শঙ্খ ঘোষের আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি প্রশ্ন ও উত্তর: প্রতিবছর মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন (Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki by Shankha Ghosh Questions and Answers Madhyamik Bengali Suggestion) থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক বাংলা সিলেবাসের শঙ্খ ঘোষের "আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি" র সমস্ত প্রশ্নোত্তর।
এখানে মাধ্যমিক বাংলা ‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার প্রশ্ন উত্তর যেমন বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল। যে গুলি পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। নিচে Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki by Shankha Ghosh Questions and Answers ‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার MCQ, SAQ প্রশ্ন উত্তর গুলি যত্ন সহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।
মাধ্যমিকের বাংলা শঙ্খ ঘোষের আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি প্রশ্ন ও উত্তর - Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki by Shankha Ghosh Questions and Answers
আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি - শঙ্খ ঘোষ
‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক শঙ্খ ঘোষের ‘‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্য সংকলন থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি MCQ প্রশ্নোত্তর - আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার MCQ প্রশ্নোত্তর (বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর) - Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki MCQ Questions and Answers
1. “আমাদের চোখমুখ ঢাকা”—পঙক্তিটির মর্মার্থ হল?
(A) আমাদের পরিচয় কোনোদিনই প্রকাশ পায় না
(B) আমরা পরিচয় দিতে লজ্জা পাই
(C) আমরা পরিচয় দিতে ঘৃণা বোধ করি
(D) আমাদের পরিচয়ের কেউ তোয়াক্কা করে না
উত্তরঃ (A) আমাদের পরিচয় কোনোদিনই প্রকাশ পায় না
2. “আমরা ভিখারি বারোমাস”—কবির এমন মনে হওয়ার কারণ—
(A) মানুষের দারিদ্র্য দেখে তিনি কুষ্ঠিত
(B) মানুষের চাহিদা দেখে তিনি লজ্জিত
(C) মানুষের হতাশা দেখে তিনি ক্ষুব্ধ
(D) মানুষের দুঃখে তিনি কাতর
উত্তরঃ (B) মানুষের চাহিদা দেখে তিনি লজ্জিত
3. “আমাদের কথা কে-বা জানে”—এ কথা তাদের মনে হয় যারা—
(A) ভিখারি
(B) সাধারণ মানুষ
(C) উদ্বাস্তু
(D) কবি
উত্তরঃ (B) সাধারণ মানুষ
4. ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটি জলই পাষাণ হয়ে আছে কাব্যগ্রন্থের
(A) 1 সংখ্যক কবিতা
(B) 10 সংখ্যক কবিতা
(C) 25 সংখ্যক কবিতা
(D) 31 সংখ্যক কবিতা
উত্তরঃ (D) 31 সংখ্যক কবিতা
5. ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্যগ্রন্থটির রচনাকাল—
(A) 1999 খ্রিস্টাব্দ
(B) 2004-2006 খ্রিস্টাব্দ
(C) 2007-08 খ্রিস্টাব্দ
(D) 2000-03 খ্রিস্টাব্দ
উত্তরঃ (D) 2000-03 খ্রিস্টাব্দ
6. ‘জলই পাষাণ হয়ে আছে’ কাব্যগ্রন্থটি কবি শঙ্খ ঘোষ যাঁদের উৎসর্গ করেন, তাঁরা হলেন—
(A) জয়দেব আর সেবন্তী
(B) অভীক আর মাল
(C) অরিজিৎ আর রীণা
(D) শ্রীজাত আর দূর্বা
উত্তরঃ (C) অরিজিৎ আর রীণা
7. “আমাদের ডান পাশে ______”
(A) হিমানীর বাঁধ
(B) গিরিখাত
(C) ধস
(D) বোমারু
উত্তরঃ (C) ধস
8. আমাদের বাঁয়ে রয়েছে
(A) ধস
(B) গিরিখাত
(C) বন
(D) ইতিহাস
উত্তরঃ (B) গিরিখাত
9. আমাদের মাথায় আছে—
(A) ঘরবাড়ি
(B) বেঁচে থাকা
(C) পথ
(D) বোমারু বিমান
উত্তরঃ (D) বোমারু বিমান
10. আমাদের পায়ে পায়ে রয়েছে—
(A) ভারী জুতো
(B) হিমানীর বাঁধ
(C) কাঁটাতার
(D) ভিক্ষুকের দল
উত্তরঃ (B) হিমানীর বাঁধ
11. ‘আমাদের পথ’—
(A) নেই, হারিয়ে গেছে
(B) ফাঁকা পড়ে আছে
(C) তৈরি করতে হবে
(D) জনাকীর্ণ হয়ে আছে
উত্তরঃ (A) নেই, হারিয়ে গেছে
12. “আমাদের ঘর গেছে উড়ে” পঙক্তিটির মর্মার্থ হল, ঘর
(A) আকস্মিক বিপর্যয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে
(B) দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে
(C) ছেড়ে আমরা বেরিয়ে পড়েছি
(D) আমাদের কোনোদিনই ছিল না
উত্তরঃ (A) আকস্মিক বিপর্যয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে
13. “ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে!”কাছে-দূরে ছড়ানো রয়েছে –
(A) কাটা গাছপালা
(B) অজস্র বোমারু বিমান
(C) গিরিখাত
(D) শিশুদের শব
উত্তরঃ (D) শিশুদের শব
আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার SAQ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki SAQ Question Answer
১. আমাদের ডানে ও বাঁয়ে কী রয়েছে?
উত্তরঃ আমাদের ডানে ধ্বস ও বাঁয়ে গিরিখাদ রয়েছে।
২. ‘আমাদের পথ নেই’ কেন?
উত্তরঃ চারিদিক থেকে মৃত্যুর বিভীষিকা পথ রোধ করে দাঁড়িয়েছিল, তাই কবি বলেছেন যে আমাদের পথ নেই।
৩. ‘আমাদের ঘর উড়ে গেছে’ কীভাবে?
উত্তরঃ সর্বনাশা যুদ্ধের তাণ্ডবে আমাদের ঘর উড়ে গেছে।
৪. আমাদের কাছে-দূরে কী ছড়ানাে রয়েছে?
উত্তরঃ আমাদের কাছে-দূরে ছড়ানাে রয়েছে শিশুদের শব।
৫. ‘আয় আরাে বেঁধে বেঁধে থাকি’- কেন এই আহ্বান?
উত্তরঃ মানবতা যখন বিপন্ন, তখন যৌথভাবে প্রতিকুলতার মোকাবিলা করাই ভালো। তাই কবির আহ্বান- ‘আয় আরাে বেঁধে বেঁধে থাকি’।
৬. ‘আমাদের ইতিহাস নেই’ – কেন?
উত্তরঃ আমরা এতই সাধারণ যে কবির মনে হয়েছে যে আমাদের ইতিহাস নেই। আসলে, ইতিহাস সাধারণ মানুষের কথা লিখে রাখে না; আমাদের মতো সাধারণ মানুষের ‘চোখ-মুখ ঢাকা’ থাকে ইতিহাসে।
৭. আমরা কেন ‘বারােমাস ভিখারি’?
উত্তরঃ আমাদের অবস্থা ভিখারির মতোই করুণ এবং কখনই এই অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয় না। তাই কবি বলেছেন, ‘আমরা ভিখারি বারোমাস’।
৮. ‘আমাদের কথা কে-বা জানে’ – এমন বলার কারণ কী?
উত্তরঃ সাধারণ মানুষ সব অর্থেই সাধারণ বা বিশেষ-পরিচয়হীন হয়। তাই কবি বলেছেন যে আমাদের কথা কেউ জানে না।
৯. আমরা দোরে দোরে ফিরছি কেন?
উত্তরঃ আমরা ‘ভিখারি বারোমাস’ এবং সেইজন্য আমরা দোরে দোরে ফিরছি।
১০. ‘পৃথিবী হয়তাে গেছে মরে’- কেন এমন বলা হয়েছে?
উত্তরঃ চারিদিকে মৃত্যুমিছিল এবং যারা বেঁচে আছে তাদের কাছেও সেই বিভীষিকা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো পথ ছিল না। তাই কবির এমন মনে হয়েছে।
আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki Short Type Question and Answer
প্রশ্নঃ “আমাদের ইতিহাস নেই”- কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের ইতিহাস নেই কেন? ১+২
উত্তরঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় সংকটাপন্ন সাধারণ মানুষের কথা বলা হয়েছে।
প্রচলিত ইতিহাস কেবল শোষকের কথা বলে, শোষিত সাধারণ মানুষের ব্যাপারে ইতিহাস বড়ই নীরব। সেইজন্য ইতিহাসের পাতায় তাদের স্থান হয়নি। ইতিহাস যুদ্ধবাজ শাসকদের নাম লিখে রাখে কিন্তু যুদ্ধে নিহত সাধারণ মানুষের নাম কেউ জানতে পারে না। আলোচ্য কবিতায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের নিপীড়িত মানুষের কন্ঠে তাই শোনা যায় হতাশার সুর- “আমাদের ইতিহাস নেই”।
প্রশ্নঃ “এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?”- এই আশঙ্কার কারণ কী? ৩
উত্তরঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় বিপন্ন মানবতার ছবি তুলে ধরা হয়েছে।
কবি এমন এক সংকটময় পরিস্থিতির কথা বলেছেন যেখানে সাধারণ মানুষের ডানদিকে ধস, বাঁয়ে গিরিখাত, মাথার উপর বোমারু বিমান এবং পায়ের তলায় হিমানীর বাঁধ। অর্থাৎ, সেই দমবন্ধকর পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই। এরই মাঝে দেখা যায়, চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিশুদের শব। মৃত্যুর এই প্রতিচ্ছবি দেখে সাধারণ মানুষের মনে এরূপ আশঙ্কা হয়েছিল।
প্রশ্নঃ “আমাদের পথ নেই কোনো”- ‘আমাদের’ বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে? ‘পথ নেই’ কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর। ১+২
উত্তরঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় ‘আমাদের’ বলতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অসহায় সাধারণ মানুষের কথা বলা হয়েছে।
কথায় আছে, ‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, প্রাণ যায় উলুখাগড়ার’। যুদ্ধের ফলে সাধারণ মানুষ সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আলোচ্য কবিতার শুরুতেই দেখি বিপন্ন মানুষের দুর্দশার চিত্র। তাদের ডানদিকে ধস, বাঁদিকে গিরিখাত, মাথার উপরে টহলরত বোমারু বিমান এবং পায়ের তলায় হিমানীর বাঁধ। অর্থাৎ, এই বিপদ থেকে পালিয়ে বাঁচবার কোনো পথ ছিল না তাদের। তাই বলা হয়েছে, “আমাদের পথ নেই কোনো”।
প্রশ্নঃ “আমাদের কথা কে বা জানে”- এই মন্তব্যের দ্বারা কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন? ৩
উত্তরঃ শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় যুদ্ধ-কবলিত অসহায় মানুষ আক্ষেপের সুরে বলেছে, “আমাদের কথা কে বা জানে!” এই উক্তির মাধ্যমে কবি সাধারণ মানুষের পরিচয়হীনতার কথা বলতে চেয়েছেন।
যুদ্ধে সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। কিন্তু তাদের কথা কেউ জানতে পারে না। যুদ্ধবাজ শাসকের নাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে কিন্তু যুদ্ধের কারণে সর্বস্বান্ত হওয়া মানুষগুলো নামপরিচয়হীন হয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। যেহেতু সাধারণ মানুষের কথা কেউ জানে না তাই তাদের মৃত্যুতে কারো কিছু এসে যায় না। এইজন্য এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ “আমাদের মাথায় বোমারু” —এ কথা বলার কারণ কী?
উত্তরঃ বোমানিক্ষেপকারী যুদ্ধবিমান হল বোমারু। বর্তমান শতকের সূচনায় ক্ষমতাধারী রাষ্ট্রগুলি নানা অছিলায় দুর্বল রাষ্ট্রের উপর বোমাবর্ষণ করে সানিবন করেছে বলে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ “ছড়ানো রয়েছে কাছে দূরে” —কী ছড়ানো রয়েছে?
উত্তরঃ শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটিতে নিষ্পাপ মানবশিশুর সব বা মৃতদেহ ছড়ানো রয়েছে কাছে রয়েছে কাছে দূরে।
প্রশ্নঃ শিশুদের শব যেখানে-সেখানে ছড়ানো আছে কেন?
উত্তরঃ শিশুঘাতী, নারীঘাতী, কুৎসিত, বীভৎস, সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির নির্বিচারে বোমাবর্ষণের ফলে যেখানে-সেখানে শিশুদের সব ছড়িয়ে আছে।
প্রশ্নঃ “এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?” — এখানে কবির আশঙ্কা না ভয়কে জয় করার অঙ্গীকার প্রকাশিত হয়েছে?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশে আপাতভাবে মনে হতে পারে কবি মারা যাওয়ার আশঙ্কা করছেন। কিন্তু পৃকৃতপক্ষে শত প্রতিকূলতার মধ্যেও মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে বেঁচে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার এই অংশে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রশ্নঃ “আমাদের পথ নেই আর” —আমাদের পথ নেই কেন?
উত্তরঃ সাম্যবাদের আগ্রাসন, যুদ্ধবাদের নির্যাতন আশ্রয়হীন, সর্বহারা মানুষের মুক্তির পথ রোধ করেছে। তাদের প্রতিনিয়ত মুখোমুখি হতে হয়েছে মৃত্যুর সঙ্গে। তাই তাদের বেঁচে থাকার কোনো পথই অবশিষ্ট নেই।
প্রশ্নঃ “আমাদের পথ নেই আর” —তাহলে আমাদের করণীয় কী?
উত্তরঃ আমাদের অর্থাৎ সর্বহারা মানুষদের বাঁচার পথ যখন ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে আসে, তখন সহমর্মিতার সঙ্গে আরও বেশি সংঘবদ্ধ হয়ে থাকতে হবে।
প্রশ্নঃ “বেঁধে বেঁধে থাকি” —বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থ কী?
উত্তরঃ বেঁধে বেঁধে থাকার অর্থ মিলেমিশে এক হয়ে থাকা, সংঘবদ্ধ হয়ে সহমর্মিতার সঙ্গে বাঁচা।
প্রশ্নঃ “আমাদের ইতিহাস নেই” —এ কথা বাল হয়েছে কেন?
উত্তরঃ আমরা সাধারণ গরিব মানুষ। আমাদের জীবন-জীবিকা-আশ্রয় অনিশ্চিত। সাম্রাজ্যবাদীরা যুদ্ধের পরিবেশ ঘনিয়ে তুলে আমাদের শিকড় ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে উন্মুখ। তাই আমাদের ইতিহাস নেই।
প্রশ্নঃ “আমরা ভিখারি বারোমাস” —এ কথা বলার কারণ কী?
উত্তরঃ সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রশক্তি পারস্পরিক যুদ্ধে অথবা দুর্বল রাষ্ট্রে অধিকার কায়েমের জন্য সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করে। সাধারণ মানুষ আশ্রয় ও জীবিকা হারিয়ে ভিখারীতে তাই পরিণত হয়।
প্রশ্নঃ “পৃথিবীতে হয়তো গেছে মরে” —এ কথা বলা হয়েছে কেন?
উত্তরঃ পৃথিবী এখন যেভাবে আছে তাকে সুষ্ঠভাবে বেঁচে থানা বলা যায় না। যুদ্ধ, শোষণ, বঞ্চনা, অত্যাচারে সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন। তাই পৃথিবী তথা পৃথিবীর মানুষের মনুষ্যত্বে যেন মরে গিয়েছে।
আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি রচনাধর্মী প্রশ্ন - আয় আরও বেঁধে বেঁধে থাকি কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Ay Aro Bendhe Bendhe Thaki Descriptive Questions and Answers
১) “আমরাও তবে এইভাবে/এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?” – এমনটা মনে হচ্ছে কেন? ৫ [মাধ্যমিক ২০১৮]
উত্তরঃ কবি শঙ্খ ঘোষের ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতায় এক সংকটময় পরিস্থিতির ছবি তুলে ধরা হয়েছে। যুদ্ধের সর্বগ্রাসী লেলিহান শিখা যখন মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় তখন সাধারণ মানুষের পালাবার কোনো পথ থাকে না। দিশেহারা মানুষের ডানদিকে ধস, বাঁয়ে গিরিখাত, মাথার উপর বোমারু বিমান। অর্থাৎ, যেকোনো দিক থেকেই আকস্মিক বিপদ নেমে আসতে পারে। কিন্তু সেই মৃত্যুকূপ থেকে পালিয়ে বাঁচার কোনো পথ নেই কারণ পায়ের তলায় হিমানীর বাঁধ চলার পথে বাধা সৃষ্টি করে।
যুদ্ধের নিষ্ঠুরতা নিষ্পাপ শিশুদেরকেও রেহাই দেয়না। মানুষ দেখে যে তাদের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শিশুদের শব। শিশুদের বলা হয় দেশের ভবিষ্যৎ, মানবতার ভবিষ্যৎ। শিশুদের মৃত্যু হওয়া মানে মানবতার মৃত্যু অনিবার্য। চোখের সামনে নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শেষ হয়ে যেতে দেখে সাধারণ মানুষের মনে সংশয় জাগে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত পৃথিবীতে তারা তাদের অস্তিত্ব রক্ষার আশাটুকু হারিয়ে ফেলে। তাই তারা নিজেদেরকেই প্রশ্ন করে- “আমরাও তবে এইভাবে/এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি”?
২) “আয় আরাে বেঁধে বেঁধে থাকি”- কবিতার বিষয়বস্তু সংক্ষেপে লেখাে। ৫ [মাধ্যমিক ২০২০]
উত্তরঃ আধুনিককালের খ্যাতনামা কবি শঙ্খ ঘোষের একটি অনবদ্য কবিতা হল ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’। আলোচ্য কবিতায় যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই এবং হাতে হাত রেখে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করার কথা বলা হয়েছে।
কবিতার শুরুতেই এক সংকটময় পরিস্থিতির কথা তুলে ধরা হয়েছে। অসহায় সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে যে, তাদের ডানদিকে ধস, বাঁদিকে গিরিখাত, মাথার উপর বোমারু বিমান এবং পায়ের তলায় হিমানীর বাঁধ। অর্থাৎ, যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই। আবার, যুদ্ধের ফলে তারা গৃহহারা হয়েছে।
তারা দেখে যে তাদের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে শিশুদের শব। নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এইভাবে শেষ হতে দেখে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে- “আমরাও তবে এইভাবে/এ-মুহূর্তে মরে যাব না কি?” এই সংকটের মুহূর্তের সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে, হাতে হাত রেখে বাঁচার সংকল্প করে।
এইসব সাধারণ মানুষ নামপরিচয়হীন। ইতিহাসেও তাদের কোনো উল্লেখ নেই। চারদিকে মৃত্যুর হাতছানি দেখে তাদের ভ্রম হয় যে পৃথিবী বেঁচে আছে কিনা। তবে, হতাশাই শেষ কথা নয়। যুদ্ধের বিভীষিকা অতিক্রম করে যারা এখনো বেঁচে আছে, তারা সকলে আবার হাতে হাত রেখে বেঁচে থাকার শপথ নেয়।
৩) “আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি” কবিতার নামকরণের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। ৫
উত্তরঃ সাহিত্যে নামকরণের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। নামটুকু পড়েই যেকোনো সাহিত্যিক রচনা সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা লাভ করা যায়। তবে এটাও ঠিক যে, নামকরণ যথার্থ হওয়া দরকার। নাহলে লেখার সঙ্গে নামের সঙ্গতি রক্ষা হয় না এবং পাঠক সেই রচনার রসাস্বাদন করতে ব্যর্থ হয়। এবার দেখে নেয়া যাক, আমাদের পাঠ্য, কবি শঙ্খ ঘোষের লেখা ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’ কবিতাটির নামকরণ যথার্থ হয়েছে কি না।
আলোচ্য কবিতার প্রেক্ষাপটে রয়েছে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অসহায় মানুষের জীবনসংগ্রামের কথা। বিপদ তাদেরকে ঘিরে ফেলেছে। তাদের বাঁয়ে গিরিখাত, ডানদিকে ধস, মাথায় বোমারু বিমান এবং পথ চলতে বাধার সৃষ্টি করে হিমানীর বাঁধ। এহেন বিপর্যয়ের দিনে কারো মাথা গোঁজার জায়গা নেই কারণ যুদ্ধের ফলে তাদের ঘরের ছাউনি উড়ে গেছে। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিশুদের শব দেখে তারা ভাবে যে হয়তো তারাও এবার মরে যাবে। বাঁচার শেষ ইচ্ছেটুকু নিয়ে অসহায় মানুষজন একে অপরের হাত ধরে।
বিশেষ-পরিচিতিহীন এইসব মানুষ ইতিহাসে ব্রাত্য। এদের কথা ভাবার মতো কেউ নেই। আবার, চারিদিকে মৃত্যুর ছায়া দেখে এরা বুঝে উঠতে পারে না যে পৃথিবী আদৌ বেঁচে আছে না মরে গেছে। এইরকম বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে যা করা উচিত, এরাও তাই করেছে। যে’কজন বেঁচে আছে তারা একে অপরের হাত ধরে, সঙ্ঘবদ্ধভাবে বাঁচার শপথ নেয়।
জীবন যখন সংকটাপন্ন তখন ঐক্যবদ্ধভাবে বেঁচে থাকাই জীবনের একমাত্র মন্ত্র হয়ে দাঁড়ায়। আলোচ্য কবিতাতেও দু’বার সেই কথার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে- ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’। অতএব, বিষয়বস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই কবিতার নামকরণ সার্থক হয়েছে, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box