেকশান করে দিয়েছেন। নিজের গল্পে নিজেকে না পেয়ে তপন খুব দুঃখ পেয়েছিল।
তপনের সংকল্প: এই দুঃখের মুহূর্তে তপন সংকল্প করে, যদি কখনো নিজের লেখা ছাপতে দেয়, তবে কারো মাধ্যমে নয়, নিজে গিয়ে পত্রিকা অফিসে দিয়ে আসবে। যদি তাতে তার গল্প ছাপা না হয় তবুও। কারণ কেউ সুপারিশ করে তার লেখা ছেপে দিয়েছে এমন কথা যেমন অপমানের, তেমনই কষ্টের। নিজের লেখা পড়তে গিয়ে অন্যের লেখা পড়া খুবই কষ্টকর।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box