দশম শ্রেনীর আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki Descriptive Questions and Answers PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি দশম শ্রেনীর আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF. নিচে দশম শ্রেনীর আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি - শঙ্খ ঘোষ
‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষের ‘‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্য সংকলন থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki Descriptive Questions and Answers
১) “আমরাও তবে এইভাবে/এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?” – এমনটা মনে হচ্ছে কেন? ৫ [মাধ্যমিক ২০১৮]
উত্তরঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় এক সংকটময় পরিস্থিতির ছবি তুলে ধরা হয়েছে। যুদ্ধের সর্বগ্রাসী লেলিহান শিখা যখন মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় তখন সাধারণ মানুষের পালাবার কোনো পথ থাকে না। দিশেহারা মানুষের ডানদিকে ধস, বাঁয়ে গিরিখাত, মাথার উপর বোমারু বিমান। অর্থাৎ, যেকোনো দিক থেকেই আকস্মিক বিপদ নেমে আসতে পারে। কিন্তু সেই মৃত্যুকূপ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই কারণ পায়ের তলায় হিমানীর বাঁধ চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে।
যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা নিষ্পাপ শিশুদেরকেও রেহাই দেয়না। মানুষ দেখে যে তাদের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শিশুদের শব। শিশুদের বলা হয় দেশের ভবিষ্যৎ, মানবতার ভবিষ্যৎ। শিশুদের মৃত্যু হওয়া মানে মানবতার মৃত্যু অনিবার্য। চোখের সামনে নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শেষ হয়ে যেতে দেখে সাধারণ মানুষের মনে সংশয় জাগে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত পৃথিবীতে তারা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার আশাটুকু হারিয়ে ফেলে। তাই তারা নিজেদেরকেই প্রশ্ন করে- “আমরাও তবে এইভাবে/এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি”?
২) “আয় আরাে বেঁধে বেঁধে থাকি”- কবিতার বিষয়বস্তু সংক্ষেপে লেখাে। ৫ [মাধ্যমিক ২০২০]
উত্তরঃ আধুনিককালের খ্যাতনামা কবি শঙ্খ ঘোষের একটি অনবদ্য কবিতা হল ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’। আলোচ্য কবিতায় যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই এবং হাতে হাত রেখে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করার কথা বলা হয়েছে।
কবিতার শুরুতেই এক সংকটময় পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। অসহায় সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে যে, তাদের ডানদিকে ধস, বাঁদিকে গিরিখাত, মাথার উপর বোমারু বিমান এবং পায়ের তলায় হিমানীর বাঁধ। অর্থাৎ, যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই। আবার, যুদ্ধের ফলে তারা গৃহহারা হয়েছে।
তারা দেখে যে তাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শিশুদের শব। নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এইভাবে শেষ হতে দেখে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে- “আমরাও তবে এইভাবে/এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?” এই সংকটের মুহূর্তের সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে, হাতে হাত রেখে বাঁচার সংকল্প করে।
এইসব সাধারণ মানুষ নামপরিচয়হীন। ইতিহাসেও তাদের কোনো উল্লেখ নেই। চারদিকে মৃত্যুর হাতছানি দেখে তাদের ভ্রম হয় যে পৃথিবী বেঁচে আছে কিনা। তবে, হতাশাই শেষ কথা নয়। যুদ্ধের বিভীষিকা অতিক্রম করে যারা এখনো বেঁচে আছে, তারা সকলে আবার হাতে হাত রেখে বেঁচে থাকার শপথ নেয়।
৩) “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” কবিতার নামকরণের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ৫
উত্তরঃ সাহিত্যে নামকরণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। নামটুকু পড়েই যেকোনো সাহিত্যিক রচনা সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা লাভ করা যায়। তবে এটাও ঠিক যে, নামকরণ যথার্থ হওয়া দরকার। নাহলে লেখার সঙ্গে নামের সঙ্গতি রক্ষা হয় না এবং পাঠক সেই রচনার রসাস্বাদন করতে ব্যর্থ হয়। এবার দেখে নেয়া যাক, আমাদের পাঠ্য, কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটির নামকরণ যথার্থ হয়েছে কি না।
আলোচ্য কবিতার প্রেক্ষাপটে রয়েছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অসহায় মানুষের জীবনসংগ্রামের কথা। বিপদ তাদেরকে ঘিরে ফেলেছে। তাদের বাঁয়ে গিরিখাত, ডানদিকে ধস, মাথায় বোমারু বিমান এবং পথ চলতে বাধার সৃষ্টি করে হিমানীর বাঁধ। এহেন বিপর্যয়ের দিনে কারো মাথা গোঁজার জায়গা নেই কারণ যুদ্ধের ফলে তাদের ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিশুদের শব দেখে তারা ভাবে যে হয়তো তারাও এবার মরে যাবে। বাঁচার শেষ ইচ্ছেটুকু নিয়ে অসহায় মানুষজন একে অপরের হাত ধরে।
বিশেষ-পরিচিতিহীন এইসব মানুষ ইতিহাসে ব্রাত্য। এদের কথা ভাবার মতো কেউ নেই। আবার, চারিদিকে মৃত্যুর ছায়া দেখে এরা বুঝে উঠতে পারে না যে পৃথিবী আদৌ বেঁচে আছে না মরে গেছে। এইরকম বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে যা করা উচিত, এরাও তাই করেছে। যে’কজন বেঁচে আছে তারা একে অপরের হাত ধরে, সঙ্ঘবদ্ধভাবে বাঁচার শপথ নেয়।
জীবন যখন সংকটাপন্ন তখন ঐক্যবদ্ধভাবে বেঁচে থাকাই জীবনের একমাত্র মন্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। আলোচ্য কবিতাতেও দু’বার সেই কথার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে- ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’। অতএব, বিষয়বস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই কবিতার নামকরণ সার্থক হয়েছে, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box