বহুরূপী গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Bahurupi Short Type Question and Answer

দশম শ্রেনীর বহুরূপী গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় Bahurupi Short Type Question and Answer PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি দশম শ্রেনীর বহুরূপী  সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF. নিচে দশম শ্রেনীর বহুরূপী গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। বহুরূপী গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।


বহুরূপী গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Bahurupi Short Type Question and Answer




বহুরূপী - সুবোধ ঘোষ

‘বহুরূপী’ গল্পটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুবোধ ঘোষের ‘গল্পসমগ্র’ গল্প সংকলন থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে সুবোধ ঘোষের ‘বহুরূপী’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।



বহুরূপী গল্পের সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Bahurupi Short Type Question and Answer


১] হরিদা পুলিশ সেজে কোথায় দাঁড়িয়ে ছিলেন? তিনি কীভাবে মাস্টারমশাইকে বােকা বানিয়েছিলেন? ১+২ [মাধ্যমিক ২০১৭]

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে বহুরূপী হরিদা পুলিশ সেজে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

স্কুলের চারটি ছেলে দয়ালবাবুর লিচু বাগানে গিয়েছিল লিচু চুরি করতে। সেখানে আগে থেকেই হরিদা পুলিশ সেজে দাঁড়িয়েছিলেন। পুলিশ দেখে ছেলেরা ভয়ে কেঁদে ফেলেছিল। পরে মাস্টারমশাই গিয়ে নকল-পুলিশ হরিদার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন এবং ছেলেগুলোকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু পুলিশের সাজে হরিদা মাস্টারমশায়ের কাছে আট আনা ঘুষ নিয়ে তবেই ছেলেদের ছেড়েছিলেন। এভাবেই হরিদা মাস্টারমশাইকে বোকা বানিয়েছিলেন।


২] “সে ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।”- কোন জিনিসের কথা বলা হয়েছে? তা দুর্লভ কেন? ১+২ [মাধ্যমিক ২০২০]

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলোর কথা বলা হয়েছে। সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো ছিল ভয়ানক দুর্লভ জিনিস।

পুণ্য সঞ্চয়ের ব্যাপারে জগদীশবাবু অত্যন্ত হিসেবি ছিলেন। তার বাড়িতে যে সন্ন্যাসী এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি নাকি হিমালয়ের গুহাতে থাকতেন এবং সারা বছরে শুধু একটি হরিতকী খেতেন। এইরকম একজন সন্ন্যাসীর পদসেবা করলে যে অনেক পুণ্য অর্জন করা যাবে সে কথা জগদীশবাবু জানতেন। তাই তার পদধূলি যাতে অন্য কেউ না পায় সেইজন্য জগদীশবাবু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ের কাছে ধরেন এবং সন্ন্যাসী সেই খড়ম পরা মাত্রই জগদীশবাবু তার পদধূলি গ্রহণ করেন। এজন্য বলা হয়েছে যে, সেই সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো ‘ভয়ানক দুর্লভ জিনিস’ ছিল।


৩] “হরিদার উনানের হাঁড়িতে অনেক সময় শুধু জল ফোটে, ভাত ফোটে না।” – হরিদার জীবিকা কী? কেন তার হাঁড়িতে কেবল জলই ফোটে? ১+২

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদার একজন বহুরূপী। তিনি বহুরূপী সাজে মানুষের মনোরঞ্জন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

হরিদার জীবনদর্শন ছিল একটু অন্যরকম।দশটা-পাঁচটার বাঁধাধরা চাকরিতে তার ছিল তীব্র অনীহা। নাহলে চেষ্টা করলে কোনো একটা স্থায়ী কাজ জুটে যেত তার। কিন্তু সেসব কিছু করেন নি হরিদা। তিনি বহুরূপী সেজে মানুষকে আনন্দ দিয়ে যেটুকু উপার্জন করতেন তাই দিয়েই তার দিন চলে যেত। তবে, সপ্তাহে মাত্র একদিন তিনি বহুরূপী সেজে পথে বেরোতেন এবং খুব সামান্যই রোজগার করতেন। এইজন্য তার উনানের হাঁড়িতে অনেক সময় শুধু জল ফোটে, ভাত ফোটে না।


৪] “কিন্তু দোকানদার হেসে ফেলে” – কার কী কাণ্ড দেখে দোকানদার হেসেছিল? ১+২

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদার কান্ড দেখে দোকানদার হেসে ফেলেছিল।

সেদিন হরিদা এক রূপসী বাইজির সাজে পথে নেমেছিলেন। দু’পায়ে ঘুঙ্গুরের রুমঝুম শব্দ তুলে সেই বাইজি প্রায় নাচতে নাচতে এগিয়ে যাচ্ছিল। হাতে ছিল তার ফুলসাজি। একেকটা দোকানের সামনে গিয়ে সে মুচকি হেসে, চোখ টিপে ফুলসাজিটা এগিয়ে দিচ্ছিল আর দোকানদাররা তাতে একটা করে সিকি ফেলে দিচ্ছিল। হরিদার এই কাণ্ড দেখেই দোকানদার হেসে ফেলেছিল।


৫] “আপনি কি ভগবানের চেয়েও বড়াে?” – কাকে একথা বলা হয়েছিল? এমন উক্তির কারণ কী? ১+২

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে জনৈক ধনী ব্যক্তি জগদীশবাবুকে একথা বলা হয়েছিল।

একদিন জগদীশবাবুর বাড়িতে হরিদা গিয়েছিলেন বিরাগীর ছদ্মবেশে। সেই সময় পাড়ার ছেলেরা স্পোর্টের চাঁদা আদায়ের জন্য জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিল। বারান্দায় একটা মস্ত আলোর সামনে তিনি চেয়ারে বসেছিলেন, এমন সময় সেখানে বিরাগীর আবির্ভাব ঘটে। বারান্দা থেকেই তাঁর উদ্দেশ্যে জগদীশবাবু বলেন, “আসুন”। বিরাগীকে দেখে জগদীশবাবু নেমে আসেন নি বলেই বিরাগীর ছদ্মবেশে হরিদা এমন উক্তি করেছিলেন।


৬] “পরম সুখ কাকে বলে জানেন?”- কার উক্তি? ‘পরম সুখ’ বলতে বক্তা কী বুঝিয়েছেন? ১+২

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত বিরাগী একথা বলেছিলেন। আসলে এই বিরাগী ছিলেন বহুরূপী হরিদা।

হরিদা একজন দক্ষ বহুরূপী। সবাইকে একটা ‘জবর খেলা’ দেখাবেন বলে একদিন সন্ধ্যায় তিনি বিরাগীর সাজে জগদীশবাবুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেদিন শুধু সাজে-পোশাকে নয়, কথাবার্তাতেও তিনি বিরাগী হয়ে উঠেছিলেন। বিরাগীরূপী হরিদার মতে, সব সুখের বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়াই হল পরমসুখ।


৭] “অদৃষ্ট কখনও… এই ভুল ক্ষমা করবে না।” – ‘অদৃষ্ট’ শব্দের অর্থ কী? এমন মন্তব্যের কারণ কী? ১+২

উত্তরঃ ‘অদৃষ্ট’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল নয় দৃষ্ট যা। তবে, উদ্ধৃত অংশে শব্দটির অর্থ হল ভাগ্য।

সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে হরিদা জগদীশবাবুর বাড়িতে বিরাগীর সাজে গিয়েছিলেন। তাকে প্রকৃতই বিরাগী মনে করে জগদীশবাবু একশো এক টাকা প্রণামী হিসেবে দিতে চেয়েছিলেন। টাকাটা নিলে তার কয়েকদিনের অন্নসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে যেত। কিন্তু বিরাগী হয়ে তিনি সেই টাকা স্পর্শ করেন নি। এইজন্য বলা হয়েছে “অদৃষ্ট কখনও হরিদার এই ভুল ক্ষমা করবে না।” অর্থাৎ, তার ভাতের হাড়িতে শুধুই জল ফুটবে, ভাত ফুটবে না।


৮] “তাতে যে আমার ঢং নষ্ট হয়ে যায়।”- কার ঢং নষ্ট হয়ে যেত? বক্তার এমন মনে হওয়ার কারণ কী? ১+২

উত্তরঃ সুবোধ ঘোষের লেখা ‘বহুরূপী’ গল্পে বহুরূপী হরিদার ঢং নষ্ট হয়ে যেত।

হরিদা একজন বহুরূপী। তবে, তার বহুরূপতা কেবল সাজ-পোশাকে নয়; তিনি যখন যা সাজতেন তখন মন থেকেও তাই হয়ে উঠতেন। তিনি পুলিশ সেজে স্কুলের মাস্টারমশায়ের কাছে আট আনা ঘুষ নিয়েছিলেন কিন্তু বিরাগীর সাজে জগদীশবাবুর দেওয়া একশো এক টাকা নিতে পারেন নি। কারণ, বিরাগী হয়ে টাকা স্পর্শ করা অশোভনীয়। তার মতে, টাকাটা নিলে তার ‘বিরাগীর ঢং’ নষ্ট হয়ে যেত।


৯] “ গল্প শুনে খুব গম্ভীর হয়ে গেলেন হরিদা ” – হরিদা কে ছিলেন ? কোন গল্প শুনে হরিদা গম্ভীর হয়ে গিয়েছিলেন ? 

উত্তরঃ লেখক সুবোধ ঘোষের লেখা ‘ বহুরূপী ‘ নামক গল্পের কেন্দ্রীয় পেশাদার বহুরূপী চরিত্র ছিলেন হরিদা। 

লেখক সহ অন্য বন্ধুরা হরিদাকে জানিয়েছিলেন যে, সাতদিন ধরে এক সন্ন্যাসী এসে জগদীশবাবুর বাড়িতে ছিলেন। খুব উঁচুদরের সন্ন্যাসী, হিমালয়ের গুহাতে থাকেন। সারাবছর শুধু একটি ‘ হরীতকী ‘ খান, এছাড়া আর কিছুই খান না। সন্ন্যাসীর বয়স হাজার বছরের বেশি বলে মনে করা হয়। সন্ন্যাসী কাউকেই পদধূলি দেন না। জগদীশবায়ু একজোড়া কাঠের খড়মে সোনার বোল  লাগিয়ে সন্ন্যাসীর পায়ে ধরলে বাধ্য হয়ে সন্ন্যাসী পা এগিয়ে দিলেন। এই নতুন খড়ম পরার ফাঁকেই জগদীশবাবু সন্ন্যাসীর পায়ের ধুলো নিয়েছিলেন। 


১০] “এবার মারি তো হাতি, লুঠি তো ভাঙার ” –বক্তা কে? তিনি কোন উদ্দেশ্যে এ কথা বলেছেন ?

উত্তরঃ প্রখ্যাত লেখক সুবোধ ঘোষের ‘ বহুরূপী ‘ গল্প থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশের বক্তা হলেন বহুরূপী হরিদা।

‘বহুরূপী’ সেজে হরিদা যে উপার্জন করতেন তা ছিল অত্যন্ত সামান্য। আর তাই যখন জগদীশবাবুর বাড়িতে আগত সন্ন্যাসীর খাতির – যত্নের কথা শোনের তখন সিদ্ধান্ত নেন সেখানেই বহুরূপী সেজে গিয়ে মোটা কিছু আদায় করে নেবেন। পুরোদিনটা ঘুরে বেড়িয়েও তার উপার্জন হয় সামান্যই। এজন্য কাঙালের মতো বকশিশ নেওয়া থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখে একেবারে এমন উপার্জন করবেন যাতে তার সারাবছর চলে যায় – এই উদ্দেশ্যেই তিনি প্রশ্নোধৃত কথাটি বলেছেন।



Google News এ আমাদের ফলো করুন


Gksolves Google News

ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুকWhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Ads Area