দশম শ্রেনীর অভিষেক কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF: প্রতিবছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় Abhishek Short Type Question and Answer PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি অভিষেক সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF. নিচে দশম শ্রেনীর অভিষেক কবিতার প্রশ্ন উত্তর PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। অভিষেক কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর PDF পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন।
অভিষেক - মাইকেল মধুসূদন দত্ত
‘অভিষেক’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ’ মহাকাব্য থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
অভিষেক কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Abhishek Short Type Question and Answer
প্রশ্নঃ “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া”- কাকে ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে? তার বিস্ময়ের কারণ কী? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে রাবণপুত্র মেঘনাদকে ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে।
ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষীদেবী আসেন মেঘনাদের কাছে। তাঁর কাছে মেঘনাদ লঙ্কার সংবাদ জানতে চাইলে তিনি বলেন যে রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে তার প্রিয় ভাই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে। এই খবর শুনেই মেঘনাদ বিস্মিত হয়েছিল। তার বিস্ময়ের কারণ এটাই যে যার সঙ্গে যুদ্ধ করে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে সেই রামচন্দ্রকে মেঘনাদ নিজের হাতে সংহার করেছিল।
প্রশ্নঃ “হায়, বিধি বাম মম প্রতি।” – কার উক্তি? এমন উক্তির কারণ কী? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে রাক্ষসরাজ রাবণ একথা বলেছিলেন।
‘বিধি বাম’ বলতে বোঝায় বিধাতা অসন্তুষ্ট হওয়া। আসলে, রাক্ষসাধিপতি রাবণ তার প্রধানতম শত্রু রাম-লক্ষণের কাছে ক্রমশ পরাভূত হচ্ছিলেন। অথচ, শত্রুদল তার বা মেঘনাদের বীরত্বের তুলনায় একেবারেই নগণ্য ছিল। মেঘনাদ ইতিপূর্বে রামকে সংহার করেছিল। কিন্তু দৈবকৃপায় তারা পুনরায় জীবিত হয়ে বীরবাহু এবং কুম্ভকর্ণকে বধ করেছিল। এইজন্য রাবণ বলেছেন যে বিধাতা তার প্রতি অসন্তুষ্ট।
প্রশ্নঃ “হাসিবে মেঘবাহন”- ‘মেঘবাহন’ কে? তিনি হাসবেন কেন? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে ‘মেঘবাহন’ বলতে দেবরাজ ইন্দ্রকে বোঝানো হয়েছে।
দেবরাজ ইন্দ্র হলেন স্বর্গরাজ্যের অধীশ্বর। ইন্দ্রকে জয় করেই মেঘনাদ ইন্দ্রজিৎ উপাধি পেয়েছিল। সুতরাং মেঘনাদ যে একজন মহাপরাক্রমশালী যোদ্ধা এবিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ ছিল না। মেঘনাদের মতে, সে যদি নিজে যুদ্ধে না গিয়ে বৃদ্ধ পিতা রাবণকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠায়, তাহলে দেবরাজ ইন্দ্র হাসাহাসি করবেন।
প্রশ্নঃ “এ অদ্ভুত বারতা”- কোন বার্তার কথা বলা হয়েছে? বক্তার কাছে বার্তাটি অদ্ভুত কেন? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদকে ‘অদ্ভুত বার্তা’ বলা হয়েছে।
রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু প্রমীলার কাছে আসার আগেই মেঘনাদ রামকে হত্যা করে এসেছিল। মৃত মানুষ যদি পুনরায় জীবিত হয়ে ওঠে, তাহলে আশ্চর্য হওয়ায় স্বাভাবিক। সেইজন্য বক্তা অর্থাৎ মেঘনাদের কাছে এই বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ অদ্ভুত বলে মনে হয়েছিল।
প্রশ্নঃ “করযোড়ে কহিলা”- উদ্দিষ্ট ব্যক্তি করজোড় করে কী বলেছিল? ৩
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে মেঘনাদ হাতজোড় করে তার পিতা রাক্ষসরাজ রাবণকে বলেছিল যে সে শুনেছে রাম নাকি মরে আবার বেঁচে উঠেছে। সে বলেছিল যে এই মায়া সে বুঝতে পারেনি কিন্তু তাকে যদি অনুমতি দেওয়া হয় তবে রামকে সমূলে নির্মূল করবে।
কীভাবে শত্রুনিধন করা হবে সেকথাও রাবণকে বলেছিল মেঘনাদ। অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করে রামকে ভস্ম করে বায়ুবাণ দিয়ে সেই ভস্ম উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল সে। অথবা, জীবিত অবস্থায় তাকে বেঁধে এনে ফেলত রাক্ষসরাজের চরণে।
প্রশ্নঃ “ অম্বুরাশি – সুতা উত্তরিলা ” — ‘ অম্বুরাশি – সুতা ’ কী উত্তর দিলেন ? অথবা , ‘ অম্বুরাশি – সুতা ’ কে ? তিনি কেন ইন্দ্রজিতের কাছে এসেছিলেন ?
উত্তরঃ প্রশ্নোধৃত অংশে অম্বুরাশি – সুতা হলেন সমুদ্রমন্থনের সময় ক্ষীরোদসাগরের তলদেশ থেকে উঠে আসা দেবী লক্ষ্মী ।
‘অভিষেক ’ কবিতায় ইন্দ্রজিৎ তাঁর আলয়ে মাতাকে আসতে দেখে প্রণাম করে লঙ্কার কুশল জানতে চাইলেন । পুত্রের প্রশ্নের উত্তরে মাতা গভীর দুঃখে বললেন , স্বর্ণলঙ্কার অবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক । রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে ইন্দ্রজিতের কনিষ্ঠ ভ্রাতা মহাবীর বীরবাহু নিহত হয়েছেন । সে কারণে পুত্রের হত্যার প্রতিশোধ নিতে রাঘবের মোকাবিলা করার জন্য রাক্ষসাধিপতি রাবণ সসৈন্যে সজ্জিত হয়েছেন ।
প্রশ্নঃ “ সসৈন্যে সাজেন আজি যুঝিতে আপনি । ” কে , কেন সসৈন্য সজ্জিত হয়েছিলেন ?
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘ অভিষেক ’ নামাঙ্কিত কাব্যাংশে লঙ্কেশ্বর রাবণ প্রিয় পুত্র ‘ মহাবলী ‘ বীরবাহুর নিধন সংবাদে হতবাক হয়েছিলেন ।
তাই তিনি রামচন্দ্রকে সমুচিত শিক্ষা দিতে সসৈন্য সজ্জিত হয়েছিলেন । রামচন্দ্রকে নিহত করেছিলেন ইন্দ্রজিৎ । এই সংবাদে রাক্ষস শিবির উদ্দীপ্ত হয়েছিল । সেই আনন্দ সহসা বিষাদে পরিণত হয়েছিল যখন রামচন্দ্র মারা যাননি এমন শোনা যায় এবং তিনি স্বয়ং ‘ মহাবলী ‘ বীরবাহুর মৃত্যুর কারণ হয়েছেন । পুত্রশোকে মুহ্যমান পিতা রাবণ পুত্রহস্তার বিরুদ্ধে বিপুল সৈন্যে সজ্জিত হয়ে যুদ্ধযাত্রার আয়োজন করেছিলেন ।
প্রশ্নঃ “ কাপিলা লঙ্কা , কাপিলা জলধি ! ” এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো ।
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘ অভিষেক ‘ কাব্যাংশে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনে ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নেন । তাঁর রথ সোনার পাখা বিস্তার করা পর্বতের মতো আকাশকে আলোয় ভরিয়ে বায়ুপথে প্রবল শব্দে চলতে থাকে । ধনুকের ছিলায় টান দিতেই টঙ্কারধ্বনি ওঠে , অনেকটা মেঘের মধ্যে পক্ষীদের চিৎকারের মতোই আওয়াজ হয় । আর তাতেই লঙ্কাপুরী আর সমুদ্রে কম্পন সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্নঃ “ নাদিলা কর্বুরদল হেরি বীরবরে / মহাগর্ভে । ” ‘ কবূরদল ’ শব্দের অর্থ কী ? তাদের এমন আচরণের কারণ কী ?
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখিত অভিষেক কবিতায় কর্বুরদল শব্দের অর্থ Sen ‘ রাক্ষসদল।
রাঘবসৈন্য লঙ্কা আক্রমণের ফলে লঙ্কা ক্রমশ বীরশূন্য হয়ে পড়ে । এই ভয়াবহ যুদ্ধে রাবণপুত্র বীরবাহু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন । এই অবস্থায় ধাত্রীমাতার কাছে খবর পেয়ে লঙ্কাপুরীতে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিৎ উপস্থিত হলে তাঁকে দেখে রাক্ষসবীরগণ আনন্দে গর্জন করে । এই গর্জনের মধ্যে দিয়েই ইন্দ্রজিতের প্রতি তাদের আস্থা যেমন প্রকাশ পেয়েছে , তেমনি নিজেদের হতাশা কাটিয়ে ওঠার আনন্দও প্রকাশিত হয়েছে ।
প্রশ্নঃ “ ঘুচাব ও অপবাদ , বধি রিপুকুলে ” —বক্তা কে ? বক্তার মতে অপবাদটি কী ছিল ?
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘ মেঘনাদবধ কাব্য ‘ – র প্রথম সর্গের অন্তর্গত ‘ অভিষেক ’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন ইন্দ্রজিং।
ইন্দ্রজিৎ রামচন্দ্রকে যুদ্ধে দু’বার পরাজিত ও নিহত করেন । এদিকে ইন্দ্রজিৎ ছদ্মবেশী ধাত্রীমাতার কাছে জানতে পারেন রামচন্দ্র মরে গিয়েও বেঁচে গেছেন । শুধু তাই নয় , রামচন্দ্র প্রাণ ফিরে পেয়ে বীরবাহু সহ লঙ্কার বীর সৈন্যদের নিহত করেছেন । এই ঘটনাটি বীর ইন্দ্রজিতের কাছে অপবাদ বলে মনে হয়েছে ।
প্রশ্নঃ “ কি হেতু মাতঃ , গতি তব আজি / এ ভবনে ? ” কার উদ্দেশে কথাগুলি বলা হয়েছে ? তিনি কীজন্য এসেছিলেন তা সংক্ষেপে লেখো । অথবা , “ কি হেতু , মাতঃ , গতি তব আজি / এ ভবনে ? কহ দাসে লঙ্কার কুশল । ” কে , কাকে একথা বলেছেন ? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি লঙ্কার যে কুশলের কথা জানিয়েছেন তার পরিচয় দাও । অথবা , “ হায় ” ! পুত্র , কি আর কহিব / কনক – লঙ্কার দশা । ” বক্তা ‘ কনক – লঙ্কার ’ যে দশার কথা ইন্দ্রজিৎকে জানিয়েছেন তার পরিচয় দাও ।
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘ মেঘনাদবধ কাব্য ’ – র অন্তর্গত ‘ অভিষেক ’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নে উদ্ধৃত কথাগুলি ইন্দ্রজিৎ ছদ্মবেশী ধাত্রীমাতাকে বলেছেন ৷
রাক্ষসরাজ রাবণের জ্যেষ্ঠ পুত্র ইন্দ্ৰজিৎ নিজ ভবনে ধাত্রীমাতাকে আসতে দেখে তাঁকে প্রণাম করে লঙ্কার কুশল জানতে চান । ইন্দ্রজিতের প্রশ্নের উত্তরে মাতা গভীর দুঃখে বলেন , স্বর্ণলঙ্কার অবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক । তার কারণ ইন্দ্রজিৎ রামচন্দ্রকে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত করেছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি দেবকৃপায় পুনর্জীবন লাভ করে তাঁর প্রিয় ভাই বীরবাহুকে যুদ্ধে নিহত করেছেন । বীরবাহুর মৃত্যুর ঘটনায় রাক্ষসাধিপতি রাবণ শোকবিহ্বল , রাঘবের মোকাবিলা করার জন্য তিনি সসৈন্যে সজ্জিত হয়েছেন।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box