দশম শ্রেনীর অদল বদল গল্পের রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় Adal Badal Descriptive Questions and Answers PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি অদল বদল রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF. নিচে দশম শ্রেনীর অদল বদল গল্পের প্রশ্ন উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। অদল বদল গল্পের রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
অদল বদল - পান্নালাল প্যাটেল
গুজরাতি ভাষার বিখ্যাত লেখক পান্নালাল প্যাটেলের লেখা ছোটোগল্প হল ‘অদল বদল’। গল্পটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন অর্ঘ্যকুসুম দত্তগুপ্ত। আলোচ্য পোস্টে পান্নালাল প্যাটেলের ‘অদল বদল’ গল্পের গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
অদল বদল গল্পের রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Adal Badal Descriptive Questions and Answers
১। 'অদল বদল ’ গল্পের নামকরণের সার্থকতা বিচার করাে।
উত্তরঃ বিংশ শতাব্দীর লেখক পান্নালাল প্যাটেল গুজরাতি ভাষার অন্যতম সাহিত্য স্রষ্টা। তাঁর ‘ অদল বদল ’ ছােটো গল্পটির নামকরণ কতখানি সার্থকতায় উত্তীর্ণ তা আলােচনার পূর্বে বলে রাখা দরকার , সাহিত্যের নামকরণ বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে করা হয়ে থাকে।
কখনাে চরিত্রকেন্দ্রিক , কখনাে বিষয়কেন্দ্রিক , কখনাে ভাব ব্যঞ্জনাবাহী , কখনাে বা রূপক সাংকেতিকতার দিক থেকে এই নামকরণ করা হয়ে থাকে। আমাদের আলােচ্য ‘ অদল বদল ’ ছােটো গল্পটি কী ধরনের নামকরণ , কতখানি সার্থক তা প্রতিপাদন করার স্বার্থে বিষয়- এর অভ্যন্তরে প্রবেশ করা যাক।
আলােচ্য গল্পের ছােট্টো পরিসরে লেখক ইসাব ও অমৃতের বন্ধুপ্রীতি সৌভ্রাতৃত্ববােধকে সমুজ্জ্বল করে তুলেছেন। ইসাব ও অমৃত দুজনে দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের দুই সতীর্থ। দুজনের মধ্যে রয়েছে বন্ধুত্বের প্রগাঢ়তা।ইসাব মাতৃহারা , বাবাকে নিয়ে তার পরিবার জীবন।
অপরপক্ষে অমৃতের রয়েছে মা , বাবা ও তিন সহােদর বা ভাই। দুই পরিবার কৃষির উপর নির্ভরশীল। আর্থিক টানাপােড়নে সুদের জালে জড়িয়ে পড়তে হয়। ইসাব ও অমৃতের পােশাকের মধ্যেও রয়েছে মিল।
একদিন ইসাবের জামা দেখে অমৃত বাবা মায়ের কাছ থেকে অনুরূপ একটি নতুন জামা বায়না করে বসে। বাবা মায়ের বকাঝকাকে উপেক্ষা করে সে শেষ পর্যন্ত নতুন জামা গায়ে চড়ায়।
দুজনে মিলে নতুন জামা পরে ছেলেদের দলে গিয়ে হাজির হলে , অনিচ্ছা সত্ত্বেও অপরাপর বন্ধুর সাথে মারামারি ও ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়ে।
এহেন পরিস্থিতিতে ইসাবের জামা ছিড়ে যায়। এমতাবস্থায় মাতৃহীন ইসাবকে বাবার শাসন থেকে রক্ষা করতে অমৃত নতুন পরিকল্পনা ফাঁদে। বাড়ির গলিতে বন্ধু ইসাবকে ডেকে নিয়ে যায়। নিজের গায়ের নতুন জামাটি খুলে ইসাবের গায়ে চড়িয়ে দিয়ে ইসাবের হেঁড়া জামাটি নিজের গায়ে চড়িয়ে নেয় এবং শান্তভাবে দুজনেই ঘরে ফিরে যায়।
অমৃতের এহেন পরিকল্পনায়ই সব বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞাসা করে
“ তাের কী হবে , তুই কী পরবি ? ”
অমৃত বলল ,
“ শিগগির কর , নয়তাে কেউ দেখে ফেলবে। আমি তােরটা পরব। " ইসাব জামা খুলতে লাগল , যদিও অমৃত কী করতে চাইছে বুঝতে পারছিল না , বলল , “ জামা অদল বদল ? কিন্তু তাতে সুবিধাটা কী হবে , তােকে তাে তাের বাবা পিটোবে। ”
“ নিশ্চয় ঠ্যাঙ্গাবে , কিন্তু আমাকে বাঁচানাের জন্য তা আমার মা আছে। ”
বন্ধুর প্রতি বন্ধুর এই প্রগাঢ় ভালােবাসা মাতৃহারা বন্ধুর মাতৃত্বের অভাববােধকে উপলব্ধি করার ফলশ্রুতিই জামা , অদল বদল।
এই অদল বদলের ঘটনার মধ্যে রয়েছে গভীর ভাবব্যঞ্জনা। অবক্ষয়িত সমাজে জাতি হিংসার নাগপাশকে কাটিয়ে সম্প্রীতির বাতাবরণ গড়ে উঠেছে দুই সম্প্রদায়ের দুই পরিবারের মধ্যে। অমৃতকে নিজের ছেলে বলে মনে করা , বাহালি বৌদিকে সজল।
চোখে অমৃতের ক্রিয়াকাণ্ড বলার মধ্যে রয়েছে আন্তরিক পিতৃত্বের টান। যার মুখ্য বিষয় জামা অদল বদল। তাই বলা যায় নামকরণটি বিষয়কেন্দ্রিক নামকরণ হয়েও ভাবব্যঞ্জনাবাহী ও সার্থক।
২। অদল বদল ছােটোগল্প হিসেবে কতটা সার্থক লাভ করেছে তা সংক্ষেপে আলােচনা করো।
উত্তরঃ গুজরাতি ভাষার প্রসিদ্ধ লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ একটি অনবদ্য গল্প। গল্পটি আধুনিক ছােটোগল্প হিসেবে কতখানি সার্থক তা আলােচনার পূর্বে ছছাটোগল্প সম্পর্কে একটু অবগত হয়ে নেওয়া জরুরি। পাশ্চাত্য ছােটোগল্পের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে –
“ A short story is a story that can be single sitting and single informing idea . "
কিংবা Funk and wagnalls বলেছেন -
“ A narrative prose story presenting a central theme or impression usually subordinated to single mood or character is ation . "
আমাদের আলােচ্য অদল বদল ছােটোগল্পটি পাঠ করলে দেখা যায়- একটি মাত্র কাহিনিকে অবলম্বন করে গল্পের কায়া নির্মিত হয়েছে। তা হল ইসাব ও অমৃতের জামা অদল বদলের ঘটনা এবং অমৃতের আন্তরিক বন্ধুপ্রীতির উদারতা।
গল্পটির সূচনা আকস্মিক ও নাটকীয় উৎকণ্ঠায় পূর্ণ।
“ হােলির দিনের পড়ন্ত বিকেল। নিম গাছের নীচে গাঁয়ের একদল ছেলে জড়াে হয়ে ধুলাে ছােড়াছুড়ি করে খেলছিল। হাত ধরাধরি করে অমৃত ও ইসাব ওদের কাছে এল। ”
আবার গল্পের সমাপ্তিতে রয়েছে অতৃপ্তির আকাঙ্খ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নিদর্শন। গল্পের আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত অমৃত ও ইসাবের বন্ধুত্ব , জামা অদল বদলের ব্যঞ্ছনাগর্ভ , উদারতা , ছােটোগল্পের একমুখীনতাকে নির্দেশ করে।
এই গল্পের আয়তন ভাব ও ভাষা ছােটোগল্পের অনুকূল। দুই বন্ধু ইসাব ও অমৃত দুজনেই সতীর্থ , দুজনের পােশাক পরিচ্ছদেও রয়েছে সাদৃশ্য। অথছ দুজন দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের সন্তান। সাম্প্রদায়িক বিভেদ তাদের বন্ধুত্বের রজুপথ টানকে ছিন্ন করতে পারে না।
দুই বন্ধু একই রকম পােশাক পরে খেলার মাঠে চিত্ত বিনােদনের জন্য হাজির হয়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও মাঠের অন্যান্য ছেলের সঙ্গে তারা কুস্তিতে জড়িয়ে পড়ে। বন্ধু অমৃতের প্রতি কালিয়ার অভব্য আচরণ।
ইসাবকে উত্তেজিত করলে ইসাব নিজেকে স্থির রাখতে না পেরে কালিয়ার সঙ্গে সংগ্রামে / কুস্তিতে জড়িয়ে পড়ে।
শেষে ইসাবের ছেড়া জামা দেখে বন্ধু অমৃত বহুকষ্টে বাবা মায়ের কাছ থেকে আদায় করা নতুন জামাটি বন্ধুর গায়ে জড়িয়ে দেয়।
ইসাব ইতস্তত বােধ করলে বন্ধু অমৃত যে উক্তি করেছে তাতে শাশ্বত বন্ধুত্ব সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদার্থ মহিমা বিঘােষিত হয়ে পড়ে।
“ অমৃত বলল , নিশ্চয় ঠ্যাঙ্গাবে , কিন্তু আমাকে বাঁচানাের জন্য তাে আমার মা আছে। ”
আবার ইসাবের বাবা পাঠানের অমৃতকে জড়িয়ে ধরার মধ্যে এবং তার আন্তরিক বাক্যালাপে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অমলিন ভাষ্যটি পাঠককে মুগ্ধ করে।
“ চেঁচিয়ে বললেন , বাহালি বৌদি , আজ থেকে আপনার ছেলে আমার। ”
বাহালি বৌদি ঘর থেকে বেরিয়ে স্নিগ্ধ হাসিতে যে কথাটি বলেছেন , তাতেও সম্প্রীতির বাতাবরণ অবক্ষয়িত সমাজের বিবেক
“ হাসান ভাই , আপনি এক ছেলেকেই দেখে উঠতে পারেন না , তা দুজনকে কী করে সামলাবেন ? ”
আবার আবেগভরা গলায় হাসানের উক্তি পাঠকের চোখেও জল এনে দেয়। বাহালি বৌদি , অমৃতের মতাে ছেলে পেলে। আমি একশ জনকেও পালন করতে রাজি আছি।
ভাষার দিক থেকে গল্পটিকে সার্থক ছােটোগল্পের মর্যাদা দিতে কুণ্ঠা জাগে না। পরিশেষে বলা যায় , এই গল্পে কোনাে নীতিকথা উপদেশ নেই।
চরিত্র বা ঘটনা খুবই সংক্ষিপ্ত। তবে ছােটোগল্পকার তার তৈরি ক্যানভাসে চরিত্রগুলিকে জীবন্ত করে তুলেছেন। ‘ ছোটো প্রাণ , ছােটো ব্যথা , ছােটো ছােটো দুঃখ কথা এই গল্পের মধ্যে সঞ্জীবিত রয়েছে।
বর্ণনার অবকাশ থাকলেও লেখক সংযত পরিসরে মূল লক্ষ্যে উপনীত হয়েছেন। তাই বলা যায় ‘ অদল বদল একটি সার্থক ছােটোগল্প।
৩। “ অদল বদল ’ গল্পে হিন্দু মুসলমানের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে পরিচয় ফুটে উঠেছে তা আলােচনা করাে।
উত্তরঃ বিংশ শতাব্দীর গুজরাতি ভাষার প্রসিদ্ধ লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ' একটি অনবদ্য গল্প।
এই গল্পের অভ্যন্তরে যেমন রয়েছে বন্ধুত্বের অমলিন আদর্শ , ঠিক তেমনিভাবে রয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাতাবরণ।
অবক্ষয়িত সমাজে মানবিকতার বড়ােই অভাব। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ , জাতিগত বিদ্বেষ সমাজের কণ্ঠকে যখন রােধ করে চলেছে , তখন এহেন দৃষ্টান্ত পাঠককে আত্মদর্শনে উদ্বুদ্ধ করবে এটাই স্বাভাবিক।
এই গল্পের মূল কায়া নির্মিত হয়েছে ইসাব ও তার বন্ধু অমৃতকে নিয়ে। দুজনেই সতীর্থ , দুজনেরই পরিবার পেশায় চাষি , দুজনের বাড়ি রাস্তার এপিঠ ওপিঠ , দুজনেরই পােশাক পরিচ্ছদ প্রায়ই একই ; আলাদার মধ্যে দুজন দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের সন্তান।
দুজনের মধ্যে রয়েছে বন্ধুত্বের প্রগাঢ় টান , দুজনেই একসঙ্গে খেলাধুলা ও পড়াশােনা করে। অমৃত ইসাবের মতাে একটি একই জামা বাবা মায়ের কাছ থেকে বহু কষ্টে আদায় করে এবং সেই জামা পরে ইসাবকে সঙ্গে নিয়ে হােলি উৎসবের দিনে পড়ন্ত বিকেলে গাঁয়ের একটি খেলার মাঠের পাশে হাজির হয়। দুজনে মিলেই শান বাঁধানাে ফুটপাতে বসে থাকে।
একটি ছেলে তাদেরকে কুস্তি করতে অনুপ্রাণিত করে। উভয়ে রাজি না হওয়ায় ছেলের দল থেকে একজন এসে তাদেরকে জোর করে মাঠে ধরে নিয়ে যায়। অমৃতের বাধা তােয়াক্কা না করে তাকে মাটিতে ছুঁড়ে দেয়।
“ দেখ কালিয়া , আমি কুস্তি লড়তে চাই না , আমাকে ছেড়ে দে। ”
এমতাবস্থায় ইসাব নিজেকে স্থির রাখতে না পেরে কালিয়ার সঙ্গে কুস্তিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। কুস্তির শেষে যখন ইসাব ও অমৃত বাড়ির দিকে রওনা দেয় , এহেন মুহুর্তে অমৃতের চোখ পড়ে ইসাবের হেঁড়া জামার উপর।
মাতৃহীন ইসাব ছিড়ে যাওয়া জামার জন্য পিতার হাতের প্রহার খেতে পারে। এই আশঙ্কায় নিজের গায়ের নতুন জামা ইসাবের গায়ে চড়িয়ে দিয়ে ইসাবের হেঁড়া জামা নিজের গায়ে চড়িয়ে নেয়। ইসাব হতচকিত হয়ে গেলে অমৃত স্পষ্টভাবে তাকে জানিয়ে দেয়
“ নিশ্চয় ঠ্যাঙ্গাবে , কিন্তু আমাকে বাঁচানাের জন্য তাে আমার মা আছে। ”
দুজনেই বাড়ি ফিরল , অমৃতের মা হেঁড়া রিপু করে দিল। হােলি উৎসবের দিনে এমনটি ঘটতে পারে তা ভেবে অমৃতকে রেহাই দিল।অমৃত ও ইসাবের এহেন বন্ধুপ্রীতি ইসাবের বাবা হাসানের আত্মদর্শন ঘটায়।
ইসাবের বাবা হাসান অমৃতকে জড়িয়ে ধরে এবং অমৃতের মাকে ডেকে বলেন – বাহালি বৌদি , আজ থেকে আপনার ছেলে আমার। ” হাসানের এহেন কথা শুনে হাসতে হাসতে বলেন – “ হাসান ভাই , আপনি এক ছেলেকেই দেখে উঠতে পারেন না , তা দুজনকে কী করে সামলাবেন ? ” হাসান আবেগ ভরা কণ্ঠে বলেন “ বাহালি বৌদি , অমৃতের মতাে ছেলে পেলে আমি একুশজনকেও পালন করতে রাজি আছি। ”
তারপর হাসান সজল চোখে সমস্ত ঘটনা সকলের সম্মুখে তুলে ধরেন। অমৃত ও ইসাবের এহেন ভালােবাসার কথা শুনে সকলের বুক ভরে যায়। পরিশেষে বলা যায় , ইসাব ও অমৃতের এহেন বন্ধুত্ব আজকের সমাজের অতি বিরল দৃষ্টান্ত। হাসানের সজল।
চোখ বাহালি বৌদির স্নেহভরা মন্তব্য সাম্প্রদায়িকতার প্রাচীরকে ভেঙে আত্মিক সংযােগকে সুদৃঢ় করে।
৪। “ অমৃতের জবাব আমাকে বদলে দিয়েছে ” – অমৃতের কোন জবাবের কথা বলা হয়েছে ? সেই জবাব বক্তাকে বদলে দেওয়ার কারণ কী ?
উত্তরঃ গুজরাতি লেখক পান্নালাল প্যাটেলের ‘ অদল বদল ’ গল্প থেকে আলােচ্য উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত। আলােচ্য মন্তব্যটি করেছেন ইসাবের বাবা পাঠান। হাসান।
অমৃতের নিম্নোক্ত জবাবে পাঠানের আত্মদর্শন ঘটেছিল – “ ইসাব অমৃতকে জিজ্ঞেস করেছিল , তাের বাবা যদি তােকে মারে কী হবে ? অমৃত কী জবাব দিয়েছিল জানেন ? বলেছিল কিন্তু আমার তাে মা রয়েছে। ” বন্ধু অমৃত মাতৃহারা ইসাবকে বাবার শাসনের হাত থেকে বাঁচাতে চেয়েছিল।
তাই নিজের নতুন জামা বন্ধুর গায়ে চড়িয়ে দিয়ে বন্ধুর ছেড়া জামা নিজের গায়ে চড়িয়ে নিয়েছিল। উপরিউক্ত জবাব হাসানকে বদলে দিয়েছিল। কারণ। অবক্ষয়িত সমাজে বন্ধুত্বের বড়ােই অভাব।
অথচ মাতৃহারা বন্ধুর মাতৃত্বের অভাবকে আবিষ্কার করতে অমৃতের বিন্দুমাত্র অসুবিধে হয়নি। দুই ভিন্ন সম্প্রদায়ের , দুই ভিন্ন পরিবারের দুই সতীর্থের এই আন্তরিক মেল বন্ধন হাসানের আত্মোপলব্ধি ঘটিয়েছিল।
মানবিকতাশূন্য অবক্ষয়িত সমাজে যখন সহােদরের মধ্যে হিংসা - দ্বেষ , মূল্যবােধহীনতার প্রকাশ ঘটে চলেছে। সেই সমাজের বুকে দাঁড়িয়ে অমৃত ইসাবের প্রতি যে নিবিড় অনুভূতির প্রকাশ ঘটিয়েছে তা সকলকে বিস্মিত করে।
জাতি হিংসাকে দূরে সরিয়ে সম্প্রীতির বাতাবরণ সৃষ্টির মধ্য দিয়েই হাসানের আত্মদর্শন ঘটেছিল।
৫। “ ভালােবাসার গল্প শুনে তাদের বুক ভরে গেল। ” কাদের বুক ভরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে ? ভালােবাসার কী গল্প তারা শুনেছিল ও কার কাছ থেকে ?
উত্তরঃ গুজরাটি সাহিত্যিক পান্নালাল প্যাটেলের অদল বদল ছোটো গল্পে ইসাব ও অমৃতের জামা অদল বদলের গল্প শুনে অমৃতের মা বাহালি বৌদি ও পাড়া পড়শি মায়ের দল যেমন প্রসন্ন হয়েছিলেন , তেমনি হাসান ও অমৃতের এহেন ভালােবাসার গল্প বলে পরিতৃপ্ত লাভ করেছিলেন।
তাই স্রোতা বাহালি বৌদি ও পাড়াপড়শি মায়েরা ও বক্তা হাসান সকলের বুক ভরে গিয়েছিল। ভালােবাসার গল্প বলতে ইসাব ও অমৃতের জামা অদল বদলের কার্য কারণ কাহিনি ইসাব ও অমৃত দুজনেই সতীর্থ।
দুজনের পােশাকের মধ্যে রয়েছে মিল। দুজনে ভিন্ন সম্প্রদায়ের সন্তান হয়েও দুজনের মধ্যে রয়েছে। বন্ধুত্বের অমলিন ভালােবাসা। হােলির দিন খেলার মাঠে অনিচ্ছাসত্ত্বেও কুস্তিতে জড়িয়ে পড়ে ইসাব জামা ছিড়ে ফেললে অমৃত পিতার শাসন থেকে বন্ধুকে বাঁচাতে নতুন পরিকল্পনা আঁটে।
ইসাবের বাবার কণ্ঠস্বর শুনে গলির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে অতিদ্রুত ইসাবের ছেড়া জামা নিজের গায়ে চড়িয়ে নিয়ে নিজের নতুন জামা ইসাবের গায়ে পরিয়ে দেয়।
ইসাব হতচকিত হয়ে যায় , সে বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করে “ তাের কী হবে ? তুই কী পরবি ? ” “ তােকে তাে তাের বাবা পিটোবে। ” ইসাবের এহেন প্রশ্নের জবাবে অমৃত বলে-
“ নিশ্চয় ঠ্যাঙ্গাবে , কিন্তু আমাকে বাঁচানাের জন্য তাে আমার মা আছে। ” মাতৃহারা ইসাবের প্রতি অমৃতের এহেন ভালােবাসা চির অমলিন , যা অবক্ষয়িত সমাজে অত্যন্ত দুর্লভ।
যা পাড়াপড়শি , বাহালি বৌদি , হাসান সকলের কাছেই অকল্পনীয় ভালােবাসার স্বাদ এনে দেয়। তাই তাদের বুক আনন্দে ভরে যায়।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box