দশম শ্রেনীর আফ্রিকা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় Africa Short Type Question and Answer PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি দশম শ্রেনীর আফ্রিকা সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF. নিচে দশম শ্রেনীর আফ্রিকা কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। আফ্রিকা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
আফ্রিকা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
‘আফ্রিকা’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘পত্রপুট’ কাব্য থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
আফ্রিকা কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Africa Short Type Question and Answer
1. “সেখানে নিভৃত অবকাশে তুমি”- সেখানে বলতে কোন খানের কথা বলা হয়েছে? নিভৃত অবকাশে সে কী করছিল? ১+২
উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে ‘সেখানে’ বলতে ‘বনস্পতির নিবিড় পাহারায়’ স্থিত ‘কৃপণ আলোর অন্তঃপুরের’ কথা বলা হয়েছে।
নিভৃত অবকাশে সে অর্থাৎ আফ্রিকা দুর্গমের রহস্য সংগ্রহ করছিল এবং চিনে নিচ্ছিল জলস্থল ও আকাশের দুর্বোধ্য সংকেতগুলি। সেখানে সে ‘বিরূপের ছদ্দবেশে’ ভয়ংকরকে বিদ্রূপ করছিল এবং ‘বিভীষিকার প্রচণ্ড মহিমায়’ নিজেকে উগ্র করে ভয়কে হার মানাতে চাচ্ছিল।
2. “মন্দিরে বাজছিল পূজার ঘণ্টা” – কোন্ মন্দিরের কথা বলা হয়েছে? সেখানে পূজার ঘণ্টা কেন বেজেছিল? ১+২
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপীয়দের পাড়ায় পাড়ায় যে মন্দির রয়েছে, সেই মন্দিরের কথা বলা হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদীরা আফ্রিকার উপর অমানুষিক অত্যাচার করেছিল কিন্তু তাদের নিজের দেশে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখেছিল। ঔপনিবেশিক প্রভুদের পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে ঘন্টা-ধ্বনি অব্যাহত ছিল। সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় দয়াময় দেবতার নামে পূজার ঘন্টা বাজত।
3. “নগ্ন করল আপন নির্লজ্জ অমানুষতাকে”- কারা এমন করেছিল? কীভাবে তারা তাদের অমানুষতা প্রকাশ করেছিল? ১+২
উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে সভ্যতার মুখোশধারী সাম্রাজ্যবাদী ইউরোপীয়দের কথা বলা হয়েছে। আফ্রিকায় এসে তারা তাদের ‘নির্লজ্জ অমানুষতাকে’ উন্মুক্ত করেছিল।
প্রাকৃতিক সম্পদের লোভে সাম্রাজ্যবাদীরা পশুর মতো আফ্রিকার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। একদিকে তারা দুহাত দিয়ে আফ্রিকার সম্পদ লুঠ করেছিল, আরেকদিকে তারা আফ্রিকার মানুষকে অকথ্য নির্যাতন করেছিল। এইভাবে, তারা তাদের অমানুষতা প্রকাশ করেছিল।
4. “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তােমার অপমানিত ইতিহাসে।”- কারা কীভারে চিরচিহ্ন দিয়ে গিয়েছিল? ১+২
উত্তরঃ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবি সংক্ষেপে আফ্রিকার ‘অপমানিত ইতিহাসের’ কথা তুলে ধরেছেন। আগ্রাসনকামী ইউরোপীয়রা আফ্রিকার অপমানিত ইতিহাসে চিরচিহ্ন দিয়ে গিয়েছিল।
মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় আফ্রিকা একসময় সভ্য জগতের কাছে অবহেলিত ছিল। কিন্তু কালক্রমে লোভী সাম্রাজ্যবাদীদের চোখ পড়ে আফ্রিকার উপর। তারা সেখানকার প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ করে এবং নিরীহ-নিষ্পাপ মানুষকে অত্যাচার করে আফ্রিকার ইতিহাসকে লাঞ্ছিত করেছিল।
5. “চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তােমার অপমানিত ইতিহাসে”–‘ইতিহাস’ কীভাবে অপমানিত হল ?
উত্তরঃ পরাধীনতার গ্লানিতে, মানুষের সম্মানহীনতায় আফ্রিকার ইতিহাস হল অপমানিত। সেই অপমানের চিহ্ন চিরস্থায়ী করে দিয়ে গেছে বর্বর, লােলুপ, হিংস্র ইউরােপীয় সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি।
6. “নতুন সৃষ্টিকে বারবার করছিলেন বিধ্বস্ত”—কে, কেন বিধ্বস্ত করছিলেন?
উত্তরঃ নতুন সৃষ্টি তথা পৃথিবীর প্রতি প্রবল অসন্তোষে স্বয়ং স্রষ্টা বিধাতা তাকে বারবার বিধ্বস্ত, অর্থাৎ ভেঙে-গড়ে দেখছিলেন।
7. “ছিনিয়ে নিয়ে গেল তােমাকে, আফ্রিকা”—আফ্রিকাকে কে কোথায় ছিনিয়ে নিয়ে গেল?
উত্তরঃ ‘আফ্রিকা’ কবিতায় কবি কল্পনা করেছেন, সৃষ্টির যুগে স্রষ্টা যখন বারবার নিজের সৃষ্টি ভেঙে-চুরে নিখুঁত করে গড়ার চেষ্টায় রত, তখন উত্তাল সমুদ্র প্রাচ্যদেশ থেকে আফ্রিকা মহাদেশের ভূখণ্ডকে আলাদা করে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
8. “গর্বে যারা অন্ধ তােমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে…” তারা কী করল?
উত্তরঃ বিপুল বিশ্বের গর্বান্ধ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলি লােহার হাতকড়ি দিয়ে আফ্রিকার মানুষদের সুকৌশলে শৃঙ্খলিত করল।
9. “অপরিচিত ছিল তােমার মানবরূপকার মানবরূপ অপরিচিত ছিল ?
উত্তরঃ সভ্যতার উগ্রতা আফ্রিকাকে তেমনভাবে স্পর্শ করেনি বলে তার মানবিকতা বােধের চিরস্নিগ্ধ রূপটি অবশিষ্ট পৃথিবীর কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিল। রহস্যময় জগতের অচেনা সৌন্দর্যের ছায়া যেন সর্বদা ঘিরে থাকে আফ্রিকাকে।
10. “তােমার ভাষাহীন ক্রন্দনে…” ভাষাহীন ক্রন্দন কার ছিল?
উত্তরঃ নিজস্ব সত্তার রহস্য উন্মােচনে মগ্ন ‘আফ্রিকা’ অকস্মাৎ সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা আক্রান্ত হলে, সে উগত ‘ভাষাহীন ক্রন্দনে’ ভেসে গিয়েছিল।
11. ….অপরিচিত ছিল তােমার মানবরূপ/উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে।”—কার মানবরূপ, কাদের কাছে উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে উপেক্ষিত ছিল?
উত্তরঃ প্রশ্নোপ্ত পঙক্তিটিতে আফ্রিকা মহাদেশের মানবরূপ যেন তার অরণ্য- আচ্ছাদিত ‘কালাে ঘােমটার নীচে’ সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির কাছে ‘উপেক্ষার আবিল দৃষ্টিতে অপরিচিত ছিল।
12. “পঙ্কিল হল ধূলি তােমার রক্তে অশ্রুতে মিশে…”—কীভাবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল?
উত্তরঃ পৃথিবীর বহু সাম্রাজ্যবাদী শক্তি নিজেদের শক্তি ও উপনিবেশ গড়ার লক্ষে স্বাধীন আফ্রিকা মহাদেশের মানুষকে শৃঙ্খলিত করল। বর্বর, অমানুষিক অত্যাচার চালালাে। এভাবেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হল।
13.‘এসো যুগান্তের কবি,’—কবির ভূমিকাটি কী হবে? (মাধ্যমিক, ২০১৭)
উত্তরঃ যুগাস্তের কবি কল্পিত ভাবমূর্তি। বিশ্বকবির অভিলাষ অনুযায়ী এই কল্পিত কবি আফ্রিকায় অন্ধকার যুগের অবসান ঘটাতে আফ্রিকায় ক্ষমার বাণী প্রচার করবেন। ৫০ ‘যুগান্তের কবি’কে রবীন্দ্রনাথ কোথায় দাঁড়াতে বলেছেন? উত্তর যুগান্তের কল্পিত কবিকে রবীন্দ্রনাথ মানহারা, সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা লাঞ্ছিত আফ্রিকার দ্বারপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়াতে বলেছেন।
14.’মানহারা মানবী’ কে?
উত্তরঃ কবি রবীন্দ্রনাথের মানবিক কল্পনায় লুণ্ঠিতা রমণীর মতোই আফ্রিকা লাঞ্ছিত, সর্বহারা। নখ দাঁতসম্পন্ন সাম্রাজ্যবাদীরা তার মানবতাকে লুণ্ঠন করে তাকে মানহারা করেছে।
15. ‘বলো ক্ষমা করো’–কে, কেন এই বাণী উচ্চারণ করবে?
উত্তরঃ কবিকল্পিত ‘যুগান্তের কবি’ সাম্রাজ্যবাদী সভ্য পশুদের হয়ে সর্বহারা, মানবতালুণ্ঠিত, অত্যাচারিত আফ্রিকাবাসীদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার জন্য এই বাণী উচ্চারণ করবে।
16. হিংস্র প্রলাপের মধ্যে – হিংস্র প্রলাপ কী ?
উত্তরঃ সাম্রাজ্যবাদের শেষ কথাই হল দখল, লুণ্ঠন ও পাশবিক অত্যাচার। সুতরাং আফ্রিকা দখলকারী সাম্রাজ্যবাদীদের উগ্র আস্ফালনই হল হিংস্র প্রলাপ।
17. সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী।’—‘পুণ্যবাণী’টি কী?
উত্তরঃ মানবতার পূজারি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিষ্পাপ কণ্ঠে ‘ক্ষমা করো’ এই বিশুদ্ধ উচ্চারণকেই সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী’ বলে মনে করেছেন |
18.‘ক্ষমা করো’ উচ্চারণটি সভ্যতার শেষ পুণ্যবাণী হয়ে উঠবে কেন?
উত্তরঃ মানবতাবাদী রবীন্দ্রনাথ জানতেন হিংসা দিয়ে হিংসাকে জয় করা যায় না। তাই ‘ক্ষমা করো’ এই বিশুদ্ধ উচ্চারণটিকে ক্ষমার মহিমা প্রচারে তিনি ‘পুণ্যবাণী’ করে তুলতে চেয়েছেন।
19. ‘কৃপন আলাের অন্তঃপুরে’-কবিতা অনুসারে বক্তব্যটি লেখ।
উত্তরঃ বক্তব্য : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত আফ্রিকা কবিতায় আফ্রিকার ভৌগােলিক, রাজনৈতিক সম্পর্কে মরমি বিশ্লেষণ রয়েছে। বনস্পতির নিবিড় আলিঙ্গনে, অরণ্যের দুর্ভেদ্য আলাে ছায়ায় আবৃত থাকে আফ্রিকা। নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ার জন্য বৃহৎ পাতা বিশিষ্ট গাছের সৃষ্টি হয় এখানে। অসংখ্য বৃক্ষ ঘন সন্নিবিষ্ট হওয়ায় অতি সামান্য আলােটুকু প্রবেশের অধিকার পায় না। অন্ধকারে আবৃত থাকে আফ্রিকার অধিকাংশ প্রান্তর।
20. বিদ্রপ করেছিল ভীষণকে অথবা, বিরূপের ছদ্মবেশে কে কিভাবে ভীষণকে বিদ্রুপ করেছিল?
উত্তরঃ ভীষণকে ব্যঙ্গ : আফ্রিকা নামাঙ্কিত কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৃথিবীর অন্য মহাদেশ থেকে বিছিন্ন আফ্রিকাকে ধীরে ধীরে সাবলম্বী হতে দেখেছিলেন। নিভৃত অবকাশে দুর্গমের রহস্য সংগ্রহ করেছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ এ ভূখণ্ড। চিনেছিল জল, স্থল। আকাশের দুর্বোধ সংকেত। প্রকৃতি তাকে দিয়েছিল অপার রহস্যময়তা। অতীত জাদু মন্ত্র জাগাচ্ছিল আফ্রিকার চেতনাতীত মনে। আফ্রিকার ওপর সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আস্ফালনকে আফ্রিকা নিজেই চিনে নিতে চাইছিল। সেই ভীষণ শক্তিশালী শক্তিকে ব্যঙ্গ করার স্পর্ধা অর্জন করেছিল।
21. এল ওরা লােহার হাতকড়ি নিয়ে, ওরা বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে। লােহার হাতকড়ি নিয়ে আসার কারণ কী?
উত্তরঃ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষ : তথাকথিত সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আফ্রিকা কবিতায় ওরা বলে চিহ্নিত করেছেন।
লােহার হাতকড়ি :সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মানুষরা বারবার আফ্রিকার ওপর অত্যাচার করে। কালাে রঙের এই মানুষদের তারা উপেক্ষার দৃষ্টিতে দেখে। এই সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষদের নিজের ভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়। তাদের হাতে পরিয়ে দেওয়া হয় দাসত্বের শৃঙ্খল। বিপন্ন হয় আফ্রিকার স্বাধীনতা।
22. নখ যাদের তীক্ষ্ণ তােমার নেকড়ের চেয়ে–তােমার বলতে কাদের কথা বলা হয়েছে, কাদের নখ কেন নেকড়ের থেকে তীক্ষ্ণ ?
উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশ : তােমার বলতে আফ্রিকা মহাদেশের কথা বলা হয়েছে।
সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হিংস্রতা : দুর্ভেদ্য জঙ্গলে পরিবৃত আফ্রিকার হিংস্র আরণ্যক প্রাণীদের অন্যতম হল নেকড়ে। নেকড়ের তীক্ষ্ণ নখের থেকেও সূচালাে ও ধারালাে হল সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আগ্রাসন। পশ্চিমী দুনিয়া আফ্রিকার ওপর বর্বর উল্লাসে ঝাপিয়ে পড়ে। এদের আগ্রাসনের কথা বলতে গিয়ে কবি ‘নখ যাদের তীক্ষ্ণ এই বাক্য বন্ধটি প্রয়ােগ করে দুনিয়ার লােলুপ হিংস্রতাকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন। কবি এখানে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে আলােচ্য উক্তিটি প্রকাশ করেছেন।
23. স্রষ্টা যখন নিজের প্রতি অসন্তোষে’—স্রষ্টা কে? তিনি নিজের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন কেন?
উত্তরঃ আলোচ্য উদ্ধৃতির উৎস কবি রবীন্দ্রনাথের ‘আফ্রিকা’ কবিতাটি। কবি ‘স্রষ্টা’ বলতে বিশ্ববিধাতা পরমেশ্বরকে চিহ্নিত করেছেন।
শিল্পীর কাছে তার সৃষ্টি পরম সাধনার। সৃষ্টিকে নিখুঁত করে গড়ে তোলার কাজে জগদীশ্বর মগ্ন হয়েছেন কিন্তু সৃষ্টি মনের মতো না হওয়ায় তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। হৃদয়ের উৎসে সৃষ্টির রূপ যেভাবে জেগে উঠেছে, বাস্তবের পটভূমিতে তাকে সেইভাবে রূপায়িত করার তাগিদে পরমেশ্বর নিজের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে উঠেছিলেন।
24. তাঁর সেই অধৈর্যে ঘন-ঘন মাথা নাড়ার দিনে’–এই ‘ঘন-ঘন মাথা নাড়া’ কথাটির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত।
সভ্যতার আদিলগ্নে সৃষ্টিকে নিখুঁত করে গড়ে তোলার সাধনায় নিমগ্ন ছিলেন জগৎস্রষ্টা পরমেশ্বর। প্রকৃত স্রষ্টামাত্রই চির-অস্থির, চির-অতৃপ্ত। জগৎস্রষ্টা ঈশ্বরের হৃদয়ও সৃষ্টির প্রতি অসন্তোষে অস্থির হয়ে উঠেছিল। নিজের সৃষ্টির সঙ্গে একাত্ম হতে না পারার যন্ত্রণাই তাঁকে অধৈর্য, অসন্তুষ্ট করে তুলেছে। স্রষ্টার হৃদয়ের অতৃপ্তির সেই নেতিবাচক ভাবই প্রকাশ পেয়েছে আলোচ্য উদ্ধৃতিটিতে।
25.‘গর্বে যারা অন্ধ তোমার সূর্যহারা অরণ্যের চেয়ে। — উদ্ধৃতাংশটির অন্তর্নিহিত অর্থ বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশটির উৎস কবি রবীন্দ্রনাথ রচিত ‘আফ্রিকা’ কবিতা। পৃথিবীর ইতিহাসে জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং মানবসভ্যতার অগ্রগতির অন্যান্য ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে পশ্চিমি দুনিয়া। সেই শ্রেষ্ঠত্ব তাদের
উদ্ধত, অহংকারী এবং অমানবিক করে তুলেছে। শিক্ষা, প্রাচুর্য এবং আধুনিকতার অহংকারে উন্মত্ত শ্বেতাঙ্গ শাসকশ্রেণির মনুষ্যত্ব বিনষ্ট হয়েছে। বনস্পতির ছায়ায় ঘেরা, মায়াময় আফ্রিকার সহজসরল জনজীবনে অত্যাচারের অভিশাপ বয়ে এনেছে ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ রাষ্ট্রনায়করা। নিবিড় বনস্পতির ঘন পল্লব ভেদ করে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে না বলে আফ্রিকা যেমন অন্ধকারাচ্ছন্ন, উন্নাসিক সভ্যজাতিও তেমনি গর্বে অন্ধ।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box