বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা - Science And Superstition Essay Writing

বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা PDF: প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় Science And Superstition Essay Writing PDF থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। তাই আমরা আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা PDF. নিচে Science And Superstition Essay Writing PDF টি যত্নসহকারে পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন। বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা PDF টি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ডাউনলোড করতে এই পোস্টটির নীচে যান এবং ডাউনলোড করুন।


বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা - Science And Superstition Essay Writing



ভূমিকা: বিজ্ঞান কথার অর্থ হল বিশেষ জ্ঞান। এই বিশেষ জ্ঞানের আলোকে মানুষ সাধারণ প্রাণী থেকে শ্রেষ্ঠ প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। আদিম মানুষ ছিল গুহাবাসী কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞানের বলে বলীয়ান হয়ে মানুষ অট্টালিকা নির্মাণ করেছে। যেসব প্রাকৃতিক শক্তিকে দেখে সে ভয় পেত সেগুলিকে বশীভূত করে নিজের দাসে পরিণত করেছে। বর্তমান যুগ প্রকৃত অর্থেই বিজ্ঞানের যুগ। কিন্তু বিজ্ঞান আদিম মানুষকে আধুনিক করে তুললেও এখনো মানুষের আদিম মানসিকতার সম্পূর্ণ নিবৃত্তি ঘটেনি। তাই এখনো সাপে কাটা রোগীকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়; এখনো মানুষ মনস্কামনা পূরণ করার জন্য মানুষ মাদুলি-কবচ ধারণ করে। ভাবতে অবাক লাগে, একুশ শতকে পৌঁছেও মানুষ অনেক ক্ষেত্রে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দ্বারা চালিত হয়।


কুসংস্কার কী?


আক্ষরিক অর্থে, কুসংস্কার কথার অর্থ হল কু (খারাপ) যে সংস্কার। অন্যভাবে বললে, যেসব সংস্কার যুক্তিহীন এবং মানুষের পক্ষে অহিতকর, সেগুলিকে কুসংস্কার বলা চলে। প্রাচীনকালে মানুষ কিছু বিশ্বাস বা ধারণার বশবর্তী হয়ে বিভিন্ন কার্যকলাপ করত। এগুলোই সংস্কার। যেমন, প্রাচীন ভারতে অতিথি-অভ্যাগতদের দেখে নমস্কার করা হত। এইরকম অনেক ভালো সংস্কার এখনও প্রচলিত আছে। সব সংস্কার কুসংস্কার নয়, যেগুলি যুক্তিহীন কেবল সেগুলোকেই কুসংস্কার বলা হয়। যেমন, যাত্রাকালে হাঁচিকে অশুভ মনে করা একটা কুসংস্কার।


কুসংস্কারের উৎস


এই পৃথিবীতে প্রাণের বিবর্তনের পথ ধরে একসময় মানুষের আবির্ভাব ঘটেছিল। আদিম মানুষ প্রকৃতির রহস্যকে নিজের মতো করে বোঝার চেষ্টা করত। তারা তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতালব্ধ ধ্যানধারণা পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে চালিত করত। এইসব প্রাচীন বিশ্বাস মানুষের মনে দৃঢ় ভাবে প্রোথিত হয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞানের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বহু সংস্কার ভ্রান্ত বলে প্রমাণিত হয়। তবে, যেসব জায়গায় বিজ্ঞানের আলো পৌঁছায় নি সেখানে কুসংস্কারের রাজত্ব চলতে থাকলো। আবার, কিছু মানুষ বিজ্ঞান জানা সত্ত্বেও পুরাতন ধ্যান-ধারণা আঁকড়ে ধরে পড়ে রইল। মোটকথা হল, বিজ্ঞানের এত অগ্রগতি সত্ত্বেও কুসংস্কারের অবসান ঘটল না।


কুসংস্কারের প্রকারভেদ


কুসংস্কার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যথা, ব্যক্তিগত কুসংস্কার, সামাজিক কুসংস্কার, ধর্মীয় কুসংস্কার প্রভৃতি। ব্যক্তিগত কুসংস্কার সংখ্যায় প্রচুর এবং এগুলি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। পরীক্ষার দিনে ডিম বা কলা না খাওয়া, যাত্রা শুরুর সময় জলভরা কলসি দেখলে সুলক্ষণ ইত্যাদি ব্যক্তিগত কুসংস্কারের মধ্যে পড়ে।


সামাজিক কুসংস্কার

সামাজিক কুসংস্কার হল সামাজিক ব্যাধির মতো। ডাইনি সংক্রান্ত ধারণা সামাজিক কুসংস্কারের অন্যতম উদাহরণ। এখনো পর্যন্ত আমাদের দেশে ডাইনি সন্দেহে মানুষকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে। নারীত্বের অবমাননা করে এমন কিছু কুসংস্কারও আমাদের দেশে প্রচলিত রয়েছে।


ধর্মীয় কুসংস্কার

ধর্মীয় কুসংস্কার বলতে সেইসব কুসংস্কারকে বোঝায় যেগুলির পিছনে ধর্মীয় কারণ রয়েছে। সব ধর্মেই কমবেশি ধর্মীয় কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। একদা প্রচলিত সতীদাহ প্রথা, গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন প্রভৃতি ধর্মীয় কুসংস্কারের উদাহরণ।


বিজ্ঞান বনাম কুসংস্কার


বিজ্ঞান এবং কুসংস্কার একে অপরের বিপরীত প্রান্তে অবস্থিত। বিজ্ঞান যুক্তিকে প্রাধান্য দেয় কিন্তু কুসংস্কার যুক্তির ধার ধারে না। তাই যেখানে বিজ্ঞান থাকে সেখানে কুসংস্কার থাকতে পারেনা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, একই মানুষের মনে বিজ্ঞান এবং কুসংস্কার পরস্পর সহাবস্থান করে। হাসপাতালগামী অ্যাম্বুলেন্সও অনেক সময় রাস্তায় বিড়াল পারাপার করতে দেখলে ব্রেক কষে। আরো আশ্চর্য লাগে যখন দেখি কিছু মানুষ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কুসংস্কার প্রচার করে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে একদল অসাধু মানুষ কুসংস্কারকে জিইয়ে রাখতে চায়।


কুসংস্কার দূরীকরণে বিজ্ঞান


অন্ধকার দূর করতে যেমন আলোর প্রয়োজন হয়, তেমনি কুসংস্কারকে নির্মূল করতে পারে এক এবং একমাত্র বিজ্ঞান। বিজ্ঞানকে বইয়ের পাতায় বন্দি না রেখে মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানচেতনার উন্মেষ ঘটাতে হবে। তবেই কুসংস্কারের গতিরোধ করা সম্ভব হবে। সরকারিভাবে এমন কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে যাতে জনমানসে বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারণার প্রসার ঘটে। বিজ্ঞান মঞ্চগুলি এ ব্যাপারে সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। সংবাদপত্র, বেতার, দূরদর্শন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমেও কুসংস্কার-বিরোধী প্রচার চালানো যেতে পারে। তাছাড়া, বিদ্যালয় পাঠ্যসূচিতে এমন পাঠ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যাতে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কুসংস্কারমুক্ত হতে পারে।


উপসংহার: ভারতবর্ষের মতো একটি দারিদ্র্যপূর্ণ দেশে কুসংস্কার একটি সামাজিক সমস্যা। এখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বসবাস করে এবং তাদের প্রত্যেকের সংস্কার ভিন্ন ভিন্ন। একেক সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে একেকরকম কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। তবে, সব সম্প্রদায়ের অশিক্ষিত মানুষের মধ্যেই কুসংস্কার মেনে চলার প্রবণতা বেশি। তাই কুসংস্কার দূর করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন শিক্ষার বিস্তার। প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতার প্রসার ঘটাতে হবে। একথা প্রমাণিত যে, যেসব দেশের মানুষের মধ্যে বৈজ্ঞানিক চেতনা বেশি সেখানে কুসংস্কার কম। আমাদেরকেও সেই পথ ধরে এগোতে হবে এবং সমস্ত রকম কুসংস্কারকে সমূলে নির্মূল করতে হবে। তবেই ভারতের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব হবে।


Also Read:



বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা - Science And Superstition Essay Writing



Download বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা - Science And Superstition Essay Writing PDF


File Details:-

File Name:- বিজ্ঞান ও কুসংস্কার প্রবন্ধ রচনা [www.sikkharpragati.com]
File Format:- PDF
Quality:- High
File Size:- 3 Mb
File Location:- Google Drive

Download: Click Here to Download




Also Read:

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Ads Area