মাইকেল মধুসূদন দত্তের অভিষেক প্রশ্ন ও উত্তর: প্রতিবছর মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষায় মাধ্যমিক বাংলা সাজেশন (Abhishek by Madhusudan Dutta Questions and Answers) থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মাধ্যমিক বাংলা সিলেবাসের মাইকেল মধুসূদন দত্তের "অভিষেক" র সমস্ত প্রশ্নোত্তর।
এখানে মাধ্যমিক বাংলা ‘অভিষেক’ কবিতার প্রশ্ন উত্তর যেমন বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল। যে গুলি পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ন। নিচে Abhishek by Madhusudan Dutta Questions and Answers ‘অভিষেক’ কবিতার MCQ, SAQ প্রশ্ন উত্তর গুলি যত্ন সহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।
মাধ্যমিকের বাংলা মাইকেল মধুসূদন দত্তের অভিষেক প্রশ্ন ও উত্তর - Abhishek by Madhusudan Dutta Questions and Answers
অভিষেক - মাইকেল মধুসূদন দত্ত
‘অভিষেক’ কবিতাটি প্রখ্যাত সাহিত্যিক মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘মেঘনাদবধ’ মহাকাব্য থেকে গৃহিত হয়েছে। আলোচ্য পোস্টে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘অভিষেক’ কবিতার গুরুত্বপূর্ণ বহু বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ), অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (SAQ), সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্ন এবং রচনাধর্মী প্রশ্নগুলি তুলে ধরা হল।
অভিষেক MCQ প্রশ্নোত্তর - অভিষেক কবিতার MCQ প্রশ্নোত্তর (বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্নোত্তর) - Abhishek MCQ Questions and Answers
1. মাইকেল মধুসূদন দত্তের জীবনকাল –
(A) 1801-1891 খ্রিস্টাব্দ
(B) 1861-1841 খ্রিস্টাব্দ
(C) 1824-1873 খ্রিস্টাব্দ
(D) 1800-1861 খ্রিস্টাব্দ
উত্তরঃ (C) 1824-1873 খ্রিস্টাব্দ
2. ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ প্রকাশিত হয় –
(A) 1847 খ্রিস্টাব্দে
(B) 1857 খ্রিস্টাব্দে
(C) 1851 খ্রিস্টাব্দে
(D) 1861 খ্রিস্টাব্দে
উত্তরঃ (D) 1861 খ্রিস্টাব্দে
3. ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর সর্গসংখ্যা—
(A) চারটি
(B) পাঁচটি
(C) আটটি
(D) নয়টি
উত্তরঃ (D) নয়টি
4. ‘অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশটি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর –
(A) প্রথম সর্গের অন্তর্গত
(B) দ্বিতীয় সর্গের অন্তর্গত
(C) তৃতীয় সর্গের অন্তর্গত
(D) ষষ্ঠ সর্গের অন্তর্গত
উত্তরঃ (A) প্রথম সর্গের অন্তর্গত
5. ‘অভিষেক’ শীর্ষক কাব্যাংশটি ‘মেঘনাদবধ কাব্য’-এর যে সর্গ থেকে গৃহীত, তার নাম –
(A) অভিষেক
(B) বধ
(C) সমাগম
(D) প্রেতপুরী
উত্তরঃ (A) অভিষেক
6. “কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী…”-বীরেন্দ্রকেশরী’ হলেন—
(A) রাবণ
(B) বিভীষণ
(C) ইন্দ্রজিৎ
(D) কুম্ভকর্ণ
উত্তরঃ (C) ইন্দ্রজিৎ
7. “কনক-আসন ত্যজি, বীরেন্দ্রকেশরী ইন্দ্রজিৎ, প্রণমিয়া…” ইন্দ্রজিৎ কাকে প্রণাম করেছিল?
(A) রাবণ
(B) চিত্রাঙ্গদা
(C) মন্দোদরী
(D) ধাত্রী
উত্তরঃ (D) ধাত্রী
8. “কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি/এ ভবনে…?”—ইন্দ্রজিৎ এ কথা জিজ্ঞাসা করেছেন –
(A) মন্দোদরী দেবীকে
(B) প্রমীলাকে
(C) সীতাদেবীকে
(D) প্রভাষাবেশী লক্ষ্মীকে
উত্তরঃ (D) প্রভাষাবেশী লক্ষ্মীকে
9. “কি হেতু, মাতঃ, গতি তব আজি/এ ভবনে? কহ দাসে..”—ইন্দ্রজিৎ ধাত্রীর কাছে কী জানতে চেয়েছিলেন? –
(A) বীরবাহুর কথা
(B) রাবণের নির্দেশ
(C) লঙ্কার কুশলসংবাদ
(D) প্রমীলার কুশলসংবাদ
উত্তরঃ (C) লঙ্কার কুশলসংবাদ
10. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি সুতা/উত্তরিলা”—‘অম্বরাশি সুতা’ যাঁর সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি হলেন—
(A) মায়াদেবী
(B) চিত্রাঙ্গদা
(C) লক্ষ্মী
(D) সীতা
উত্তরঃ (C) লক্ষ্মী
11. “কহ দাসে…”—ইন্দ্রজিৎ জানতে চেয়েছেন—
(A) রাবণের চিন্তার কারণ
(B) বিভীষণের অবস্থান
(C) রাবণের শারীরিক অবস্থা
(D) লঙ্কাপুরীর কুশলবার্তা
উত্তরঃ (D) লঙ্কাপুরীর কুশলবার্তা
12. “হায়! পুত্ৰ, কি আর কহিব।কনক-লঙ্কার দশা!” বক্তা লঙ্কার কথা বলার ক্ষেত্রে হতাশা প্রকাশ করেছেন, কারণ—
(A) ঘোরতর যুদ্ধে কুম্ভকর্ণের মৃত্যু হয়েছে
(B) ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে
(C) ঘোরতর যুদ্ধে রাবণরাজার মৃত্যু হয়েছে
(D) ঘোরতর যুদ্ধে সারণের মৃত্যু হয়েছে
উত্তরঃ (B) ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে
13. “ঘোরতর রণে, হত প্রিয় ভাই তব…”এই ‘প্রিয় ভাই’ হল—
(A) বীরবাহু
(B) লক্ষ্মণ
(C) কুম্ভকর্ণ
(D) নিশুম্ভ
উত্তরঃ (A) বীরবাহু
14. “তার শোকে মহাশোকী রাক্ষসাধিপতি”–রাক্ষসাধিপতি রাবণ যার শোকে কাতর, তিনি হলেন –
(A) প্রমীলা
(B) চিত্রাঙ্গদা
(C) মন্দোদরী
(D) বীরবাহু
উত্তরঃ (D) বীরবাহু
15. “সসৈন্যে সাজেন আজি ঝঝিতে আপনি।”—কার কথা বলা হয়েছে? –
(A) দেবরাজ ইন্দ্র
(B) ইন্দ্রজিৎ
(C) রাক্ষসরাজ রাবণ
(D) রাঘব
উত্তরঃ (C) রাক্ষসরাজ রাবণ
16. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া; — ‘এই মহাবাহু’ হলেন—
(A) রাবণ
(B) ইন্দ্রজিৎ
(C) রামচন্দ্র
(D) বীরবাহ
উত্তরঃ (B) ইন্দ্রজিৎ
17. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া” “মহাবাহু’র বিস্ময়ের কারণ—
(A) তিনি তার অনুজ বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনেছেন
(B) তিনি ধাত্রীর কাছে লঙ্কার পরাজয়ের কথা শুনেছেন
(C) তিনি ধাত্রীর কাছে তার অভিষেকের কথা শুনেছেন
(D) তিনি ধাত্রীর কাছে রাবণের যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার কথা শুনেছেন
উত্তরঃ (A) তিনি তার অনুজ বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনেছেন
18. “কি কহিলা, ভগবতি?” ভগবতী বলেছেন –
(A) ঘোরতরে যুদ্ধে কুম্ভকর্ণ প্রয়াত হয়েছেন
(B) ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাঙ্কুর মৃত্যু ঘটেছে
(C) রাবণ ইন্দ্রজিৎকে সেনাপতি হিসেবে বরণ করতে চলেছেন
(D) ইন্দ্রজিৎ যেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে যজ্ঞ শেষ করে যুদ্ধে যান
উত্তরঃ (B) ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাঙ্কুর মৃত্যু ঘটেছে
অভিষেক অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - অভিষেক কবিতার SAQ অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Abhishek SAQ Question Answer
1. ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম কী?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘মেঘনাদবধ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম ‘অভিষেক’।
2. “প্রণমিয়া ধাত্রীর চরণে,/কহিলা”—ইন্দ্রজিৎ কী বলেছিল?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ইন্দ্রজিৎ লঙ্কার কুশল জিজ্ঞাসা করেছিল এবং সেখানে ধাত্রীর আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেছিল।
3. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি-সুতা উত্তরিলা।” “অম্বুরাশি-সুতা’-কে এবং কেন তার এমন নাম?
উত্তরঃ ‘অম্বুরাশি’ শব্দের অর্থ জলসমূহ, ‘সুতা’ শব্দের অর্থ কন্যা। সমুদ্রমন্থনের সময় লক্ষ্মীর উত্থান হয়েছিল বলে তাকে ‘অম্বুরাশি-সুতা’ বলা হয়েছে।
4. “ছদ্মবেশী অম্বুরাশি সুতা”—অম্বুরাশি-সুতা কার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। অম্বুরাশি-সুতা বা লক্ষ্মী ইন্দ্রজিতের ধাত্রীমাতা প্রভাষার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।
5. “সসৈন্যে সাজেন আজি যুঝিতে আপনি।”-কে সসৈন্যে সাজেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙকিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত প্রিয় পুত্র বীরবাহুর মৃত্যুতে লঙ্কেশ্বর রাবণ সৈন্যদলসহ যুদ্ধসাজে সজ্জিত হন।
6. “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া;”—এই বিস্ময়ের কারণ কী ছিল?
উত্তরঃ রামচন্দ্রকে খন্ড খন্ড করে কেটে ফেলার পরে কে বীরবাহুকে হত্যা করল তা ভেবেই ইন্দ্রজিৎ বিস্মিত হয়েছেন ?
7. ছদ্মবেশী লক্ষ্মী কোন সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন?
উত্তরঃ ছদ্মবেশী লক্ষ্মী রাবণপুত্র বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ এবং তাতে রাবণের শোকাকুলতার সংবাদ নিয়ে এসেছিলেন।
8. “এ অদ্ভুত বারতা”—কোন বারতার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। এখানে বীরচূড়ামণি বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদের কথাই বলা হয়েছে।
9. “শীঘ্ৰ কহ দাসে” শীঘ্র কী বলতে বলা হয়েছে?
উত্তরঃ ছদ্মবেশী লক্ষ্মী বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ দিতে এসেছেন মেঘনাদকে লক্ষ্মী কোথায় সেই মৃত্যুসংবাদ পেলেন তা শীঘ্ন বলতে বলা হয়েছে।
10. “রত্নাকর রত্নোত্তমা ইন্দিরা সুন্দরী উত্তরিলা”—‘ইন্দিরা সুন্দরী কে?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। লক্ষ্মীর অপর নাম ইন্দিরা। তাই এখানে। লক্ষ্মীকেই ইন্দিরা সুন্দরী বলা হয়েছে।
11. “যাও তুমি ত্বরা করি:”—এই শীঘ্র যাওয়ার প্রয়োজন কী?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশটিতে রাক্ষসকুলের মান রক্ষা করার জন্যই মেঘনাদের শীঘ্ন যাওয়ার প্রয়োজন বলে লক্ষ্মী মন্তব্য করেছেন।
12. “…রোষে মহাবলী/মেঘনাদ”—মেঘনাদ রুষ্ট হয়ে কী করেছিলেন?
উত্তরঃ মেঘনাদ রুষ্ট হয়ে ফুলরাশি ছিড়ে ফেলেছিল, সোনার বালা দূরে ফেলে দিয়েছিল।
13. “পদতলে পড়ি, শোভিল কুণ্ডল।” ‘কুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীতাকুণ্ডল’ শব্দের অর্থ কর্ণভূষণ অর্থাৎ কানের অলংকার।
14. “হা ধিক মোরে!”—ইন্দ্রজিৎ কেন নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিলো?
উত্তরঃ শত্রুসৈন্য যখন লঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে তখন তিনি প্রসোদকাননে সময় কাটাচ্ছেন—এই ভেবেই ইন্দ্রজিৎ নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল।
15. “বৈরিদল বেড়ে স্বর্ণলঙ্কা”—কাদের বৈরিদ বলা হয়েছে?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পর্ভূক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত এখানে রামচন্দ্র ও তার সৈন্যবাহিনীকে বৈরিল বলা হয়েছে।
16. “হেথা আমি বামাদল মাঝে?”—কখন ইন্দ্রজিৎ একথা বলেছেন?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে ইন্দ্রজিৎ একথা বলেছেন যখন রাঘব সৈন্যরা চারপাশ থেকে লঙ্কাপুরীকে ঘিরে ফেলেছে
17. “হেথা আমি বামিদলমাঝে।” – ‘হেথা’ বলতে কোন স্থানের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ উদ্ধৃত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত৷ ‘হেথা’ বলতে এখানে কনকলঙ্কার প্রমোদ উদ্যানকেই বোঝানো হয়েছে।
18. “এই কি সাজে আমারে”—কী সাজে না বলে বক্তার মনে হয়েছে?
উত্তরঃ রামচন্দ্রের সৈন্যবাহিনী কনকলঙ্কাকে ঘিরে ফেলেছে; এই সময় ইন্দ্রজিতের প্রমোদকাননে বিচরণ করা সাজে না।
19. “হৈমবতীসত যথা…” কীসের কথা এখানে বলা হয়েছে?
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক’ পদ্যাংশ থেকে গৃহীত উদ্ধৃতাংশে দেবসেনাপতি কার্তিকের তারকা বধের কথা এখানে বলা হয়েছে।
20. “কিম্বা যথা বৃহন্নলারুপী কিরীটী”—‘বৃহন্নলারুপী কিরীটী’ কাকে বলা হয়েছে?
উত্তরঃ উদ্ভূত পঙক্তিটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘অভিষেক পদ্যাংশ থেকে গৃহীত। মহাভারতের অর্জুন চরিত্রটি হলেন বৃহন্নলারূপী কিরীটী।
21. ‘ছদ্দবেশী অম্বুরাশি-সুতা’- ‘অম্বুরাশি-সুতা’ কার ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল?
উত্তরঃ ‘অম্বুরাশি-সুতা’ অর্থাৎ দেবী লক্ষী মেঘনাদের ধাত্রী প্রভাষা রাক্ষসীর ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল।
22. ‘কহ দাসে লঙ্কার কুশল।’- উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বক্তাকে লঙ্কার কোন খবর দিয়েছিলেন?
উত্তরঃ উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ ছদ্দবেশী লক্ষীদেবী বক্তা মেঘনাদকে লঙ্কার যে খবর দিয়েছিলেন তা হল, ঘোরতর যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে।
23. ‘এ অদ্ভুত বারতা, জননী/কোথায় পাইলে তুমি,’ – কোন্ অদ্ভুত বার্তার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ অদ্ভুত বার্তাটি হল, ঘোরতর যুদ্ধে মেঘনাদের প্রিয় ভাই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে।
24. ‘হা ধিক্ মােরে’ – বক্তা নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছে কেন?
উত্তরঃ বক্তা অর্থাৎ মেঘনাদ নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছে কারণ শত্রুর দল তার জন্মভূমি অর্থাৎ লঙ্কা ঘিরে ফেলেছে, অথচ সে তখন ‘বামাদল মাঝে’ আমোদ-প্রমোদে ব্যস্ত।
25. ‘এই কি সাজে আমারে’ – তাকে কী সাজে না?
উত্তরঃ উদ্ধৃতাংশের বক্তা মেঘনাদের মতে, স্বদেশ যখন বিপন্ন তখন নারীসান্নিধ্যে অবসর যাপন করা তাকে সাজে না।
26. ‘মায়াবী মানব/সীতাপতি’ – সীতাপতিকে ‘মায়াবী মানব’ কেন বলা হয়েছে?
উত্তরঃ সীতাপতি রামচন্দ্র মরে গিয়েও পুনরায় বেঁচে উঠেছিল বলে তাকে ‘মায়াবী মানব’ বলা হয়েছে।
27. ‘ধরি পতি-কর-যুগ’ – পতির কর-যুগল ধরে কী বলেছিল?
উত্তরঃ পতির কর-যুগল ধরে প্রমীলা বলেছিল যে, তাকে রেখে তার প্রাণসখা কোথায় চলে যাচ্ছেন।
28. ‘বিদায় এবে দেহ, বিধুমুখী।’ – কেন এই অনুনয়?
উত্তরঃ মেঘনাদ রাঘবকে বধ করার জন্য লঙ্কায় ফিরে যাচ্ছিল। সেইজন্য তার প্রিয়তমা স্ত্রী প্রমীলার কাছে অনুনয়সহ বিদায় চেয়েছিল।
29. ‘কাঁপিলা লঙ্কা, কাঁপিলা জলধি।’ – কী কারণে লঙ্কাপুরী ও জলধি কেঁপেছিল?
উত্তরঃ মেঘনাদ রাগে তার ধনুকের শিঞ্জিনী টেনে যে ‘টংকার’ (টং ধ্বনি) ছেড়েছিল, তার ফলেই লঙ্কা এবং সমুদ্র কেঁপে উঠেছিল।
30. ‘এ মায়া, পিতঃ, বুঝিতে না পারি!’ – কোন্ মায়ার কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ রামচন্দ্র মরে গিয়েও আবার বেঁচে উঠেছিল। আলোচ্য অংশে এই মায়ার কথা বলা হয়েছে।
31. ‘হায়, বিধি বাম মম প্রতি।’ – কেন এই উক্তি?
উত্তরঃ মহাপরাক্রমী রাবণকে সামান্য বনচারী রামের কাছে কার্যত হার স্বীকার করতে হয়েছে। এইজন্য বক্তা অর্থাৎ রাবণের মনে হয়েছে যে বিধাতা তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
32. ‘এ কলঙ্ক, পিতঃ, ঘুষিবে জগতে।’ – কোন্ কলঙ্কের কথা বলা হয়েছে?
উত্তরঃ পুত্র মেঘনাদের বর্তমানে পিতা রাবণ যুদ্ধ করতে গেছেন- এটা মেঘনাদের কাছে কলঙ্কের মতো।
33. ‘তায় আমি জাগানু অকালে’- এর ফল কী হয়েছিল?
উত্তরঃ যাকে অকালে জাগানো হয়েছিল সেই কুম্ভকর্ণ বলী রাঘবের হাতে পরাস্ত ও নিহত হয়েছে এবং তার দেহ সমুদ্রতীরে ভূপতিত রয়েছে।
34. ‘আগে পূজ ইষ্টদেবে’ – কেন ইষ্টদেবকে আগে পূজা করতে বলা হয়েছে?
উত্তরঃ যুদ্ধযাত্রার আগে ইষ্টদেবের আশীর্বাদ নিতে হয়। সেইজন্য ইষ্টদেবকে আগে পূজা করতে বলা হয়েছে।
35. ‘অভিষেক করিলা কুমারে।’ – কুমারকে কী দিয়ে অভিষিক্ত করা হয়েছিল?
উত্তরঃ বিধি অনুসারে গঙ্গাজল দিয়ে কুমারকে অর্থাৎ মেঘনাদকে অভিষিক্ত করা হয়েছিল।
অভিষেক কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর - Abhishek Short Type Question and Answer
প্রশ্নঃ “জিজ্ঞাসিলা মহাবাহু বিস্ময় মানিয়া”- কাকে ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে? তার বিস্ময়ের কারণ কী? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে রাবণপুত্র মেঘনাদকে ‘মহাবাহু’ বলা হয়েছে।
ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষীদেবী আসেন মেঘনাদের কাছে। তাঁর কাছে মেঘনাদ লঙ্কার সংবাদ জানতে চাইলে তিনি বলেন যে রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে তার প্রিয় ভাই বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে। এই খবর শুনেই মেঘনাদ বিস্মিত হয়েছিল। তার বিস্ময়ের কারণ এটাই যে যার সঙ্গে যুদ্ধ করে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছে সেই রামচন্দ্রকে মেঘনাদ নিজের হাতে সংহার করেছিল।
প্রশ্নঃ “হায়, বিধি বাম মম প্রতি।” – কার উক্তি? এমন উক্তির কারণ কী? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে রাক্ষসরাজ রাবণ একথা বলেছিলেন।
‘বিধি বাম’ বলতে বোঝায় বিধাতা অসন্তুষ্ট হওয়া। আসলে, রাক্ষসাধিপতি রাবণ তার প্রধানতম শত্রু রাম-লক্ষণের কাছে ক্রমশ পরাভূত হচ্ছিলেন। অথচ, শত্রুদল তার বা মেঘনাদের বীরত্বের তুলনায় একেবারেই নগণ্য ছিল। মেঘনাদ ইতিপূর্বে রামকে সংহার করেছিল। কিন্তু দৈবকৃপায় তারা পুনরায় জীবিত হয়ে বীরবাহু এবং কুম্ভকর্ণকে বধ করেছিল। এইজন্য রাবণ বলেছেন যে বিধাতা তার প্রতি অসন্তুষ্ট।
প্রশ্নঃ “হাসিবে মেঘবাহন”- ‘মেঘবাহন’ কে? তিনি হাসবেন কেন? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে ‘মেঘবাহন’ বলতে দেবরাজ ইন্দ্রকে বোঝানো হয়েছে।
দেবরাজ ইন্দ্র হলেন স্বর্গরাজ্যের অধীশ্বর। ইন্দ্রকে জয় করেই মেঘনাদ ইন্দ্রজিৎ উপাধি পেয়েছিল। সুতরাং মেঘনাদ যে একজন মহাপরাক্রমশালী যোদ্ধা এবিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ ছিল না। মেঘনাদের মতে, সে যদি নিজে যুদ্ধে না গিয়ে বৃদ্ধ পিতা রাবণকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠায়, তাহলে দেবরাজ ইন্দ্র হাসাহাসি করবেন।
প্রশ্নঃ “এ অদ্ভুত বারতা”- কোন বার্তার কথা বলা হয়েছে? বক্তার কাছে বার্তাটি অদ্ভুত কেন? ১+২
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদকে ‘অদ্ভুত বার্তা’ বলা হয়েছে।
রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে বীরবাহুর মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু প্রমীলার কাছে আসার আগেই মেঘনাদ রামকে হত্যা করে এসেছিল। মৃত মানুষ যদি পুনরায় জীবিত হয়ে ওঠে, তাহলে আশ্চর্য হওয়ায় স্বাভাবিক। সেইজন্য বক্তা অর্থাৎ মেঘনাদের কাছে এই বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ অদ্ভুত বলে মনে হয়েছিল।
প্রশ্নঃ “করযোড়ে কহিলা”- উদ্দিষ্ট ব্যক্তি করজোড় করে কী বলেছিল? ৩
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে মেঘনাদ হাতজোড় করে তার পিতা রাক্ষসরাজ রাবণকে বলেছিল যে সে শুনেছে রাম নাকি মরে আবার বেঁচে উঠেছে। সে বলেছিল যে এই মায়া সে বুঝতে পারেনি কিন্তু তাকে যদি অনুমতি দেওয়া হয় তবে রামকে সমূলে নির্মূল করবে।
কীভাবে শত্রুনিধন করা হবে সেকথাও রাবণকে বলেছিল মেঘনাদ। অগ্নিবাণ নিক্ষেপ করে রামকে ভস্ম করে বায়ুবাণ দিয়ে সেই ভস্ম উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল সে। অথবা, জীবিত অবস্থায় তাকে বেঁধে এনে ফেলত রাক্ষসরাজের চরণে।
প্রশ্নঃ “ অম্বুরাশি – সুতা উত্তরিলা ” — ‘ অম্বুরাশি – সুতা ’ কী উত্তর দিলেন ? অথবা , ‘ অম্বুরাশি – সুতা ’ কে ? তিনি কেন ইন্দ্রজিতের কাছে এসেছিলেন ?
উত্তরঃ প্রশ্নোধৃত অংশে অম্বুরাশি – সুতা হলেন সমুদ্রমন্থনের সময় ক্ষীরোদসাগরের তলদেশ থেকে উঠে আসা দেবী লক্ষ্মী ।
‘অভিষেক ’ কবিতায় ইন্দ্রজিৎ তাঁর আলয়ে মাতাকে আসতে দেখে প্রণাম করে লঙ্কার কুশল জানতে চাইলেন । পুত্রের প্রশ্নের উত্তরে মাতা গভীর দুঃখে বললেন , স্বর্ণলঙ্কার অবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক । রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে ইন্দ্রজিতের কনিষ্ঠ ভ্রাতা মহাবীর বীরবাহু নিহত হয়েছেন । সে কারণে পুত্রের হত্যার প্রতিশোধ নিতে রাঘবের মোকাবিলা করার জন্য রাক্ষসাধিপতি রাবণ সসৈন্যে সজ্জিত হয়েছেন ।
প্রশ্নঃ “ সসৈন্যে সাজেন আজি যুঝিতে আপনি । ” কে , কেন সসৈন্য সজ্জিত হয়েছিলেন ?
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘ অভিষেক ’ নামাঙ্কিত কাব্যাংশে লঙ্কেশ্বর রাবণ প্রিয় পুত্র ‘ মহাবলী ‘ বীরবাহুর নিধন সংবাদে হতবাক হয়েছিলেন ।
তাই তিনি রামচন্দ্রকে সমুচিত শিক্ষা দিতে সসৈন্য সজ্জিত হয়েছিলেন । রামচন্দ্রকে নিহত করেছিলেন ইন্দ্রজিৎ । এই সংবাদে রাক্ষস শিবির উদ্দীপ্ত হয়েছিল । সেই আনন্দ সহসা বিষাদে পরিণত হয়েছিল যখন রামচন্দ্র মারা যাননি এমন শোনা যায় এবং তিনি স্বয়ং ‘ মহাবলী ‘ বীরবাহুর মৃত্যুর কারণ হয়েছেন । পুত্রশোকে মুহ্যমান পিতা রাবণ পুত্রহস্তার বিরুদ্ধে বিপুল সৈন্যে সজ্জিত হয়ে যুদ্ধযাত্রার আয়োজন করেছিলেন ।
প্রশ্নঃ “ কাপিলা লঙ্কা , কাপিলা জলধি ! ” এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো ।
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘ অভিষেক ‘ কাব্যাংশে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ শুনে ইন্দ্রজিৎ যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নেন । তাঁর রথ সোনার পাখা বিস্তার করা পর্বতের মতো আকাশকে আলোয় ভরিয়ে বায়ুপথে প্রবল শব্দে চলতে থাকে । ধনুকের ছিলায় টান দিতেই টঙ্কারধ্বনি ওঠে , অনেকটা মেঘের মধ্যে পক্ষীদের চিৎকারের মতোই আওয়াজ হয় । আর তাতেই লঙ্কাপুরী আর সমুদ্রে কম্পন সৃষ্টি হয় ।
প্রশ্নঃ “ নাদিলা কর্বুরদল হেরি বীরবরে / মহাগর্ভে । ” ‘ কবূরদল ’ শব্দের অর্থ কী ? তাদের এমন আচরণের কারণ কী ?
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত লিখিত অভিষেক কবিতায় কর্বুরদল শব্দের অর্থ Sen ‘ রাক্ষসদল।
রাঘবসৈন্য লঙ্কা আক্রমণের ফলে লঙ্কা ক্রমশ বীরশূন্য হয়ে পড়ে । এই ভয়াবহ যুদ্ধে রাবণপুত্র বীরবাহু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন । এই অবস্থায় ধাত্রীমাতার কাছে খবর পেয়ে লঙ্কাপুরীতে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিৎ উপস্থিত হলে তাঁকে দেখে রাক্ষসবীরগণ আনন্দে গর্জন করে । এই গর্জনের মধ্যে দিয়েই ইন্দ্রজিতের প্রতি তাদের আস্থা যেমন প্রকাশ পেয়েছে , তেমনি নিজেদের হতাশা কাটিয়ে ওঠার আনন্দও প্রকাশিত হয়েছে ।
প্রশ্নঃ “ ঘুচাব ও অপবাদ , বধি রিপুকুলে ” —বক্তা কে ? বক্তার মতে অপবাদটি কী ছিল ?
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘ মেঘনাদবধ কাব্য ‘ – র প্রথম সর্গের অন্তর্গত ‘ অভিষেক ’ কবিতা থেকে নেওয়া উদ্ধৃতিটির বক্তা হলেন ইন্দ্রজিং।
ইন্দ্রজিৎ রামচন্দ্রকে যুদ্ধে দু’বার পরাজিত ও নিহত করেন । এদিকে ইন্দ্রজিৎ ছদ্মবেশী ধাত্রীমাতার কাছে জানতে পারেন রামচন্দ্র মরে গিয়েও বেঁচে গেছেন । শুধু তাই নয় , রামচন্দ্র প্রাণ ফিরে পেয়ে বীরবাহু সহ লঙ্কার বীর সৈন্যদের নিহত করেছেন । এই ঘটনাটি বীর ইন্দ্রজিতের কাছে অপবাদ বলে মনে হয়েছে ।
প্রশ্নঃ “ কি হেতু মাতঃ , গতি তব আজি / এ ভবনে ? ” কার উদ্দেশে কথাগুলি বলা হয়েছে ? তিনি কীজন্য এসেছিলেন তা সংক্ষেপে লেখো । অথবা , “ কি হেতু , মাতঃ , গতি তব আজি / এ ভবনে ? কহ দাসে লঙ্কার কুশল । ” কে , কাকে একথা বলেছেন ? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি লঙ্কার যে কুশলের কথা জানিয়েছেন তার পরিচয় দাও । অথবা , “ হায় ” ! পুত্র , কি আর কহিব / কনক – লঙ্কার দশা । ” বক্তা ‘ কনক – লঙ্কার ’ যে দশার কথা ইন্দ্রজিৎকে জানিয়েছেন তার পরিচয় দাও ।
উত্তরঃ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘ মেঘনাদবধ কাব্য ’ – র অন্তর্গত ‘ অভিষেক ’ কবিতা থেকে নেওয়া প্রশ্নে উদ্ধৃত কথাগুলি ইন্দ্রজিৎ ছদ্মবেশী ধাত্রীমাতাকে বলেছেন ৷
রাক্ষসরাজ রাবণের জ্যেষ্ঠ পুত্র ইন্দ্ৰজিৎ নিজ ভবনে ধাত্রীমাতাকে আসতে দেখে তাঁকে প্রণাম করে লঙ্কার কুশল জানতে চান । ইন্দ্রজিতের প্রশ্নের উত্তরে মাতা গভীর দুঃখে বলেন , স্বর্ণলঙ্কার অবস্থা অত্যন্ত বেদনাদায়ক । তার কারণ ইন্দ্রজিৎ রামচন্দ্রকে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত করেছিলেন ঠিকই কিন্তু তিনি দেবকৃপায় পুনর্জীবন লাভ করে তাঁর প্রিয় ভাই বীরবাহুকে যুদ্ধে নিহত করেছেন । বীরবাহুর মৃত্যুর ঘটনায় রাক্ষসাধিপতি রাবণ শোকবিহ্বল , রাঘবের মোকাবিলা করার জন্য তিনি সসৈন্যে সজ্জিত হয়েছেন।
অভিষেক রচনাধর্মী প্রশ্ন - অভিষেক কবিতার রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর - Abhishek Descriptive Questions and Answers
১) “নমি পুত্র পিতার চরণে, করজোড়ে কহিলা;” – পিতা ও পুত্রের পরিচয় দাও। পাঠ্যাংশ অবলম্বনে পিতা ও পুত্রের কথােপকথন নিজের ভাষায় লেখাে। ১+8
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে পিতা ও পুত্র হলেন যথাক্রমে রাক্ষসরাজ রাবণ এবং মেঘনাদ।
আলোচ্য অংশে পিতাপুত্রের মধ্যে যে কথপোকথন হয়েছিল তা এইরকম-
মেঘনাদ বলল যে, সে শুনেছে রাম নাকি মরে গিয়ে আবার বেঁচে উঠেছে। সে এই মায়া বুঝতে পারেনি কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া হলে সে আবার সকলকে সমূলে নির্মূল করার কথা বলে।
রাবণ জানায় যে এই প্রাণঘাতী যুদ্ধে বারবার তার প্রিয় পুত্র মেঘনাদকে পাঠাতে ইচ্ছে করে না। বিধাতা তার প্রতি বিমুখ হয়েছেন বলেই রাম মরেও বেঁচে উঠেছে।
মেঘনাদ রাক্ষসরাজকে বলে যে রামের মতো সামান্য একজন মানুষকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। মেঘনাদ আরো বলে যে, তার বর্তমানে যদি লঙ্কেশ্বর রাবণকে যুদ্ধে যেতে হয় তবে দেবরাজ ইন্দ্র হাসবেন এবং আরাধ্য দেব অগ্নি ক্রোধিত হবেন।
রাক্ষসরাজ এবার মেঘনাদকে মহাবলী কুম্ভকর্ণের করুণ পরিণতির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যে মেঘনাদ যদি একান্তই যুদ্ধ করতে যেতে চায় তবে সে যেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে গিয়ে ইষ্টদেবের পুজো করে। তিনি আরো বলেন যে, মেঘনাদকে তিনি সেনাপতি পদে বরণ করবেন এবং সূর্য যেহেতু অস্তাচলগামী, তাই সে যেন সকালে যুদ্ধ করতে যায়।
২) ‘অভিষেক’ কবিতা অনুসারে মেঘনাদের চরিত্র বিশ্লেষণ করো। ৫
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ অনুসারে রাবণপুত্র ইন্দ্রজিতের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি হল এইরকম-
দেশপ্রেমিক- মেঘনাদ একজন যথার্থ দেশপ্রেমিক। ছদ্মবেশী লক্ষীদেবীকে দেখা মাত্রই সে জিজ্ঞাসা করেছিল- “কহ দাসে লঙ্কার কুশল”। তার অনুপস্থিতিতে শত্রুর দল স্বর্ণলঙ্কা ঘিরে ফেলেছে- এই খবর শোনা মাত্রই সে লঙ্কায় ফিরে যেতে চেয়েছিল। ব্যক্তিগত সুখের চেয়ে তার কাছে প্রিয় ছিল তার দেশ। তাই লঙ্কার বিপদের সময় সে ‘বামাদল মাঝে’ থাকার জন্য নিজেকে ধিক্কার জানিয়েছিল।
পিতৃভক্তি- লঙ্কায় ফিরে মেঘনাদ যখন দেখল যে তার পিতা অর্থাৎ রাক্ষসরাজ রাবণ যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন মেঘনাদ নিজেই রামের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার অনুমতি চেয়েছিল। তাছাড়া, তার মতো একজন সক্ষম পুত্রের বর্তমানে যদি রাক্ষসরাজ রাবণ যুদ্ধক্ষেত্রে যান সেটা মেঘনাদের পক্ষে লজ্জাজনক। তার এইরকম মনোভাব থেকে তার আত্মসম্মান বোধেরও পরিচয় পাওয়া যায়।
সাহসী- রাম এবং তার বানরসেনা কুম্ভকর্ণ এবং বীরবাহুর মতো বীর যোদ্ধাদের নিধন করেছিল। তা সত্বেও মেঘনাদ স্বেচ্ছায় যুদ্ধ করতে যেতে চেয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই যুদ্ধে জয়লাভের ব্যাপারেও সে নিশ্চিত ছিল।
দায়িত্বশীল- প্রমীলার কাছে বিদায় নেওয়ার সময় সে তার লঙ্কাযাত্রার কারণ বলেছিল- “সমরে নাশি, তোমার কল্যাণে/ রাঘবে”। অর্থাৎ, তার স্ত্রীর (এবং সমস্ত রাক্ষসকূলের) মঙ্গলার্থে রামকে বধ করার জন্যই সে প্রমীলাকে রেখে লঙ্কায় যেতে উদ্যত হয়েছিল।
এছাড়াও মেঘনাদের চরিত্রের আরেকটি দিক হল গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধা। ধাত্রী প্রভাষার ছদ্মবেশে লক্ষীদেবীকে যেমন সে প্রণাম করেছিল তেমনি লঙ্কায় ফিরেই পিতা রাক্ষসরাজ রাবণকে প্রণাম নিবেদন করেছিল।
৩) ‘হেনকালে প্রমীলা সুন্দরি’- ‘হেনকালে’ বলতে কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? সেই সময় কী ঘটেছিল তা সংক্ষেপে লেখো। ১+৪
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশ থেকে নেওয়া উদ্ধৃত অংশে ‘হেনকালে’ বলতে মেঘনাদ যখন লঙ্কায় ফিরে যাওয়ার জন্য রথে চেপেছিল, সেই সময়ের কথা বলা হয়েছে।
স্বামীর দুটি হাত ধরে প্রমীলা সুন্দরী জানতে চেয়েছিল যে তাকে রেখে মেঘনাদ কোথায় যাচ্ছে। সে বলে যে, মেঘনাদকে ছাড়া সে বাঁচতে পারবে না। নিজেকে ব্রততীর সঙ্গে তুলনা করে প্রমীলা একটি উপমার সাহায্যে নিজের দুঃখের কথা তুলে ধরেছিল। প্রমীলা বলেছিল যে, গভীর অরণ্যপথে বনলতা যদি হাতির পায়ে জড়িয়ে যায় এবং সেই হাতি বনলতার রসিকতায় মন না দিয়ে নিজের পথে এগিয়ে চলে, তবুও লতাকে সে পায়ে জড়িয়ে রাখে। নিজেকে মেঘনাদের দাসী বলে পরিচয় দিয়ে প্রমীলা জিজ্ঞাসা করেছিল সে কেন তাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে।
এর উত্তরে মেঘনাদ জানিয়েছিল যে, প্রমীলা তাকে যে দৃঢ় বন্ধনে বেঁধেছে সেই বন্ধন কেউ খুলতে পারবে না। শীঘ্রই ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেঘনাদ প্রমীলাকে বলেছিল যে তার (প্রমীলার) কল্যাণার্থে রামকে বধ করতেই সে যাচ্ছে। এই বলে মেঘনাদ তার প্রিয় পত্নীর কাছে বিদায় চেয়েছিল।
৪) ‘অভিষেক’ কবিতার স্বল্প পরিসরে রাক্ষসরাজ রাবণের চরিত্রের যে দিকগুলি উদ্ভাসিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশের প্রধান চরিত্র যদিও মেঘনাদ, তবে রাবণ চরিত্রটিও স্বমহিমায় উজ্জ্বল। আলোচ্য পাঠ্যাংশের ক্ষুদ্র পরিসরে রাক্ষসরাজ রাবণের চরিত্রের দিকগুলি ফুটে উঠেছে সেগুলি হল-
বীরত্ব লঙ্কাধিপতি রাবণ নিঃসন্দেহে একজন বীর যোদ্ধা ছিলেন। তার যোগ্যতম পুত্র মেঘনাদের অনুপুস্থিতিতে তিনি নিজেই যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। ইতিপূর্বে রামের সঙ্গে যুদ্ধ করে তার প্রিয় পুত্র বীরবাহু এবং প্রিয় ভাই মহাবলী কুম্ভকর্ণ প্রাণ হারিয়েছিল। আপনজনদের হারিয়ে রাবণ ভেঙে পড়েছিলেন ঠিকই কিন্তু শত্রুনিধনের উদ্দেশ্যে যথার্থ বীরের মতো রণসজ্জায় সজ্জিত হয়েছিলেন।
পুত্রস্নেহ: লঙ্কায় ফিরে আসার পর মেঘনাদ রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যেতে চেয়েছিল। মেঘনাদের বীরত্বের প্রতি রাবণের কোনো সন্দেহ ছিল না কিন্তু সেই ‘কাল সমরে’ বার বার নিজের প্রিয় পুত্রকে তার মন সায় দেয়নি।
সামরিক জ্ঞান: মেঘনাদ যখন একান্তই রামের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চেয়েছিল, রাবণ তাকে বলেছিলেন পরের দিন সকালে যেতে। কারণ, সেদিন সূর্য ছিল অস্তাচলগামী।
ঈশ্বরে ভক্তি: রাবণ মেঘনাদকে যুদ্ধযাত্রার আগে নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে ইষ্টদেবের পূজা করতে বলেছিলেন। এর থেকে তার ঈশ্বরভক্তির পরিচয় পাওয়া যায়।
পরিশেষে বলা যায়, বাল্মীকি রামায়ণে রাক্ষসরাজ রাবণ একজন খলচরিত্র হলেও আলোচ্য কাব্যাংশে রাবণের মানবিক দিকটির পরিচয় পাওয়া যায়।
৫) “সাজিলা রথীন্দ্রর্ষভ”- ‘রথীন্দ্রর্ষভ’ কে? তার সাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। ১+৪
উত্তরঃ মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা ‘অভিষেক’ কাব্যাংশে মেঘনাদকে ‘রথীন্দ্রর্ষভ’ বলা হয়েছে।
আলোচ্য কাব্যাংশে মেঘনাদের সাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ রয়েছে। ছদ্মবেশী লক্ষীদেবীর কাছে কনকলঙ্কার দুরবস্থার কথা শুনে মেঘনাদ লঙ্কায় ফিরে যেতে উদ্যত হয়েছিল। তাছাড়া, সে শুনেছিল যে তার পিতা রাক্ষসরাজ রাবণ নিজে যুদ্ধযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সে চায়নি যে তার বর্তমানে তার পিতা যুদ্ধক্ষেত্রে যান। তাই রামের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য সে বীরের অলঙ্কারে সজ্জিত হয়েছিল। কবি দুটি ভিন্ন উপমার সাহায্যে মেঘনাদের রণসজ্জার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সেগুলি হল-
১) হৈমবতীর পুত্র কার্তিক তারকাসুরকে বধ করার জন্য যেমন সেজেছিল, মেঘনাদও তেমন সেজেছিল।
২) বিরাট রাজার পুত্র সহ গোধন উদ্ধার করার জন্য বৃহন্নলার ছদ্মবেশধারী অর্জুন শমী গাছের তলায় যেমন সেজেছিল, মেঘনাদের সাজও ছিল তেমন।
যাইহোক, বীরসজ্জায় সজ্জিত হয়ে মহারথী মেঘনাদ তার প্রিয় রথে চড়েছিল। তার মেঘবর্ণ রথের চাকায় যেন বিজলির ছটা, মাথায় রামধনু রঙের পতাকা এবং রথের বাহক ঘোড়াগুলি ছিল দ্রুত গতি সম্পন্ন।
Google News এ আমাদের ফলো করুন
ঘোষণা: বিনামূল্যে আমাদের দেওয়া নোটস, সাজেশান, প্রশ্ন উত্তর ইত্যাদি স্টাডি ম্যাটেরিয়াল PDF এবং ভিডিও ক্লাস ভালো লাগলে, আমাদের এই পোস্টের লিংক আপনার বন্ধুদের ফেসবুক, WhatsApp এ শেয়ার করে তাদের পড়ার সুযোগ করে দিন।
Please do not share any spam link in the comment box